শিক্ষার্থীদের গাড়ি তৈরির প্রতিযোগিতা
বাংলাদেশের ছয়টি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা একটি প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পরিবেশবান্ধব গাড়ি তৈরি করেছিলেন৷ গত বছর প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয়৷
পরিবেশবান্ধব গাড়ির প্রতিযোগিতা
২০১৩ সালের মার্চ মাসে ঢাকায় ‘ইকোরান বাংলাদেশ ২০১৩’ নামে পরিবেশবান্ধব গাড়ি তৈরির একটি প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়৷ জাপান সরকারের উন্নয়ন সহায়তা সংস্থা জাইকা ও বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতায় ছয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে৷
জাপানের প্রতিযোগিতা ইকোরান
১৯৮৩ সাল থেকে জাপানে ‘ইকোরান’-এর আয়োজন হয়ে আসছে৷ এই প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য এমন গাড়ি তৈরির উপায় বের করা যেটা কম তেল খরচ করে বেশি দূর যেতে পারবে৷ উপরের ছবিটি বাংলাদেশে ইকোরান প্রতিযোগিতায় উদ্বোধনীর৷
চার চাকার সেরা ‘নাইপটা ৮’
প্রতিযোগিতার চার চাকা বিভাগে সেরা হয় বুয়েটের নাইপটা ৮৷ প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে নিজেদের উদ্ভাবিত গাড়ি সম্পর্কে তাউসিফ বলেন, ‘‘গাড়ির বডি তৈরি করা হয়েছে স্টেইনলেস স্টিলের ফাঁপা পাইপ দিয়ে৷ চেসিস তৈরিতে অ্যালুমিনিয়ামের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে গ্যালভানাইজিং মাইল্ড স্টিল৷ আর ইঞ্জিন হিসেবে যেহেতু ব্যবহার করা হয়েছে মোটরবাইকের ইঞ্জিন, তাই জ্বালানি খরচ হবে কম৷’’
তিন চাকার সেরা ‘মার্কাস’
তিন চাকা বিভাগে সেরা হয় বুয়েটেরই মার্কাস৷ এই দলের সদস্য মাজেদুর রহমান মাসুম ‘বুয়েট টেকনোলজি রিভিউ’-তে একটি লেখায় জানান, ‘‘মার্কাসের মেইন ফ্রেম বানানো হয়েছে খুবই হালকা এসএস স্টিল এবং অ্যালুমিনিয়ামের ফাঁপা কাঠামো ব্যবহার করে৷ ইঞ্জিন হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে ওয়ালটনের ১০০সিসি ইঞ্জিন৷ গাড়ির বাহ্যিক কাঠামো বানানো হয়েছিল রেক্সিন এবং এসএস ফাঁপা পাইপের মাধ্যমে৷’’
অন্যান্য বিজয়ী
চার চাকা বিভাগে দ্বিতীয় হয়েছিল চুয়েটের ‘প্রোটোটাইপ’ আর তৃতীয় স্থান ছিল রুয়েটের ‘গ্রাফিঞ্জ’-এর৷ তিন চাকা বিভাগে দ্বিতীয় হয়েছিল রুয়েটের ‘অ্যাভেঞ্জারস’ আর তৃতীয় স্থান অধিকার করেছিল চুয়েটের ‘এক্সআর ওয়াগন’৷ বুয়েট, চুয়েট, রুয়েট ছাড়াও কুয়েট, এমআইএসটি এবং আইইউটি থেকে আসা দলও প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল৷
শিল্প গড়ে ওঠেনি
বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. এহসান ডয়চে ভেলেকে বলেন, প্রতিযোগিতা শেষ হওয়ার পর কিছু স্থানীয় কোম্পানি গাড়িগুলোকে বাস্তবে রূপ দেয়ার আগ্রহ দেখিয়েছিল৷ কিন্তু পরে আর সেই আলোচনা এগোয়নি৷ এর কারণ সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমাদের অটোমোবাইল শিল্প আসলে এখনো গাড়ি তৈরির মতো অবস্থায় পৌঁছায়নি৷’’
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
ড. মো. এহসান জানান, আগামী বছরের শুরুতে আবারও ইকোরান প্রতিযোগিতা আয়োজনের পরিকল্পনা আছে৷ তবে তহবিল সংগ্রহ করা না গেলে সেটা সম্ভব নাও হতে পারে বলেও জানান তিনি৷