সিনেমা পরিচালক হচ্ছেন সাবেক চেক প্রেসিডেন্ট
১৬ আগস্ট ২০১০বিশ্বের ইতিহাসের দিকে তাকালে আমরা কী দেখি? দেহরক্ষীকে বিদায় জানিয়ে, রাজপ্রাসাদের চাবি বুঝিয়ে দেওয়ার পর, কী করছেন সাবেক রাজনৈতিক নেতারা? দেখি, কেউ হয়তো পেছনের দিনগুলোর কথা ভেবে ভেবে পথ চলছেন৷ আবার কেউ কেউ, তাঁদের প্রিয় দাতব্য প্রতিষ্ঠানটিতে নিজেদের ব্যস্ত রেখেছেন৷ কিন্তু চেক প্রজাতন্ত্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ভাকলাভ হাভেল'এর বিষয়টি এক্কেবারে ভিন্ন৷ তিনি এবার উঠেপড়ে লেগেছেন বড় পর্দার পেছনে৷ শুধু সিনেমার কাহিনীই নয়, ছবিটির পরিচালনাও করতে যাচ্ছেন তিনি নিজে৷ আর সেই সিনেমার নায়িকা হচ্ছেন তাঁরই স্ত্রী, অভিনেত্রী ডাগমার হাভেলোভা৷
সম্প্রতি নিজের লেখা নাটক ‘লিভিং'এর কাহিনী অবলম্বনে তিনি ঐ ফিচার ফিল্মটি তৈরি করছেন৷ অবসরপ্রাপ্ত একজন রাজনীতিবিদ, যিনি তাঁর রাজনৈতিক জীবন থেকে সরে আসার পর নতুন এক জীবনে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করছেন - এমনই এক কাহিনী নিয়ে তৈরি করা হচ্ছে সিনেমাটি৷
ছবি প্রথম দেখলে যে কারো মনে হতে পারে যে, হাভেলের নিজের জীবনের সঙ্গে তার অনেক মিল আছে৷ অথচ আদতে এটা যে পুরোপুরি আত্মজীবনী - একথা অস্বীকার করেছেন হাভেল৷ বলেছেন, ১৯৭০ সালের দিকেই এ ধরণের একটা কিছু লেখার ইচ্ছা ছিল তাঁর৷ আর তাই প্রেসিডেন্ট পদ থেকে বিদায় নেবার পর, চেক প্রজাতন্ত্রের উত্তর-পূর্ব দিকে অবস্থিত চেস্কা স্কালিস শহরে উদ্যানসহ একটি বাড়িতে সাবেক এই প্রেসিডেন্ট তাঁর সারাজীবনের স্বপ্নটি বাস্তবায়ন করেন৷ এ মাসের ২১ তারিখের মধ্যে সিনেমাটির কাজ শেষ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে৷
সিনেমা যেন সাবেক প্রেসিডেন্ট হাভেলের রক্তে মিশে আছে৷ বিষয়টিকে তিনি ব্যখ্যা করেছেন এইভাবে, ‘‘ফিল্ম মেকিং 'এর পরিবার থেকেই আমি এসেছি৷ চেক প্রজাতন্ত্রে প্রথম ফিল্ম স্টুডিওটিও প্রতিষ্ঠা করেন আমার চাচা৷ সিনেমার লোকজনদের সাথেই বড় হয়ে উঠেছি আমি৷ তাই সবসময়ই চেয়েছিলাম একজন পরিচালক হতে৷ কিন্তু ৫০ ও ৬০'এর দশকে দেশে রাজনৈতিক পরিবেশ এমন ছিল যে, আমি চাইলেও ফিল্ম স্কুলে যেতে পারিনি৷''
জীবনের বেশিরভাগ সময়ই থিয়েটারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন হাভেল৷ আর সে জন্য ‘লিভিং'এর অনেকগুলো চরিত্রেই রয়েছেন তাঁর ঘনিষ্ট বন্ধুরা, যাঁরা আগে থেকেই সিনেমায় কাজ করছিলেন৷ এঁদেরই একজন বিশিষ্ট অভিনেত্রী ইভা হলুবোভা৷ তিনি বলেন, ‘‘ভাকলাভ হাভেল আমার কাছে শুধু প্রেসিডেন্টই না, তিনি ভাকলাভ হাভেল৷ তিনি একজন দক্ষ পরিচালক৷ সিনেমা তৈরির ব্যাপারে তিনি মোটেও শঙ্কিত নন৷''
প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ