লোকার্নো চলচ্চিত্র উৎসবের সেরা চমক
আগস্ট মাসের তিন থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত লোকার্নো চলচ্চিত্র উৎসবে অভিবাসন, উপনিবেশবাদ, জেন্ডার আইডেন্টিটি ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়ের উপর নজর দেওয়া হচ্ছে৷
‘কুকুর ও ইটালীয়দের প্রবেশ নিষেধ’
বিংশ শতাব্দীর শুরুতে ইটালির উত্তরে উগেতো পরিবার বিদেশে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেছিলেন৷ এক অ্যানিমেশন চলচ্চিত্রে ফ্রান্সে লুইজি উগেটোর নতুন জীবন তুলে ধরা হয়েছে৷ তাঁর পৌত্র আল্যাঁ উগেতো পরিচালক হিসেবে সেই সময়কাল নতুন করে আবিষ্কার করেছেন৷ পিতামহী সেসিরার সঙ্গে কথা বলে চলচ্চিত্রের রসদ সংগ্রহ করেছেন তিনি৷
‘টমী গানস’
অ্যাঙ্গোলার জাতীয়বাদী গোষ্ঠীগুলি নিজেদের এলাকা দখল করতে শুরু করায় ১৯৭৪ সালে পোর্তুগিজ ও তাঁদের বংশধররা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়৷ সেই যুগে এক আদিবাসী নারী এক পোর্তুগিজ সৈন্যের সান্নিধ্যে এসে প্রেম ও মৃত্যুর স্বাদ পায়৷ পরিচালক কার্লোস কোঁসেইসাঁও বলেন, ‘‘চলচ্চিত্রটি ইতিহাস, যুদ্ধ ও ভয় সম্পর্কে ভাবায়৷’’
‘ম্যাটার আউট অফ প্লেস’
প্রত্যন্ত এলাকায় আবর্জনা এবং যে সব মানুষ সেই জঞ্জাল সাফাই করেন, তাঁরাই ‘ম্যাটার আউট অফ প্লেস’ নামের চলচ্চিত্রের বিষয়৷ বিশ্বজুড়ে আবর্জনার বণ্টন এবং ময়লা কুড়ানি ও জঞ্জাল ব্যবস্থাপনা কর্মীদের অসাধারণ কাজের স্বীকৃতি দিচ্ছে এই চলচ্চিত্র৷ পরিচালক নিকোলাউস গাইয়ারহাল্টার বলেন, ‘‘আবর্জনা মানবজাতির উন্নয়নের প্রতীক৷ প্রযুক্তির অগ্রগতির তুলনায় অনেক ধীর গতিতে চলছে সেই উন্নয়ন৷’’
‘আরিয়িপ্পু’ বা ঘোষণা
লোকার্নো উৎসবে মালায়লম ভাষার প্রথম চলচ্চিত্র হিসেবে ‘আরিয়িপ্পু’ হরিশ ও রেশমির কাহিনি তুলে ধরেছে৷ কেরালার এই অভিবাসী দম্পতি দিল্লির এক গ্লাভস কোম্পানিতে কাজ করেন৷ কোভিডের কারণে দেশে লকডাউন ঘোষণার সময় কারখানার শ্রমিকদের হাতে পুরানো একটি ভিডিও এসে পড়ে৷ ফলে সেই দম্পতির চাকরি ও দাম্পত্যজীবন হুমকির মুখে পড়ে৷
‘সার্মন টু দি ফিশ’
যুদ্ধ থেকে ঘরে ফিরে ডাভুদ দেখে, তার গ্রামের সবাই অদ্ভুদ এক রোগে আক্রান্ত হয়েছে এবং তাদের শরীর পচে গেছে৷ একমাত্র মানুষ হিসেবে প্রাণে বেঁচে গেলেও তার বোনের শরীরেও ধীরে পচন ঘটছে৷ আজেরবাইজানের পরিচালক হিলাল বাইদারভের চলচ্চিত্রের প্রধান চরিত্র দাভুদের মনে সৈন্য হিসেবে নিজের স্মৃতি নিয়ে টানাপড়েন চলছে৷ তার মনে প্রশ্ন জাগছে – বেঁচা যাওয়া কি বেঁচে থাকার সমান?
‘বিফোর আই চেঞ্জ মাই মাইন্ড’
১৯৮৭ সালে এক স্কুলে রবিনকে ঘিরে বাকি বাচ্চাদের মনে সংশয় দূর হচ্ছে না৷ সে ছেলে না মেয়ে, তা বোঝা যাচ্ছে না৷ স্কুলের গুণ্ডা প্রকৃতির এক বাচ্চার সঙ্গে রবিনের জটিল সম্পর্ক গড়ে উঠেছে৷ সে নিজেকে মানিয়ে নেবার চেষ্টা করছে৷ পরিচালক ট্রেভর অ্যান্ডারসন বলেন, ‘‘আশির দশকে ক্যানাডায় টিনএজার হিসেবে আমি ছেলে না মেয়ে, সেই প্রশ্নের মুখে পড়তাম৷ রবিনের মতো আমিও যদি সেই প্রশ্ন ঝুলিয়ে রাখতে পারতাম!’’
‘পিয়াফ’
জারার নার্ভাস ব্রেকডাউনের পর এফা ফোলি আর্টিস্ট হিসেবে তার বোনের চাকরি গ্রহণ করতে বাধ্য হয়৷ এক বিজ্ঞাপনের জন্য ঘোড়ার শব্দ সৃষ্টি করতে হিমসিম খেয়ে এফা দেথে তার শরীরে ঘোড়ার লেজ গজাচ্ছে৷ সেই বৈশিষ্ট্যকে ক্ষমতা হিসেবে বিবেচনা করে এফা এক উদ্ভিদবিজ্ঞানীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে৷ জার্মানির চলচ্চিত্র পরিচালক আন ওরেন ‘পিয়াফ’ চলচ্চিত্রে বিষয় হিসেবে নিয়ন্ত্রণ, জেন্ডার ও ছলনাকে প্রাধান্য দিয়েছেন৷