1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সামাজিক মাধ্যম: শুধু অ্যাকাউন্ট বন্ধ সঠিক উপায় নয়

১১ জানুয়ারি ২০২১

ফেসবুক ও টুইটার ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট স্থগিত করেছে৷ এমন সব কোম্পানি এই সিদ্ধান্ত নিল, যারা নিজেরাই সমস্যা থেকে দ্রুত বের হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/3nmD9
Twitter: Konto von US-Präsident Trump dauerhaft gesperrt
ছবি: Twitter/AFP

ট্রাম্পের মতো, সম্ভবত তাদের প্ল্যাটফর্মের সবচেয়ে বিখ্যাত ব্যবহারকারীর, অ্যাকাউন্ট স্থগিত করে টুইটার, ফেসবুক জানিয়ে দিল, কারা, কীভাবে তাদের প্ল্যাটফর্মে মত প্রকাশ করতে পারবে৷ আমরা তা হতে দিতে পারিনা, বলছেন ডিডাব্লিউর প্রধান সম্পাদক মানুয়েলা কাসপার-ক্ল্যারিজ৷

টুইটারে ট্রাম্পের আট কোটি ৮০ লাখ অনুসারী এবং ফেসবুকের তিন কোটি ৫০ লাখ অনুসারী এখন থেকে আর ট্রাম্পের কোনো বিবৃতির দেখা পাবেন না৷ ট্রাম্পের বিবৃতি অনেকসময় বর্ণবাদী ও বিপজ্জনক ছিল৷

বিরোধী পক্ষের সঙ্গে লড়তে এই অ্যাকাউন্টগুলোকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতেন ট্রাম্প৷ হেট স্পিচ আর ভুয়া খবর ছিল এসবের ট্রেডমার্ক৷ তার টুইটের কারণে কী হতে পারে, তা সম্প্রতি ক্যাপিটল হিলে হামলার ঘটনায় দেখা গেছে৷

অবশেষে অনেকের মতো আমিও হাফ ছেড়েছিলাম৷ কিন্তু মাত্র কিছুক্ষণের জন্য৷ কারণ আপনি বাকস্বাধীনতা চাইলে সেই বাকস্বাধীনতা যতই অপ্রিয়, বিরক্তিকর হোক না কেন, আপনাকে তা মেনে নিতে হবে৷ এটা ভেবে আমি শঙ্কিত হচ্ছি যে, অল্পসংখ্যক ব্যক্তি বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম বন্ধ করে দেয়ার মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারে৷

একটা বিষয় আগে স্পষ্ট হওয়া দরকার: আমরা হেট স্পিচ আর ভুয়া খবর নিয়ে কথা বলছি না৷ এগুলো খুঁজে বের করে লেবেল লাগিয়ে দিতে হবে, কিংবা মুছে ফেলতে হবে৷ এটা প্ল্যাটফর্ম অপারেটরদের কাজ, যা তারা অনিচ্ছা নিয়ে কয়েক মাস আগে শুরু করেছে৷

গতবছর মে মাসে প্রথম টুইটার ট্রাম্পের দুটি টুইট সম্পর্কে ব্যবহারকারীদের সতর্ক করে দিয়েছিল৷ এরপর আরও অনেক টুইটে লেবেল লাগানো হয়েছে, এমনকি মুছেও দেয়া হয়েছে৷ ফলে ব্যবহারকারীরা জানতে পেরেছেন, ট্রাম্পের কিছু টুইট কতটা অগুরুত্বপূর্ণ ও বিপজ্জনক ছিল৷ সেটা ভাল ছিল৷

ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়ার কাজটি সহজ৷ এর মাধ্যমে অপারেটররা আসলে তাদের দায়িত্ব কমিয়ে নিলেন৷ ট্রাম্প ছাড়াও লাখ লাখ ভুয়া খবর, হেট স্পিচ আর প্রোপাগাণ্ডা অনলাইনে ঘুরে বেড়াচ্ছে৷ ফলে টুইটার, ফেসবুকসহ অন্য প্ল্যাটফর্মকে তাদের সামাজিক দায়িত্ব পালন করতে হবে৷ তাদের নিয়মিতভাবে ভুয়া খবর খুঁজে বের করে সেগুলোতে লেবেল লাগানো, বা মুছে দেয়ার কাজ করতে হবে৷

এটা ভুলে গেলে চলবে না, যেসব দেশে বাকস্বাধীনতা খর্ব করা হয় সেসব দেশে মতপ্রকাশের এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম এই সামাজিক মাধ্যম৷ তবে শুধু শেয়ারহোল্ডারদের কাছে দায়বদ্ধ থাকা অল্প কিছু কোম্পানির প্রধানের বাকস্বাধীনতার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ব্যাপারটি গণতান্ত্রিক নয়৷

ফেসবুক, টুইটার এবং গুগলের মতো সার্চ ইঞ্জিনের ক্ষমতা গণতান্ত্রিক ও কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার সময় এসে গেছে৷ এসব কোম্পানিকেও জবাবদিহির মধ্যে নিয়ে আসতে হবে৷

এ ব্যাপারে জার্মানি ইতিমধ্যে প্রথম পদক্ষেপটি নিয়েছে৷ ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ‘নেটওয়ার্ক এনফোর্সমেন্ট অ্যাক্ট' চালু আছে৷ এই আইনের কারণে সামাজিক মাধ্যমগুলো ভুয়া খবরের বিরুদ্ধে লড়তে বাধ্য৷

ইইউ কমিশন এই আইনকে স্বাগত জানিয়েছে৷ ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম পোস্টের উপর নজর রাখা এবং প্রয়োজন হলে মুছে দেয়ার জন্য জার্মানিতে কয়েকশ ‘কন্টেন্ট মডারেটর' নিয়োগ দিয়েছে৷

ট্রাম্পের ক্ষেত্রে যেমনটা করা হয়েছে, শুধু অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়া অবশ্যই সঠিক কোনো উপায় নয়৷ কারণ এর ফলে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো সহজে তাদের দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারে৷

মানুয়েলা কাসপার-ক্ল্যারিজ/জেডএইচ