সিম নিবন্ধনের পরও বিড়ম্বনা
১ জুন ২০১৬তবে বিটিআরসি জানিয়েছে, দেশের বাইরে থাকা রোমিং সিম ব্যবহারকারী গ্রাহক দেশে ফেরার পর বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধনের জন্য সাত দিন সময় পাবেন৷ এর মধ্যে তাঁকে আঙুলের ছাপ দিয়ে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সেরে ফেলতে হবে৷ নিবন্ধনের সময় গ্রাহককে পাসপোর্ট ও দেশে ফেরার বিস্তারিত কাগজপত্র দেখাতে হবে বলেও ওই নির্দেশনায় জানানো হয়েছে৷
বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী, গ্রাহকের হাতে থাকা প্রায় ১৩ কোটি ২০ লাখ সিমের মধ্যে ৩১ মে রাত ১২টা পর্যন্ত ১০ কোটি ৮১ লাখ ৮ হাজার ১৩৮টি সিম বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নিবন্ধিত হয়েছে৷ এই হিসাবে প্রায় আড়াই কোটি সিম নিষ্ক্রিয় হওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে৷
সিম নিবন্ধনের পরেরদিন, অর্থাৎ বুধবার সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই তাদের অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন৷
সোহানা চৌধুরী টুইটারে অদ্ভুত এক সমস্যার কথা জানিয়েছেন৷ তিনি জানান, যেটার রেজিস্ট্রেশন করেছেন সেটার নেটওয়ার্ক নেই, আর যেটা করেনি, সেই সিমের নেটওয়ার্ক আছে৷
আসাদুল হক লিখেছেন, তিনি এই পদ্ধতিতে সিম রেজিস্ট্রেশন করতে বাধ্য নন, তাই তার ৫টি সিম রেজিস্ট্রেশন করেননি৷
তাঁর ভাষায়, ‘‘সরকার ও মোবাইল কোম্পানির কাছে আমার ব্যক্তিগত তথ্য দেয়া নিরাপদ মনে করিনা, আমার যেসব তথ্য তারা ইতোমধ্যে নিয়ে নিয়েছে সেগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে আমি মারাত্নকভাবে শঙ্কিত৷''
নাসির উদ্দীন একটি অনলাইন পত্রিকার শিরোনাম শেয়ার করে লিখেছেন, ‘‘বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে রেজিস্ট্রেশনের পরেও সিম বন্ধ হওয়ার অভিযোগে এয়ারটেলের ধানমন্ডি কার্যালয় ঘেরাও করেছে বিক্ষুদ্ধ গ্রাহকরা৷ সঠিক পদ্ধতিতে গ্রাহকরা সিম রেজিস্ট্রেশন করার পরও তাদের সিমগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে৷''
একই অভিযোগ আমিনুল ইসলামের৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে রি-রেজিস্ট্রেশন করার পরও আমার এয়ারটেল সিমটি বন্ধ! এর ক্ষতিপূরণ দেবে কে?''
আতিকুল তপন মজা করে লিখেছেন,‘‘এয়ারটেল কোম্পানিটাই মনে হয় বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে রেজিস্ট্রেশন করে নাই, তাই সব সিমে নেটওয়ার্ক নেই৷''
লোকমান তাজ ফেসবুকে লিখেছেন,‘‘মন্ত্রী বললো বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে রেজিস্ট্রেশন করলে সিম বন্ধ হবে না৷ কিন্তু এখন দেখি বায়োমেট্রিক নিবন্ধন করার পরেও সিম বন্ধ হয়ে গেলো৷ এখন মন্ত্রী মহোদয় কি বলবেন?''
সঞ্জয় বনিক লিখেছেন, ‘‘আমরা যারা সরকারি নির্দেশনা মেনে সময়মতো বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম রেজিস্ট্রেশন করলাম, আমাদের কোনো বোনাস বা সুবিধা দেয়া হলো না! কিন্তু যারা নির্ধারিত সময়ের পরে সিম রেজিস্ট্রেশন করেছে, তারা সকল সুযোগ-সুবিধা ও বোনাস পেলো! হায়রে বাংলাদেশ! হায়রে দেশের সিস্টেম! ''
কাওসার হাসান লিখেছেন, ‘‘সঠিক নিয়ম মেনে সিম রেজিস্ট্রেশন করার উপর জোর নির্দেশনা না দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষ বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন তথা আঙুলের ছাঁপ নেয়ার উপরে একধরণের জুলুম চাপিয়ে দিয়েছে জনগণের ওপর৷ পুরো জাতিকে বিপদের মুখে ঠেলে দেয়ার কোনো সুনিপুন চক্রান্ত হচ্ছে নাতো...?
সংকলন: অমৃতা পারভেজ
সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী