শিক্ষার্থীদের সোশ্যাল মিডিয়াতে যুক্ত হচ্ছে সরকার
১১ জুলাই ২০১৯সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার৷ প্রথমে, শিক্ষার্থীদের অ্যাকাউন্টগুলোকে যুক্ত করা হবে নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টের সঙ্গে৷ এরপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যুক্ত থাকবে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের অ্যাকাউন্টে৷ সরকার বলছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ইতিবাচক দিক সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে নেয়া হয়েছে এ উদ্যোগ৷ এ লক্ষ্যে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চিঠিও দিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের সচিব আর সুব্রহ্মণ্যম।
সরকারের এমন সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বিরোধীরা বলছেন, পেছনের দরজা দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপরে নজরদারি চালানোর চেষ্টা করছে সরকার৷
সাধারণত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা স্বাধীনভাবে নিজেদের মত প্রকাশ করেন৷ যেখানে সরকারের প্রশংসা বা সমালোচনা থাকতে পারে৷ সুস্থ গণতন্ত্রের জন্য এমনটাই হওয়া উচিত বলে মনে করেন অনেকে৷ যা দেশটির সাংবিধানিক অধিকারও বটে। কিন্তু সরকারের এমন সিদ্ধান্তে অনেকেই নাখোশ৷ তাঁদের আশঙ্কা, এ প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীদের অ্যাকাউন্টগুলোর অপব্যবহার হতে পারে। এমনকি, সোশ্যাল মিডিয়ার করা মন্তব্যের কারণে অনেক শিক্ষার্থীর চাকরি জীবনে প্রবেশে বাধা হয়েও দাঁড়াতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা৷
লোকসভার সাংসদ মহুয়া মৈত্র ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ‘‘কোনও পড়ুয়া সামাজিক মাধ্যমে ব্যক্তিগতভাবে কি পোস্ট করলো তাতে সরকারের নাক গলানোর অধিকার নেই। দীর্ঘদিন ধরে তথ্য সুরক্ষা আইন প্রণনয়ের দাবি জানানো হচ্ছে। তা নিয়ে নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা নেই। অথচ, কারও সঙ্গে কোনও আলোচনা না করে আচমকা একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়া হল এবং তা চাপিয়েও দেওয়া হল! এটা চলতে পারে না।''
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ সুজিত রায় মনে করছেন, এমন একটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আরও ভাবনাচিন্তার প্রয়োজন ছিল। তাঁর কথায়, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার তাদের উদ্দেশ্যর কথা বলেছে। আপাত দৃষ্টিতে সত্যি ভালো উদ্যোগ। কিন্তু, এর অপব্যবহার হবে না, তার গ্যারান্টি কোথায়? রাজনীতি, অর্থনীতি ইত্যাদি বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের ভিন্ন মত থাকতে পারে। সেটা তাঁদের স্বাধীনতা। সরকারের এই নির্দেশে ছাত্রছাত্রীদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হতে পারে।''
যদিও মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের সচিব আর সুব্রহ্মণ্যম সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘‘এই বিষয়ে অযথা আতঙ্ক ছাড়ানোর প্রয়োজন নেই। এটি একটি শুভ উদ্যোগ। ছাত্রছাত্রীরা একে-অপরকে উৎসাহিত করবেন। ভয়ের কোনও কারণ দেখছি না।''