শিশুদের জন্য বই পড়া কেন গুরুত্বপূর্ণ?
অনেক মা-বাবা তাঁদের সন্তানকে বই পড়ে শোনানোর জন্য সময় দিতে কার্পণ্য করেন৷ অথচ দিনে অন্তত ১৫ মিনিট বই পড়ে শোনানো উচিত৷ এতে শিশুরা মানসিকভাবে শক্ত হয়ে ওঠে৷ বই পড়ায় উৎসাহ দিতে প্রতিবছরের মতো এবারও পালিত হলো ‘রিডিং ডে’৷
শিশুদের মনোবল বাড়ায়
শিশু সন্তানকে প্রতি রাতে বিছানায় নিয়ে বই পড়ে শোনানোর পর শিশুটি যখন ধীরে ধীরে ঘুমিয়ে পড়ে, সেই সুন্দর দৃশ্যের অনুভূতি প্রতিটি মা-বাবার জন্যই আনন্দের৷ তবে দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, আজকাল অনেক পরিবারে এমনটা দেখা যায় না৷ শিশুরা বই পড়লে বা কেউ পড়ে শোনালে শিশুদের সিদ্ধান্ত নেয়ার মনোবল বাড়ে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা৷
১৫ মিনিটই যথেষ্ট
সমীক্ষায় জানা যায়, জার্মানিতে তিন বছর বয়স পর্যন্ত শতকরা মাত্র ২৮ভাগ শিশুকে বই পড়ে শোনানো হয়৷ আর প্রাইমারি স্কুলের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে তো শতকরা ১৫ ভাগ শিশুকেও বাড়িতে বই পড়ে শোনানো হয় না৷ অথচ শিশুর বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য দিনে মাত্র ১৫ মিনিট সময়ই যথেষ্ট বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞ লুকাস হেইমান
অনভূতির আদান-প্রদান
শিশুকে সাথে নিয়ে বই পড়ে শোনালে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে ওঠে আর এতে ওরা ওদের প্রয়োজনীয় বইগুলোও সহজে পড়তে পারে৷ বই পড়ার অভ্যাসের কারণে শিশু পড়ায় মনোযোগী হতে যেমন শেখে, তেমনি অন্যদের সাথে অনুভূতির আদান-প্রদানও সহজে করতে পারে৷
১০ মাস বয়সেই শিশুর হাতে বই তুলে দিন
শিশুর সাথে বই পড়ার মতো সুন্দর কাজটি যত তাড়াতাড়ি শুরু করা যায়, শিশুর জন্য তা তত বেশি মঙ্গলজনক৷ মাত্র ১০ মাস বয়সেই শিশুর হাতে কাপড়ের তৈরি ছবির বই ধরিয়ে দিন৷ তারপর ধীরে ধীরে বয়স অনুযায়ী অন্যান্য রুপকথা বা পশু-পাখি কিংবা শিশুর উপযোগী যে কোনো বই দিন৷ শিশুকে সাথে নিয়ে বই কিনুন৷
বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই
আপনার শিশুর বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন৷ বই খুলে দেয় মানুষের মনের জানালা আর দৃষ্টিকে করে প্রসারিত৷ ১৬ নভেম্বর পুরো জার্মানিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ১৫তম বই পড়া দিবস পালিত হয়েছে৷ বই হাতে নিয়ে পড়ার আনন্দের সাথে ‘ই-বুক’-এর কোনো তুলনা নেই৷ হাতে বই নিয়ে বইকে অনুভব করা যায়৷ বুক শেল্ফে রাখা বই দেখা যায়, দেখে বারবার পড়া যায়৷ তাই জ্ঞানের ভাণ্ডার ও ব্যক্তিত্বকে সমৃদ্ধ করতে বইয়ের কোনো বিকল্প নেই৷
শিশুর আগ্রহকে গুরুত্ব দিন
কোনো শিশু যদি একই বইয়ের গল্প বারবার শুনতে চায় , এতে মা-বাবা বিরক্ত হবার কিছু নেই, বরং এই আগ্রহকে শিশুর জন্য ইতিবাচক বলেই মনে করেন মনে করেন হেইমান৷
জার্মান রাজনীতিক বই পড়ায় উৎসাহ দেন যেভাবে
জার্মানির এসপিডি দলের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রিয়া নালেস জার্মানির ‘রিডিং ডে’ উপলক্ষে অন্যান্য বারের মতো এবারো শিশুদের উৎসাহ দিতে একটি প্রাইমারি স্কুলে রুপকথার বই পড়ে শুনিয়েছেন৷ এতে শিশুরা যেমন মজা পেয়েছে, তেমনি রাজনীতিক আন্দ্রিয়া নালেস নিজেও আনন্দ পেয়েছেন৷