শেরিফ টিরাসপোল ক্লাব : এক চিলতে ভূখন্ডের অপার বিস্ময়
সবাই মলদোভার ক্লাব বললেও এফসি শেরিফ এমন এক ভূখন্ডের, যার সঙ্গে মলদোভার সম্পর্ক ‘প্রায়’ বিচ্ছিন্ন৷ দেশের স্বীকৃতি না পাওয়া সেই ট্রান্স-নিস্টার বা ট্রান্সনিস্ত্রিয়া অঞ্চলের ফুটবল দলটি এখন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বড় চমক...
এক চিলতে ভূমির এক আকাশ স্বপ্ন
ট্রান্স-নিস্টার বা ট্রান্সনিস্ত্রিয়া অঞ্চল হলো মলদোভা-ইউক্রেন সীমান্ত আর দ্নিস্তার নদীর মাঝের ছোট এক ভুখন্ড, যা মলদোভা থেকে কার্যত আলাদা হলেও পুরোপুরি আলাদা নয়৷ কারণ, দেশ হিসেবে এর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নেই৷ এমনই এক অঞ্চলের ক্লাব শেরিফ টিরাসপোল৷
অবিশ্বাস্য উত্থান
২০০২-০৩ মৌসুমে শেরিফ টিরাসপোলের কোচ ছিলেন গাভ্রিল বালিন্ত৷ ক্লাবটি তখনই মলদোভার সেরা হয়ে গেলেও দেশের বাইরে কেউ খুব একটা চেনে না তাদের৷ সেই ক্লাব এখন চ্যাম্পিয়ন্স লিগে! বিষয়টা গাভ্রিল বালিন্তের কাছে ভীষণ বিস্ময় জাগানিয়া৷ ডয়চ ভেলেকে তাই বললেন, আমি কখনো ভাবিনি যে মলদোভার ফুটবলে একদিন এমন ক্লাব আসবে যাদের আমরা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ গ্রুপ পর্বে দেখতে পাবো৷’’
যেভাবে তারা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে
এবার সত্যিই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ইতিহাসে নাম লিখিয়েছে শেরিফ। মলদোভার প্রথম ক্লাব হিসেবে ইউরোপের ক্লাব শ্রেষ্ঠত্বের আসরের গ্রুপ পর্বে উঠেছে তারা। মূল পর্বে জায়গা করে নিতে প্লে-অফ খেলতে হয়েছিল৷ সেখানে দ্বিতীয় লেগে ক্রোয়েশিয়ার ডায়নামো জাগরেবের বিপক্ষে হার এড়ালেই চলতো। জাগরেবের মাঠে গোলশূন্য ড্রয়ে শেষ করে দুই লেগ মিলিয়ে তিন গোলে এগিয়ে থেকে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার সুযোগ করে নেয় শেরিফ৷
বিস্ময়কর সূচনা
কারো কারো মতে শেরিফ টিরাসপোল ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেছিল সাবেক সোভিয়েত ইউয়নের গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবির দুই গোয়েন্দা৷ ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১৯ বার মলদোভার লিগ এবং দশবার কাপ জিতেছে তারা৷ এছাড়া চারবার ইউরোপা লিগ খেলা ক্লাবটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগও শুরু করেছে দাপটের সাথে৷ নিজেদের মাঠে প্রথম ম্যাচে ইউক্রেনের শাখতার দনেৎস্ককে ২-০ গোলে হারিয়েছে তারা৷
বহুজাতিক খেলোয়াড়ে ঠাসা ধনী ক্লাব
ক্লাবের মালিকদের রয়েছে অনেক ধরনের ব্যবসা৷ সুপারমার্কেট, পেট্রোল স্টেশন, নির্মাণ প্রতিষ্ঠান, হোটেল, মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক, বেকারি, ডিস্টিলারি, টেলিভিশন ও রেডিও চ্যানেল- বলতে গেলে সব ব্যবসাই আছে তাদের৷ তাই গ্রিস, ব্রাজিল, ঘানা এবং কলম্বিয়ার খেলোয়াড়দের দলে ভিড়িয়েছে তারা৷ গ্রুপের অন্য দুই প্রতিপক্ষ রেয়াল মাদ্রিদ এবং ইন্টার মিলানের সামনেও তাই কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে যেতে পারে শেরিফ টিরাসপোল৷