শহরে হঠাৎ বুনো আগন্তুক
জার্মানিতে বন্য প্রাণী দেখতে সব সময় জঙ্গল বা চিড়িয়াখানায় যেতে হয় না৷ কখনো কখনো হঠাৎ করেই শহরের ঘর-বাড়ি বা অফিসে ঢুকে পড়ে বুনো হরিণ, ভালুক, ষাড়, শূকর, রেকুন কিংবা শিয়াল৷ ছবিঘরে দেখুন তেমন কিছু অনাহূত অতিথির ছবি৷
অফিসে বুনো হরিণ
কদিন আগে জার্মানির ড্রেসডেন শহরের একটি অফিসে টুক করে ঢুকে পড়েছিল বিশাল এক এল্ক৷ ৮০০ কিলোগ্রাম ওজনের এই বুনো হরিণটি কাঁচের দরজা দিয়ে কখন, কীভাবে ঢুকল কেউ বুঝতেই পারেনি৷ একটা জানালার পাশে গিয়ে বসার পর নজরে পড়ল সবার৷ লাঞ্চের সময় যখন সবাই ক্যান্টিনে খেতে যাবে, তখন কী ভেবে যেন উঠে গিয়ে দরজা আগলে দাঁড়িয়েছিল হরিণটি৷
বুনো ষাঁড়ের বনে ফেরা
ছবির এই ষাঁড়টিও হঠাৎ জঙ্গল ছেড়ে চলে এসেছিল শহরে৷ এসে আর যাওয়ার নাম নেই৷ বুনো ষাঁড় বলে কথা, কখন কাকে আক্রমণ করে বসে তার ঠিক নেই৷ তাই পুলিশ আর স্থানীয় চিড়িয়াখানার কর্মীদের ডাকতে হলো৷ ওষুধ মাখানো দুটি তীর ছুড়ে অজ্ঞান করা হলো ষাঁড়টিকে৷ তারপর কন্টেইনারে ঢুকিয়ে তাকে বনে ফেরত পাঠিয়ে তবেই হাঁফ ছেড়ে বাঁচল সবাই৷
রেকুনের আগমন
একসময় জার্মানিতে কোনো রেকুন ছিল না৷ ১৯৩৪ সালে উত্তর অ্যামেরিকা থেকে একটি রেকুন এনে ছেড়ে দেয়া হয় কাসেল শহরের কাছের বনে৷ এক থেকে বাড়তে বাড়তে জার্মানিতে এখন কয়েক লক্ষ রেকুন৷ ছবির এই রেকুনটির মতো এরা প্রায়ই ঢুকে পড়ে শহরে৷
বন্য শূকর! ঘণ্টা বাজাও!!
সব বন্য প্রাণীকে খোলামেলা জায়গায় দেখলে জার্মানরা খুশি হয় না৷ বিশেষ করে বুনো শূকর লোকালয়ে ঢুকে পড়লে তো নয়ই৷ এরা যেখানেই যায় মাটি খুড়তে শুরু করে৷ দেখতে দেখতেই তছনছ হয়ে যায় বাড়ির পাশের সাজানো বাগান৷ গত কুড়ি বছর ধরে বুনো শূকরের সংখ্যা বাড়ছে হু হু করে৷ এখন নাকি রাজধানী বার্লিনেই আছে প্রায় ১০ হাজার বুনো শূকর৷
মানুষও দায়ী...
লোকালয়ের উষ্ণতা গায়ে মাখতেই হয়ত কখনো কখনো দু-একটা বন্য প্রাণী শহরমুখী হয়৷ এছাড়া শিকারীদের হাত থেকে রেহাই পেতেও শহরের দিকে পা বাড়ায় হরিণ, ভালুক, শূকর, রেকুন বা শিয়ালরা৷ আরেকটা বড় কারণ, জঙ্গল কেটে চাষাবাদ শুরু করা৷ পছন্দের খাবার না পেলে, মাথার ওপর গাছের ছায়া কমতে থাকলে বুনো প্রাণীরা বন না ছেড়ে কী করবে!
‘ব্রুনো দ্য বেয়ার’
২০০৬ সালে আল্পস থেকে বাভারিয়া রাজ্যে ঢুকে পড়েছিল একটা ভালুক৷ সাত সপ্তাহ ধরে চলে তার ঘোরাঘুরি আর মারামারি৷ বেশ কিছু ভেড়া, পোষা খরগোশ আর গিনিপিগ মারার পর অবশ্য তাকেও মরতে হয়৷ জনমনে স্বস্তি ফেরাতে গুলি করা হয় ‘ব্রুনো দ্য বেয়ার’-কে৷ মিউনিখের একটি মিউজিয়ামে ‘স্টাফ’ করে, অর্থাৎ শুধু গায়ের চামড়াটা রেখে ভেতরে খড়কুটো ঢুকিয়ে প্রদর্শনীর জন্য রাখা হয়েছে তাকে৷