সবরিমালা দুর্ঘটনার জন্য কেরালা সরকারকে আদালতের ভর্ৎসনা
২০ জানুয়ারি ২০১১ঐ দুর্ঘটনায় পদপিষ্ট হয়ে মারা যায় ১০২ জন তীর্থযাত্রী৷
এই দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে কেরালা সরকারের বিভিন্ন বিভাগের তিনটি রিপোর্ট পাবার পর কেরালা হাইকোর্টের দুজন বিচারকের এক ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য প্রশাসনকে ভর্ৎসনা করে বলেছেন, বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সমন্বয় না থাকা পুলমেডু ট্র্যাজিডির অন্যতম কারণ৷ পুলমেডু হলো সবরিমালা মন্দিরে যাবার পাহাড়ি জঙ্গল পথ৷ আদালত সরকারের কাছে জবাব চেয়েছিলেন যে পুলমেডু রুটে সবরিমালা তীর্থযাত্রীদের জন্য যথেষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিলনা কেন? এই রাস্তা যেহেতু গেছে পেরিয়ার সংরক্ষিত অভয়ারণ্যের মধ্যে দিয়ে, তাই সেই সরু পথে কেন এক লক্ষ তীর্থযাত্রী এবং দু হাজার মোটরগাড়িকে একসঙ্গে যাবার অনুমতি দেয়া হলো ? কেন সংকীর্ণ পথের দুধারে ছোট ছোট দোকান ঘর বসতে দেয়া হয়?
তিনটি রিপোর্টে পুলিশ প্রশাসন, মন্দির বোর্ড এবং বন বিভাগ একে অপরের ওপর দোষ চাপিয়ে নিজেদের দায়িত্ব ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করে৷ পুলিশের দাবি, ভীড় নিয়ন্ত্রণে ২৭৯জন পুলিশ মোতায়েন ছিল৷ মন্দির বোর্ড বলছে, বড় জোর জনা পঞ্চাশেক পুলিশ ছিল৷ মন্দির কর্তৃপক্ষ বলেছে, ভীড় নিয়ন্ত্রণে পুলিশকে আগেই তারা সতর্ক করে দিয়েছিল৷ বন বিভাগও পুলিশ প্রশাসনের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলে বলেছে, অভয়ারণ্যের সংবেদনশীলতার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা সত্ত্বেও তীর্থযাত্রীদের গাড়ি যেতে দেবার জন্য তাদের ওপর চাপ ছিল প্রশাসন, মন্দির পর্ষদ, গাড়ি মালিক ও স্থানীয় রাজনীতিবিদদের৷
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভিএস অচ্যুদানন্দন নিহতদের পরিবারকে ৬লক্ষ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দ্রুত পৌঁছে দেবার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছেন৷ বেশিরভাগ তীর্থযাত্রী তামিলনাড়ু, অন্ধ্র প্রদেশ এবং কর্ণাটকের৷ ১৯৯৯-এর সবরিমালা দুর্ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট ও ব্যবস্থা গ্রহণ রিপোর্ট কেন বিধানসভায় পেশ করা হয়নি তা খতিয়ে দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ সবরিমালার শ্রীআয়াপ্পা মন্দিরে মকরসংক্রান্তি উপলক্ষে যে মকরজ্যোতি দর্শনে এত ভীড় হয়, সেই মকরজ্যোতির বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিতে বলেছে আদালত৷ সরকারের কাছে জানতে চেয়েছেন এই জ্যোতি বাস্তবিক ঐশ্বরিক না মানবসৃষ্ট৷ সরকার এবিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে রাজি নয়৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন