সংসদের দিকে নজর সবার
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৩৯ম জাতীয় সংসদের শেষ অধিবেশন শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার৷ তা চলবে ২৪শে অক্টোবর পর্যন্ত৷ এরপর সংসদ সদস্যরা তাঁদের পদে থাকলেও সংসদের অধিবেশন আর বসবেনা৷ তাতে স্পষ্ট যে সরকার তার মেয়াদের শেষ ৩ মাসে নির্বাচন করার লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছে৷ এ কারণেই সংসদের শেষ অধিবেশনের মেয়াদ ২৪শে অক্টোবর পর্যন্ত করা হয়েছে৷ এর ৩ মাস পর ২৪শে জানুয়ারি সরকারের মেয়াদ শেষ হবে৷ নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে ২৫শে জানুয়ারির মধ্যে৷
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক হাফিজুর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেন, দেশের প্রধান বিরোধী দল নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়৷ আর তা করতে হলে সংবিধান সংশোধন প্রয়োজন হবে৷ কিন্তু সেই সুযোগ আছে ২৪শে অক্টোবর পর্যন্ত৷ এরপর সংসদ সদস্যরা তাঁদের পদে থাকলেও সংসদের অধিবেশন ডাকার আর কোনো সুযোগ নেই৷ তাই এই শেষ অধিবেশন চলাকালে যদি দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের মধ্যে সমঝোতা না হয়, তাহলে পরে আর সংবিধান সংশোধনের সুযোগ থাকবনো৷ তিনি আরও বলেন, তবে বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী মেয়াদ শেষ হওয়ার – মানে ২৪শে জানুয়ারির পরের ৩ মাসেও নির্বাচন করা যায়৷ তবে তাতেও সংকট সমাধানের কোন পথ সাংবিধানিকভাবে দেখা যাচ্ছেনা৷
তবে হাফিজুর রহমান মনে করেন, আসল সংকট হল দুই দলের অনড় অবস্থান৷ তারা যদি ছাড় দিয়ে সমঝোতায় আসে, তাহলে সংসদের অধিবেশন থাকা-না থাকায় কোন সমস্যা হবেনা৷ তিনি জানান, ১৯৯০-এর গণঅভ্যুত্থানে এরশাদের পতনের পর সংসদের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন করা হয়নি৷ তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ও মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকার ব্যবস্থার ব্যাপারে রাজনৈতিক সমঝোতা হয়৷ নির্বাচনের পরে সংবিধানের একাদশ এবং দ্বাদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তাকে বৈধতা দেয়া হয়৷ তাই আসল কাজ হলো রাজনৈতিক সমঝোতা৷
এদিকে ‘সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক' (সুজন) সংগঠনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার ডয়চে ভেলেকে বলেন, সব দলের অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবেনা৷ তাই নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে একটি রাজনৈতিক সমঝোতা প্রয়োজন৷ সে জন্য প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধনের সুযোগ আছে সংসদের চলতি অধিবেশনেই৷ তিনি তাই চান, এই অধিবেশন চলাকালেই রাজনৈতিক দলগুলো একটি সমঝোতায় আসুক৷ আর সমঝোতা না হলে সংঘাত অনিবার্য বলে মনে করেন তিনি৷