1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
বিজ্ঞানসুইজারল্যান্ড

সুইজারল্যান্ডে গ্রাম বাঁচাতে ‘গ্রাম হোটেল'

৪ নভেম্বর ২০২২

সুইজারল্যান্ডের টিসিনো রাজ্যের করিপ্পো গ্রামে একসময় ৩০০ মানুষ বাস করতেন৷ কিন্তু বনে কাজ আর পশুপাখি পালন করে জীবনধারণ সম্ভব নয় বলে বেশিরভাগই অন্যত্র চলে গেছেন৷ এ অবস্থায় গ্রামটিকে বাঁচাতে সেখানে হোটেল গড়ে তোলা হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/4J4QA
Videostill DW Euromaxx 20.08.2022 Corippo
ছবি: DW

পরিত্যক্ত বাড়ির কয়েকটি এখন হোটেলরুম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে৷

আড়াই বছরের এর্নেস্তো গত ৫০ বছরের মধ্যে সুইস পর্বতমালায় অবস্থিত করিপ্পো গ্রামের প্রথম শিশু৷ কারণ তার মা-বাবা বছরখানেক আগে একটা ঝুঁকি নিয়েছিলেন৷ ডেসিরে ভোয়াটল ও শেরেমি গেরিং করিপ্পোকে একটি ‘হোটেল গ্রামে' পরিণত করতে সহায়তা করছেন৷ তারা একটি রেস্টুরেন্ট চালান আর পুরনো, পরিত্যক্ত পাথর দিয়ে তৈরি বাড়ি ভাড়া দেন৷

ডেসিরে ভোয়াটল বলেন, ‘‘হঠাৎ করেই আমরা এই প্রকল্পের খোঁজ পেয়েছিলাম৷ একসঙ্গে মিলে কিছু করার সুযোগ ছিল এটা৷ প্রথমে খুব আশ্বস্ত ছিলাম না, কিন্তু তারপরও চেষ্টা করে দেখতে চেয়েছি৷ ভালোই চলছে৷ আশা করছি, এভাবেই চলবে৷''

হোটেলে বর্তমানে ১০টা ঘর আছে৷ একে বলে ‘আলবের্গো ডিফুসো', অর্থাৎ গ্রামজুড়ে ছড়িয়ে থাকা একটি হোটেল৷

গ্রামের রাস্তা হোটেলের করিডোর হিসেবে কাজ করে৷ মূল ভবনে অবস্থিত রেস্টুরেন্টটি রিসেপশন হিসেবে ব্যবহৃত হয়৷

ডেসিরে ভোয়াটল হোটেল ম্যানেজার, আর শেরেমি গেরিং শেফ৷

শেরেমি গেরিং জানান, ‘‘আমাদের চাকরি আমাদের ভালো লাগা৷ এই হোটেল, এই রান্নাঘর, আতিথেয়তা, রান্নার উপাদান সব৷ কঠিন কাজ, কিন্তু আমরা এটা করতে খুব পছন্দ করি৷''

ডেসিরে ভোয়াটল বলেন, ‘‘দুজনে মিলে সব কাজ করা সম্ভব নয়৷ আমাদের সহায়তা করতে কয়েকজন আছেন, যাদের কারণে পরিবেশটা জীবন্ত হয়ে ওঠে৷''

করিপ্পোর নাম ঐতিহ্যের তালিকায় আছে৷ সে কারণে খুব বেশি পরিবর্তন আনা সম্ভব না৷ সেখানকার সবকিছু সাধারণ, কিন্তু ভালো মানের৷

সেখানে একসময় যারা থাকতেন তাদের নামে হোটেলের ঘরগুলোর নামকরণ করা হয়েছে৷ বনে কাজ করে আর পশুপাখি পালন করে জীবনধারণ সম্ভব ছিল না বলে বাসিন্দারা অন্যত্র চলে গিয়েছিলেন৷

করিপ্পো রক্ষায় নিয়োজিত একটি ফাউন্ডেশন সেখানে একটি গ্রাম হোটেলগড়ে তোলার পরিকল্পনা করে৷ শুরুটা ১০টা পুরনো বাড়ি দিয়ে হয়েছে৷

করিপ্পোতে এখনও যারা আছেন তারা মনে করছেন হোটেলটা তাদের গ্রামের জন্য ভালো৷ যেমন সিলভানা ডাল টিন বলছেন, ‘‘আমার কাছে ঠিকই মনে হচ্ছে৷ হোটেল আমাদের কোনো সমস্যা করছে না৷ বরং ওটা না থাকলে গ্রামটা একসময় মরে যেত, কারণ এখনও যারা আছেন তাদেরতো আর বয়স কমছে না৷''

এর্নেস্তোর কিন্ডারগার্টেন নীচে, গাড়িতে করে যেতে ১৫ মিনিট লাগে৷ ডেসিরে ভোয়াটল খুশি যে তার ছেলে গ্রামের জীবনে মানিয়ে নিয়েছে৷

ডেসিরে ভোয়াটল বলেন, ‘‘এই ছোট জায়গায় সবাই সবাইকে চেনে৷ এর্নেস্তোরও এটা পছন্দ৷ সে বলে, ‘আরে ওখানে ভ্যালেন্টিনো লাটে মাকিয়াতো কফি পান করছে!' আর সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় সে বলে, ‘চাও ম্যাক্স, চাও সিলভানা', সে সবাইকে চেনে৷''

শিগগিরই আরও নতুন দুটি ঘর তৈরি করা হবে৷ কারণ হোটেল ভালই চলছে, অন্তত গরমের সময়৷ তবে এটা সারাবছরই খোলা রাখা উচিত৷ ফ্রেঞ্চ ও সুইস এই দম্পতি শীতের সময় একা থাকার ভয় পান না৷

শেরেমি গেরিং জানান, ‘‘শীতের সময় হোটেল ব্যবসার চেয়ে রেস্টুরেন্টটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ হবে৷ আমাদের সেজন্য আরও সময় লাগবে৷ আমরা কেবল শুরু করলেও আত্মবিশ্বাসী৷''

এই প্রত্যন্ত এলাকায় যাওয়ার আগে ডেসিরে ভোয়াটল ও শেরেমি গেরিংয়ের একটা সুখি জীবন ছিল৷ কিন্তু তারা তাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে একটুও অনুতপ্ত নন৷

কাডেরাইট-গেসনার/জেডএইচ