সাধারণ গাড়িও চলবে কৃত্রিম জ্বালানিতে
২৩ নভেম্বর ২০২১ইঞ্জিনের দূষণ কমানোর প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে বিশাল এক অসুবিধা রয়েছে৷ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে মার্টিন হেয়ার্টেল বলেন, ‘‘ইঞ্জিনের মধ্যেই নাইট্রিক অক্সাইড সৃষ্টি বন্ধ করতে পারলে অন্যদিকে আরও পার্টিকুলেট সৃষ্টি হবে অথবা জ্বালানির খরচ বেড়ে যাবে৷ বিশেষ করে আজকের জীবাশ্মভিত্তিক জ্বালানির ক্ষেত্রে আমরা দক্ষতার সীমায় এসে পড়েছি৷ সে কারণে ভবিষ্যতের জন্য উপযুক্ত জ্বালানির সন্ধানেও গবেষণা চলছে৷''
গবেষকরা একই সঙ্গে তৃতীয় আইডিয়া নিয়েও ভাবনাচিন্তা করছেন৷ কম্বাশন ইঞ্জিনের জন্য ওএমই নামের এই নতুন কৃত্রিম জ্বালানি প্রায় কোনো কার্বন নির্গমন করবে না৷ হেয়ার্টেল বলেন, ‘‘আমার মতে, এভাবে বিষয়টি দেখানো যেতে পারে৷ আমার হাতে দুটি উইক বটল রয়েছে৷ একটিতে ডিজেল, অন্যটিতে ওএমই ভরা রয়েছে৷ ডিজেল জ্বালালে হলুদ শিখা ও উপরদিকে ধাবমান পার্টিকুলেটের ধোঁয়া স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে৷ ইঞ্জিনের মধ্যেও ঠিক সেটাই ঘটে৷ ওএমই দিয়ে একই কাজ করলে স্পষ্ট দেখা যাবে যে হলুদ শিখা আর নেই৷ কারণ হলুদ আলোর উৎস হলো পার্টিকুলেট বা বস্তুকণা৷ গরম ইস্পাতের মতো সেটি জ্বলজ্বল করে বলে এমন আলোর ছটা দেখা যায়৷ ইঞ্জিনের মধ্যেও সেটা ঘটে৷''
তুলনার খাতিরে প্রথমে প্রচলিত ডিজেল ইঞ্জিন চালু করা হলো৷ উইক বটল নিয়ে পরীক্ষার সময় যেমনটা ঘটেছিল, জীবাশ্মভিত্তিক জ্বালানি ইঞ্জিন কক্ষেও তেমন উজ্জ্বল ও হলুদ ছটা দেখা গেল৷
এবার কৃত্রিম জ্বালানির পালা৷ এ ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই৷ ডিজেল ইঞ্জিনেই সেটি ব্যবহার করা সম্ভব৷ অর্থাৎ প্রচলিত ইঞ্জিনই যথেষ্ট৷ সিন্থেটিক ফুয়েলের ক্ষেত্রে ভোক্তাদের বেশি মাথা ঘামাতে হবে না৷ ইঞ্জিন ও ট্যাংক একই থাকবে, নতুন করে কোনো ভাবনাচিন্তার প্রয়োজন হবে না৷ কিন্তু অন্যদিকে কম্বাশন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ বদলে যাবে৷
বামে ডিজেল, ডানদিকে কৃত্রিম জ্বালানি৷ বামে পার্টিকুলেট, নাইট্রিক অক্সাইড, কার্বন-ডাই-অক্সাইড৷ ডানদিকে প্রায় কিছুই নেই৷ হেয়ার্টেল মনে করেন, ‘‘প্রচলিত, জীবাশ্মভিত্তিক জ্বালানি ব্যবহার না করেও কম্বাশন ইঞ্জিনের মধ্যে যে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে, তা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে৷ তার বদলে আধুনিক ও কৃত্রিম জ্বালানি কাজে লাগিয়ে নির্গমনের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমানোর অনেক সুযোগ রয়েছে৷ তবে বড় আকারে এমন জ্বালানির উৎপাদনও কঠিন চ্যালেঞ্জ৷ সেটা সম্ভব হলে কম্বাশন ইঞ্জিন ভবিষ্যতেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে বলে আমি মনে করি৷''
কৃত্রিম জ্বালানিতে চলা কম্বাশন ইঞ্জিনযুক্ত এই মোটরকাইকেলই সেই ভবিষ্যতের ইঙ্গিত রাখছে৷ যে কোনো ইলেকট্রিক গাড়ির তুলনায় জলবায়ুর কম ক্ষতি করে এই ইঞ্জিন৷
ক্রিস্টিয়ান ফ্রিডল/এসবি