‘মেয়াদ বাড়ানোর ষড়যন্ত্র’
২ সেপ্টেম্বর ২০১৩বর্তমান মহাজোট সরকার পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ করে পরের ৩ মাসে (৯০ দিন) নির্বাচন করার কথা ভাবছে – সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এমন খবর নিয়ে এখন তুমুল আলোচনা৷ কারণ, এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাধিকবার বলেছেন যে, মেয়াদের শেষ ৩ মাসের মধ্যেই নির্বাচন হবে৷
এই খবরের প্রতিক্রিয়ায় আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেছেন, পঞ্চদশ সংশোধনী অনুযায়ী মেয়াদের শেষ ৩ মাসে আবার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরের ৩ মাসে – এই দুই প্রক্রিয়াতেই নির্বাচন করা যায়৷ তবে মেয়াদের পরে করলে সংসদ ভেঙে দিতে হবে৷ আগে করলে অবশ্য সংসদ ভাঙার প্রয়োজন নেই৷ তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সংবিধান সংশোধনের কোনো পরিকল্পনা নেই সরকারের৷ সংবিধান অনুযায়ী অন্তর্বর্তী সরকার কেবল দৈনন্দিন কাজ করবে৷ নির্বাচনের সব দায়িত্ব এবং ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের৷
তবে সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক ডয়চে ভেলেকে বলেন, পঞ্চদশ সংশোধনী অনুযায়ী সরকারের মেয়াদ পূর্তির শেষ ৩ মাসেই নির্বাচন করতে হবে৷ মেয়াদ পূর্তির পরে নির্বাচন করার কোনো সুযোগ নাই৷ এছাড়া, মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে যদি সংসদ ভেঙে যায় তাহলে সংসদ ভাঙার পরবর্তী ৩ মাসের মধ্যে নির্বাচন হবে৷ আর মেয়াদ শেষ হওয়ার পরের ৩ মাসে নির্বাচন করতে হলে সংবিধান সংশোধন করতে হবে৷ দলীয় স্বার্থে সংবিধান সংশোধন করলে তার পরিণতি ভালো হয় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷ যেমন, চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে সরকারের মেয়াদ বাড়িয়েছিল আওয়ামী লীগ, যার পরিণতি ভালো হয়নি৷ আর বিএনপি চতুর্দশ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারপতিদের অবসরে যাওয়ার বয়স বাড়িয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছে৷ তার পরিণতিও প্রশ্নসাপেক্ষ৷ তাই এবারও দলীয় স্বার্থে সংবিধান সংশোধন করলে তা কোনো শুভ ফল বয়ে আনবে না৷
এদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ক্ষমতায় টিকে থাকতে এবং মেয়াদ বাড়াতে সরকার নানা ষড়যন্ত্র করছে৷ তারা সংবিধানে নানা অস্পষ্টতা রেখেছে৷ এর মধ্য দিয়ে তারা ক্ষমতা আরো দীর্ঘ করতে চায়৷ কিন্তু সরকারের এই ষড়যন্ত্র সফল হবে না, বলেন মির্জা ফখরুল৷