1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সম্পর্ক ঝালাই করতে চীন যাচ্ছেন জারদারি

৫ জুলাই ২০১০

পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি খান জারদারি আগামীকালই তাঁর বহু প্রতীক্ষিত চীন সফর শুরু করছেন৷ পুরনো বন্ধু চীনের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নই তাঁর এই সফরের লক্ষ্য৷

https://p.dw.com/p/OB4o
আসিফ আলি খান জারদারিছবি: AP

সফরকালে পরমাণু প্রকল্প নিয়ে চীনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন জারদারি৷ দায়িত্ব নেওয়ার পর জারদারি বলেছিলেন, প্রতি তিন মাস অন্তর তিনি একবার চীন যাবেন৷ কিন্তু তা হয়নি৷ চীনের তরফ থেকে তেমন সাড়া পাননি বলেই হয়তো৷ তবে এবার সাড়া মিলেছে৷ দীর্ঘদিনের মিত্র প্রতিবেশী দেশটির পথে কালই ইসলামাবাদ ছাড়ছেন জারদারি৷ জারদারির এই সফরের দিকে চোখ থাকবে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রেরও৷

ছয়দিনের সফরে জারদারি চীনা প্রেসিডেন্ট হু জিনতাও এবং ওয়েন জিয়াবাও-এর সঙ্গে বৈঠক করবেন৷ চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কিন গ্যাং আজ এই তথ্য জানিয়েছেন৷ তবে দু'দেশের মধ্যে পরমাণু সহায়তা কিংবা বাণিজ্য বিষয়ক কোনো চুক্তি হবে কি না, সে বিষয়ে কিছুই বলেননি তিনি৷

G20 Gipfel Toronto China HU Jintao
চীনা প্রেসিডেন্ট হু জিনতাওছবি: AP

অনেক দিন ধরেই পাকিস্তানের সমরাস্ত্র সরবরাহ করে আসছে চীন৷ পাঞ্জাবের চশমা পরমাণু প্রকল্পে দুটি চুল্লী বসিয়ে দিতেও চীন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ৷ ইসলামাবাদ বলছে, এই দুটি চুল্লী বেসামরিক কাজে ব্যবহার হবে৷ তবে যুক্তরাষ্ট্র এই বিষয়ে চীনের কাছে আরো বিস্তারিত জানতে চাইছে৷ ২০০৪ সালে চীন নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ার্স গ্রুপ- এনএসজি'তে নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করে৷ ওয়াশিংটন বলছে, চীন-পাকিস্তান চুক্তিতে কী আছে, তা এনএসজি'কে জানাতে হবে৷ তবে চীন বলে আসছে, পাকিস্তানের সঙ্গে চুক্তি আন্তর্জাতিক রীতিনীতি মেনেই হয়েছে৷ আর পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কা আছে পশ্চিমাদের৷ পাকিস্তানের সংবাদ মাধ্যমের খবর, জারদারির সফরে বাণিজ্য নিয়েও আলোচনা হবে৷

গত দুই দশকে দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব বেড়েছে৷ তাই এই সময়ে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক আরো গভীর করা চীনের কৌশলের অংশ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷ জার্মান মার্শাল ফান্ডের ফেলো অ্যান্ড্রু স্মল বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘‘পাকিস্তানের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক চীনের কাছে এখন বেশ গুরুত্বপূর্ণ৷ কারণ ভারত এগিয়ে যাচ্ছে, এবং আবারো তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ভালো হচ্ছে৷ ফলে কয়েক যুগ আগে পাকিস্তানকে যেভাবে সহায়তা দিয়ে আসতো, সেই একই কাজ এখন ফের করতে চাইবে চীন৷''

জারদারির সফরের একমাস আগেই পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আশফাক পারভেজ কিয়ানি চীন ঘুরে এলেন৷ তখন দুদেশের সৈন্যদের যৌথমহড়াও হয়৷ দুই তরফে বলা হচ্ছে, জঙ্গি দমন অভিযান জোরদার করাই ওই মহড়ার লক্ষ্য৷ একসময় চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ বন্ধন থাকলেও জঙ্গি তৎপরতা বেড়ে যাওয়ার পর পাকিস্তান মুখ ফেরায় যুক্তরাষ্ট্রের দিকে৷ তবে পাকিস্তানিরা চায়, চীনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার৷ সম্প্রতি এক জরিপে দেখা যায়, মিত্র হিসেবে ৮৪ শতাংশ পাকিস্তানির পছন্দ চীনকে৷ আর ১৬ ভাগ যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে৷

তবে চীনের দিকে ঝুঁকে পাকিস্তান যতই ঝুঁকে পড়ুক, পাকিস্তানের প্রতি মিত্রতার হাত গুটিয়ে নিতে যুক্তরাষ্ট্র চাইবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা৷ আর চীনের দিকে ঝুঁকে পাকিস্তান পশ্চিমাদের কাছ থেকে আরো সহায়তা আদায় করে নিতে পারে৷

প্রতিবেদন: মনিরুল ইসলাম

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ