সমালোচনা ও অপ্রিয় সত্য সহ্য করা যায় না কেন?
কেউ সমালোচনা করলে কিংবা কোনো ক্রটি ধরিয়ে দিলে আপনি কি রেগে যান? চটে যান অল্পতেই? তারপর চটে যাওয়ার জন্য প্রতিশোধ নিতে চান? এ সব প্রশ্নের উত্তর ‘হ্যাঁ’ হলে ধরে নিতে হবে অতীত জীবনে বড় কোনো আঘাত রয়েছে আপনার৷
সামান্য কারণেই রাগ?
কোনো রেস্তোরাঁয় যাওয়ার পর দেখা গেল, ওয়েটারের আসতে একটু দেরি হচ্ছে বা কোনো লাইনে দাঁড়িয়ে একটু বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে অথবা কোনো প্রতিবেশী হয়ত আপনাকে ভালো করে সালাম দেয়নি – এমন তুচ্ছ কারণেও কিন্তু অনেকে রেগে যান৷ এ রকম আচরণ আসলে নিজের ভেতরের কোনো আঘাত বা পুরোনো দুঃখ কিংবা অসন্তোষেরই বহিঃপ্রকাশ৷ জার্মান মনোবিজ্ঞানী হাইকে স্ট্যুভেল এমনটাই মনে করেন৷
সমালোচনা কিন্তু কারোই পছন্দ নয়
পরিবার বা কর্মক্ষেত্র – যেখানেই হোক না কেন, নিজের দুর্বলতা নিয়ে কথা বললে তা সহ্য করার ক্ষমতা খুব কম মানুষেরই থাকে৷ কষ্ট সকলেই পায়৷ তবে কেউ তা চেপে রাখে, আর কেউ কেউ প্রতিশোধ নেবার অপেক্ষায় থাকে৷ দু’টোর ফলাফলই কিন্তু ভয়ংকর হতে পারে৷ কারণ, কষ্ট চেপে রাখার মানসিক যন্ত্রণা আর প্রতিশোধ নেওয়ার বাসনা – কোনোটাই কখনো শুভ হতে পারে না৷
বিরূপ আচরণের কারণ
অনেকেই নিজের ভেতরের অসুখ বা অসন্তোষের ফলে অন্যের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করে৷ তবে এ ধরনের ব্যাপারগুলো শিশুর মনে ছোটবেলাই প্রবেশ করে, মূলত পারিবারিক কারণে৷ আসলে অনেক অন্যায়ই মানুষ পরিবেশ থেকে শেখে৷ আর আজকের এই স্যোশাল মিডিয়ার যুগে সবই অতি দ্রুত ছড়িয়ে যায়, যার ইতিবাচক প্রভাবের চেয়ে নেতিবাচক প্রভাবই বেশি৷
কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ প্রতিযোগিতা
জীবনে প্রতিষ্ঠা পেতে সকল ক্ষেত্রেই প্রতিযোগিতার প্রয়োজন৷ এটা শুরু হয় শিক্ষাজীবনের একেবারে শুরু থেকে৷ তবে আধুনিক বিশ্বে প্রতিযোগিতার চেহারাটা ভিন্ন৷ বলা যায়, প্রায় সব ধরনের কর্মক্ষেত্রেই চলছে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ বা নিজেকে জাহির করার এক অসুস্থ প্রতিযোগিতা৷ এর ফলে মানুষের মানবিক দিক বা একে-অপরের প্রতি সম্মান দেখানো ও শ্রদ্ধাবোধ ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে৷
অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে করণীয়
সবাইকে সবার শতভাগ ভালো লাগবে বা পছন্দ হবে তা আশা করা একেবারেই উচিত নয়৷ বরং অন্যের বিষয়ে তেমন মাথা না ঘামিয়ে নিজে যতটা সম্ভব ভদ্রতা দেখান৷ আপনার সহকর্মী কিংবা সঙ্গীর আজ হয়ত আপনার প্রতি তেমন মনোযোগ নেই৷ এর অর্থ কিন্তু এই নয় যে, আপনি আজ তাঁর কাছে মূল্যহীন৷ সবসময় নিজেকে অতি মূল্যবান ভাববেন না! আর হ্যাঁ, মুখের হাসিটুকু ধরে রাখবেন সব সময়!
সহজেই সমাধান
পারিবারিক বা পেশাগত সমস্যার সমাধান করতে বেছে নিন শান্ত, সুন্দর পরিবেশ৷ নিজেকে শান্ত রেখে একে-অপরের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন৷ আগের ঘটে যাওয়া অশোভন আচরণের জন্য ক্ষমা চেয়ে নিন৷ আগামীতে এ ধরনের সমস্যা আসার আগেই খোলাখুলি আলোচনা করবেন বলে কথা দিন৷ দেখবেন, মনে হবে এই অস্থির পৃথিবীতেও জীবন কেমন শান্তির৷ এই তথ্যও জানান জার্মান মনোবিজ্ঞানী হাইকে স্ট্যুভেল৷