সাবেক পূর্ব জার্মানির ‘ভোগ’ ম্যাগাজিন
সাবেক পূর্ব জার্মানির নারীদের সৌন্দর্য ও ফ্যাশনের প্রতি তাঁদের আগ্রহ তুলে ধরতে ১৯৫৬ সালে ‘সিবিলে’ নামে একটি ম্যাগাজিনের প্রকাশনা শুরু হয়৷ অনেকে একে যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ‘ভোগ’ ম্যাগাজিনের সঙ্গে তুলনা করতেন৷
প্রথম প্রকাশ
ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিন হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ভোগ’ এর নাম সুপরিচিত৷ সাবেক পূর্ব জার্মানিতে ‘সিবিলে’ নামে একটি ম্যাগাজিন বের হতো, যা পূর্ব জার্মানির ‘ভোগ’ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছিল৷ ১৯৫৬ সালে দ্বিমাসিক এই ম্যাগাজিনের প্রথম সংস্করণটি প্রকাশিত হয়েছিল৷
স্টুডিওতে তোলা
প্রথম ছয় বছর সিবিলেতে শুধু স্টুডিওতে তোলা ছবি প্রকাশিত হতো৷ মজার বিষয় হলো, ম্যাগাজিনে যেসব ডিজাইনের পোশাকের ছবি ছাপা হতো, তা পূর্ব জার্মানিতে কেনা সম্ভব ছিল না৷ ফলে ছাপা হওয়া ডিজাইনের আদলে ব্লাউজ কিংবা স্কার্ট সেলাই করে নিতে হতো নারীদের৷
স্টুডিওর বাইরে
বার্লিন-ভাইসেনজে এলাকার আর্ট অ্যাকাডেমির অধ্যাপক ও ফটোগ্রাফার আর্নো ফিশার ১৯৬২ সালে সিবিলের স্টাইলে পরিবর্তন আনেন৷ তখন থেকে স্টুডিওর বাইরে মডেলদের ছবি তোলা শুরু হয়৷ অর্থাৎ রাস্তায় হাঁটছেন কিংবা কোনো পাতাল মেট্রো স্টেশনে বসে আছেন, এমন মডেলের ছবি প্রকাশ শুরু হয়৷
পুব থেকে আসা ফ্যাশন
পূর্ব জার্মানির ফ্যাশন জগতে পূর্ব ইউরোপের ফ্যাশনের একটা বড় প্রভাব ছিল৷ সেই সময় পূর্ব জার্মানদের কাছে ‘ফ্যাশন মেট্রোপলিস’ হিসেবে মস্কোর নাম সবার আগে উচ্চারিত হতো৷
মডেলে পরিবর্তন
সত্তরের দশকে পূর্ব জার্মানির অর্থনীতিতে মন্দার বিষয়টি সিবিলের পাতাতেও ধরা পড়েছিল৷ সেই সময় মডেলদের জায়গায় সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখা কর্মজীবী নারীদের ছবি প্রকাশ পেত৷
কাজের পোশাকই যেন ফ্যাশন
১৯৭৭ সালে প্রকাশিত এই ছবি দুটি খেয়াল করলে দেখবেন মডেলদের পরনের পোশাকের সঙ্গে শ্রমজীবী নারীদের পোশাকের কেমন যেন মিল রয়েছে৷ ডানের ছবির পোশাকটি ডিজাইন করেছিল জিডিআর ফ্যাশন ইনস্টিটিউট৷
ফ্রেশ লুক
সত্তরের দশকের পর পূর্ব জার্মানির অর্থনীতি আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি৷ তবে পাঠক-পাঠিকাদের মনোযোগ অন্যদিকে সরাতে আশির দশকে সিবিলে নান্দনিক সব ছবি প্রকাশ শুরু করে৷ যেমন উটে মালারের তোলা উপরের ছবিতে ফ্যাশনের চেয়ে ব্যক্তিগত স্টাইলই বেশি ফুটে উঠেছে৷ এছাড়া আন্তর্জাতিক ফ্যাশনের বিভিন্ন বিষয়ও সেই সময় সিবিলেকে প্রভাবিত করেছিল৷
শেষ প্রকাশনা
১৯৮৬ সালের এক সংস্করণের এই ছবিতে নতুন রং আর নতুন কিছুর দেখা মিলেছিল৷ রাজনীতিতে সেই নতুনত্ব আসে আর তিন বছর পর - ১৯৮৯ সালে বার্লিন প্রাচীরের পতনের মধ্য দিয়ে৷ এরপর ম্যাগাজিনের সম্পাদনা বিভাগেও রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব শুরু হলে ১৯৯৫ সালে দেউলিয়া হয়ে যায় সিবিলে৷