আফরোজার ফিরে আসা
১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঢাকায় এসে বিজিবির মাধ্যমে আফরোজাকে তার বাবার হাতে তুলে দিয়েছেন৷
২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে মনোয়ারা বেগম তাঁর দুই সন্তান আফরোজা ও মুন্নাকে নিয়ে দালালের মাধ্যমে অবৈধভাবে কাজের সন্ধানে ভারতে যান৷ আর যাওয়ার পরই তাঁরা বালুরঘাট সীমান্তে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন৷ এরপর অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের দায়ে মনোয়ারা বেগমের দুই বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার রুপি জরিমানা হয়৷ তবে কারাগারে থাকা অবস্থায়ই সে বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর মারা যার মনোয়ারা বেগম৷ এরপর পশ্চিমবঙ্গ কারা অধিদপ্তরের উদ্যোগে আফরোজা এবং তার ভাই মুন্নাকে নদীয়া জেলার রানাঘাট হলিচাইল্ড সেফ হোমে পাঠানো হয়৷ আর সেখানে থাকা অবস্থায় তাদের দুই ভাই-বোনকে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন ক্ষতিপূরণ বাবাদ দেড় লাখ রুপি অর্থ সহায়তা দেয়৷
বিজিবি'র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ জানান, বিজিবি ঘটনা জানার পর থেকেই এই দুই শিশুকে বাংলাদেশে ফেরত আনার চেষ্টা করে, যোগাযোগ করে বিএসএফ এর সঙ্গে৷ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও উদ্যোগ নেয়৷ ফলে ২০১১ সালের ১৪ আগস্ট মুন্নাকে ফেরত আনা সম্ভব হয়৷ আর শনিবার বিএসএফ এর অতিরিক্ত মহাপরিচালক বিডি শর্মা আফরোজাকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকায় আসেন৷
ঢাকায় বিজিবি সদর দফতরে আফরোজাকে তার বাবা আকরাম হোসেনের হাতে তুলে দেয়া হয়৷ এসময় আকরাম আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন৷ তারঁ চোখে ছিল আনন্দাশ্রু৷ তিনি বলেন কখনো ভাবেননি মেয়েকে ফিরে পাবেন৷ তাঁর স্ত্রী ভারতের কারাগারে মারা গেছেন সেই শোক তাঁকে ভুলিয়ে দেবে তাঁর সন্তান৷ তিনি জানান, তিনি পাবনায় পরিবহণ শ্রমিকের কাজ করেন৷ আর দালালরা বেশি আয়ের লোভ দেখিয়ে তাঁর স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে ভারতে নিয়ে গিয়েছিল৷ এর আগে ফেরত আনা তাঁর ছেলে মুন্না রাজশাহীতে নানির বাড়িতে থাকে এখন৷ বিজিবি সদর দপ্তরে তাঁর নানিও উপস্থিত ছিলেন৷ বিজিবি'র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ জানান আফরোজাকে বিজিবির খরচে রাজশাহীর শহীদ কর্ণেল কাজী এমদাদুল হক পাবলিক স্কুলে পড়াশুনার ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ আর তার বাসস্থানসহ অন্যান্য খরচ বহন করবে ‘এসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট৷ তিনি আফরোজাকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য বিএসএফ এবং ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানান৷
বাবার কাছে ফিরতে পেরে আফরোজাও বেজায় খুশি৷ সবচেয়ে বেশি খুশি সে তার ভাই মুন্নাকে আবার দেখতে পাবে সেই আনন্দে৷ তবে মায়ের কথা তার মনে পড়ে৷
এদিকে বিএসএফ এর অতিরিক্ত মহাপরিচালক বিডি শর্মা জানান আফরোজাকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে পেরে তারাও খুশি৷ তিনি জানান এজন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার সবধরণের সহায়তা করেছে৷