1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘সি কাউ', মানাটি,

ক্যারস্টিন শোয়াইৎসার/এসি২৩ জুন ২০১৫

কথা হচ্ছে ফিলিপাইনের একটি জীবকে নিয়ে৷ সমুদ্রধেনুকে বাঁচাতে হলে সমুদ্রশৈবালকে বাঁচাতে হবে৷ ডুগং-দের খাদ্যই হলো সামুদ্রিক শ্যাওলা৷ কাজেই সাগরে মাছের সংখ্যা বাড়াতে হলে ডুগং-দের কল্যাণ না করে উপায় নেই৷

https://p.dw.com/p/1FkhJ
Globalideas Teaser – Seekuh 2 ohne Logo
ছবি: Kerstin Schweizer

মানাটি বা ডুগং হলো এক ধরনের অতিকায় শুশুক, যাদের ‘সি কাউ' বা – ভালো ভাষায় – ‘‘সমুদ্রধেনু'' বলা হয়ে থাকে৷ ফিলিপাইন্সের বাসুয়াঙ্গা দ্বীপের উপকূলে এদের দেখতে পাওয়া যাবে – এরা হলো এ অঞ্চলের শেষ ডুগং, যাদের সংখ্যা আজ আধ-ডজন কিংবা তার কিছু বেশি৷ কাজেই এখানে একটি সংরক্ষিত এলাকা সৃষ্টির সময় এসেছে৷ আর্চি আর রেইনান্টে নিয়মিত ভাবে সমুদ্রগর্ভের অবস্থা পরিদর্শন করেন৷ রেইনান্টে রামিলো হলেন সি-থ্রি প্রকল্পের সমন্বয়কারী৷ তাঁর কথায়, ‘‘আমরা নানা ধরনের সামুদ্রিক শ্যাওলার খোঁজ রাখি৷ সেগমেন্ট হলো এক মিটার বাই এক মিটার৷ আমরা লিখে রাখি তার কতটা অংশ শ্যাওলায় ঢাকা, কোন গভীরতায়; তলায় বালু না কাদা৷''

সামুদ্রিক শৈবাল পরিবেশ দূষণ সহ্য করতে পারে না৷ এছাড়া ‘কেল্প' গোত্রীয় সি-উইড-এর চাষ বাড়ার ফলে সামুদ্রিক শ্যাওলা প্রায় উধাও হতে চলেছে৷ রেইনান্টে ও তাঁর দলবল কাছাকাছি গ্রামগুলির বাসিন্দাদের সঙ্গে এই অঞ্চলে একটি সুরক্ষিত এলাকা সৃষ্টি সম্পর্কে কথাবার্তা বলছেন৷ জেলেরা নিয়মিতভাবে জানান, তারা কোথায় ডুগং-দের দেখেছেন৷ এ ভাবেই হবু সংরক্ষিত এলাকার একটি সম্ভাব্য মানচিত্র গড়ে উঠেছে৷

ডুগং-রা জেলেদের মঙ্গল করে

ডুগং-রা হলো মানুষের মতোই এক স্তন্যপায়ী জীব – বোঝাচ্ছেন এক সহকর্মী৷ বাচ্চা ডুগং-রা প্রায় এক বছর ধরে মায়ের দুধ খায়৷ অথচ ডুগং-দের বাচ্চা হয় প্রতি সাত বছর অন্তর অন্তর৷ যে কারণে এক একটি বাচ্চা এত মূল্যবান! ধীবর রিকার্দো পাবেরো বললেন, ‘‘আমার কাছে জীবগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ৷ আমাদের কিংবদন্তিতে ওরা মঙ্গল বয়ে আনে৷ কোনো জেলের নৌকাডুবি হলে, একটি ডুগং এসে তার প্রাণ বাঁচায়৷''

তবে ধীবর আর ডুগং-দের সহাবস্থান সব সময় শান্তিপূর্ণ থাকে না৷ ডুগং-রা নৌকার প্রপেলারের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে আহত হতে পারে৷ অনেক সময় তারা বাইরে মাছ ধরার জালেও জড়িয়ে যায়৷ সম্প্রতি নাকি তাঁর জালেই একটা ডুগং আটকে গেছিল, জানালেন রিকার্দো৷ ডুগং-টা নাকি নৌকোর ইঞ্জিনের শব্দে ভয় পেয়ে জালে আটকায়, তারপর পালাবার চেষ্টায় জালটাতে এক বিরাট ফুটো করে দেয়৷ রামিলো জানালেন, ‘‘জেলে সম্প্রদায়কে জোন-গুলো ঠিক করে ফেলতে হবে৷ যেমন এই জোন-টা হলো মাছ ধরার জন্য; এটা হলো সংরক্ষিত; এটা হলো নৌকো চলাচলের জন্য৷ এই জোনগুলো সম্পর্কে সকলকে একমত হতে হবে৷''

সবে মিলে করি কাজ

পাশের পালাওয়ান দ্বীপে ইতিমধ্যেই একটি সংরক্ষিত এলাকা আছে – যাকে বাকিদের জন্য আদর্শ ধরা হয়৷ ক্রিস্টিনা দালুসুং সেখানকার সাসটেনিবিলিটি দপ্তরে কাজ করেন৷ ক্রিস্টিনা বললেন, ‘‘প্রকল্পটির সাফল্যের কারণ হলো দাতাসংস্থা, নির্মাণ সংস্থা আর স্থানীয় প্রশাসন হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করছে৷ তাদের কাছ থেকে আমরা কী ধরনের আচরণ প্রত্যাশা করি, মানুষজনকে সে বিষয়ে জানানো হয়েছে৷''

পরিবেশ সংরক্ষণ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করার পন্থা কী? কর্মীরা নিজেদের সাফল্য সম্পর্কে গর্বিত৷ বালুচরের উপর ছোট্ট ফাঁড়িটি একেবারে আনকোরা৷ কারামাই মেরিটিম রিজার্ভের ম্যানেজার রেইনাল্ডো কসেনাস বললেন, ‘‘আমরা এখানে তিনটি মুখ্য এলাকা সৃষ্টি করেছি৷ ম্যানগ্রোভের জন্য একটি, প্রবালদ্বীপের জন্য একটি এবং সমুদ্রশৈবালের জন্য একটি৷ এই জোন-গুলিতে মাছ ধরা নিষেধ৷ নজরদারির ফাঁড়িটিতে চব্বিশ ঘণ্টা লোক থাকে, এমনকি রাতেও৷ শুধু তাতেই কাজ হয়েছে৷ ডায়নামাইট আর বিষ দিয়ে মাছ ধরা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে৷ বড় বড় ট্রলারগুলোও আর এ দিকে ভেড়ে না৷''

প্রকল্পটি আন্তর্জাতিক দাতাগোষ্ঠীর কল্যাণে সম্ভব হয়েছে৷ ক্রিস্টিনা দালুসুং-রদরিগেস জানালেন, ‘‘সামুদ্রিক সংরক্ষিত এলাকার সদস্যরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছে৷ তাদেরই এটার মালিক হওয়া প্রয়োজন, বলে আমরা মনে করি৷ কাজেই প্রথমে তাদের নিজেদের জীবিকার উৎস এবং নিজেদের সমাজ সম্পর্কে অনুপ্রাণিত হওয়া প্রয়োজন৷''

ম্যানগ্রোভ, প্রবাল আর সামুদ্রিক শৈবাল বাঁচানোর ফলে মাছেদের নার্সারিও বেঁচে যাচ্ছে৷ তাই দালুসুং-রদরিগেস-এর কথায়, ‘‘জালের ফাঁকগুলো খুব ছোট হলে চলবে না, যাতে ছোট মাছগুলো জাল থেকে গলে বেরিয়ে যেতে পারে, বড় হওয়ার সময় পেতে পারে৷ এভাবেই মৎস্যসম্পদ বাড়ার সুযোগ পাবে, যেটা স্বভাবতই মৎস্যশিকারীদের আসল প্রেরণা৷''

আর ডুগং-দের কী হবে? তাদেরও মঙ্গল হবে, কেননা তাদের চারণভূমি বেঁচে যাবে – রাজনীতি, এনজিও, স্থানীয় জনসাধারণ, সবাই এখানে এসে মিলেছে বলে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান