1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সমুদ্রের ঢেউয়ের বিপুল শক্তির রহস্য

১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯

সমুদ্রের ঢেউ বেশিরভাগ মানুষেরই মন ভালো করে দেয়৷ অনেকে সেই পানিতে গা ভাসাতে ভালবাসেন৷ কেউ বা করেন সার্ফিং৷ কিন্তু পদার্থবিদ্যার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ঢেউয়ের সংজ্ঞা ও তার কাজের খবর ক'জন রাখেন?

https://p.dw.com/p/3PeYx
Japan Tokio Taifun 6.10.
ছবি: Getty Images/Jiji Press

পর্তুগালের অ্যাটলান্টিক উপকূলে সার্ফাররা ছোট-বড় সবরকম ঢেউ উপভোগ করতে পারেন৷ আন্দ্রেয়াস হেগার পেশায় পদার্থবিদ্যার শিক্ষক৷ সার্ফিং নিয়ে তাঁর বিশাল উৎসাহ৷ পদার্থবিদ হিসেবে তিনি আদর্শ পরিস্থিতি কাজে লাগান৷ কিন্তু প্রশ্ন হলো, ঢেউ আসলে কী?আন্দ্রেয়াস মনে করিয়ে দিলেন, যে ঢেউ আসলে এমন এক শক্তি, যা স্থানান্তরিত হয়৷ তিনি একটি তোয়ালে ঝাঁকিয়ে দেখিয়ে দিলেন, যে ঢেউ গোটা তোয়ালে জুড়ে ছড়িয়ে গেল৷ এ ক্ষেত্রে ঝাঁকানোর ফলে সৃষ্টি হওয়া শক্তি স্থানান্তরিত হলো৷

কিন্তু তোয়ালের মধ্যে ঢেউয়ের সঙ্গে পানির ঢেউয়ের মিল কোথায়? মিল কিন্তু অবশ্যই রয়েছে৷ তোয়ালে হোক অথবা পানি, ঢেউ কিন্তু ভর নয়৷ শুধুই শক্তি, যা স্থানান্তর করা হয়৷ সৈকতে ঢেউয়ের সেই চরিত্র বোঝা যায় না৷ এ ক্ষেত্রে পানি আসলে শুধু পরিবহণের মাধ্যম৷

সার্ফাররা যেখন তাঁদের বোর্ডের উপর অপেক্ষা করেন এটা অনেকটা সে রকম৷ পানির অণুও সেভাবে খুব কম নড়াচড়া করে৷ ঢেউ অবশ্য আরও দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলে৷

সমুদ্রে ঢেউ সৃষ্টিকারী এই শক্তি কোথা থেকে আসে? জোয়ারভাঁটা অবশ্যই এর অন্যতম কারণ৷ চাঁদের প্রভাবে সমুদ্রের পানি সবসময় চলমান অবস্থায় থাকে৷ চাঁদের অভিকর্ষের ফলে জোয়ার ও ভাটা হয়৷ তখন ঢেউও সৃষ্টি হয়৷ তবে মূলত বাতাসের সাহায্যেই ঢেউ সৃষ্টি হয়৷ বাতাসের শক্তি ও তার স্থায়িত্ব এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ কারণ বাতাসই পানির অণুগুলিকে গতিশীল করে তোলে৷ ঠিক হেয়ার ড্রাইয়ার যেভাবে কৃত্রিম বাতাস সৃষ্টি করে ঢেউয়ের জন্ম দিতে পারে৷

 মহাসাগরের মাঝে সৃষ্টি হবার পর ঢেউ প্রায়ই সারা দিন ধরে কয়েকশো কিলোমিটার যাত্রা করে উপকূলের দিকে ধেয়ে যায়৷ দীর্ঘ ও চ্যাপ্টা পানির ঢেউ ছোট ও উঁচু ঢেউয়ের তুলনায় আরও দ্রুত এগিয়ে যায়৷ কারণ সেগুলি নিজস্ব শক্তিতেই রাশ টানতে পারে৷ ঢেউয়ের মধ্যে পানির অণু চক্রাকার হয়ে ঘুরতে থাকে৷ এই চক্রাকার ঘূর্ণন পানির আরও গভীরেও চলতে থাকে৷ পানি যত গভীর হয়, অণুগুলির কক্ষপথ ততই ছোট হতে থাকে৷ ঘূর্ণায়মান পানির কণাগুলি যখন সমুদ্রের তলদেশে মাটির উপর আছড়ে পড়ে, তখন তাদের গতি থমকে যায়৷ তার প্রভাবও টের পাওয়া যায়৷ তখন শ্যালো ওয়াটার ওয়েভ সৃষ্টি হয়৷ সার্ফিং-এর উপযুক্ত ঢেউও আসলে শ্যালো ওয়াটার ওয়েভ৷

নীচের পানির অণু সমুদ্রের তলদেশে থমকে গেলেই সেই অবস্থা সৃষ্টি হয়৷ সে সময়ে উপরের কণাগুলি কিন্তু বিনা বাধায় ঘুরতে থাকে৷ এর ফলে লাগামহীন পানির অণুগুলি আরও বেশি উপরের দিকে ধেয়ে যায়৷ সার্ফিং-এর উপযুক্ত ঢেউ তখন সমুদ্রতীরে এসে ভেঙে পড়ে৷ সার্ফারদের জন্য সেটা হলো আদর্শ অবস্থা৷

তবে আদর্শ ঢেউ কিন্তু সময় মেনে চলে না৷ সে কারণে আন্দ্রেয়াস হেগার সন্ধ্যাবেলায়ও পানির উপর কেরামতি দেখাতে থাকেন৷

কার্স্টেন লিন্ডার/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য