লেজার দিয়ে তৈরি হচ্ছে যন্ত্রাংশ
৪ অক্টোবর ২০১৩উপর থেকে ধাতুর গুঁড়া পড়ে, যা অত্যন্ত সূক্ষ্ম ও ক্ষুদ্র৷ ধাতুর পাউডার এমন এক প্লান্টে ভরে দিলে তারপর কী তৈরি করতে হবে, তা স্থির করা যায়৷ যেমন কাজের যন্ত্রপাতি অথবা অন্য যন্ত্রের অংশবিশেষ৷ যেমন প্লাস্টিকের অংশ তৈরি করার ছাঁচ৷ প্রায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তা প্রস্তুত হয়ে যাবে৷ একটার পর একটা স্তরে ধাতু গলানো হয়৷ লেজারের নিখুঁত চালনায় পাউডার ধীরে ধীরে নির্দিষ্ট রূপ পায়৷ পড়ে থাকা পাউডার-ও আবার নতুন করে কাজে লাগানো যায়৷ তৈরির পর যন্ত্রাংশটিকে ক্রেতার জন্য প্রস্তুত করা হয়৷ তারপর সেটি দিয়ে প্লাস্টিকের বোতলের ছিপি তৈরি হবে৷
‘টুলক্রাফট' কোম্পানির প্রধান ক্রিস্টফ হাউক জানালেন, যে সব ক্ষেত্রে সাধারণ পদ্ধতি কাজ করে না, সেখানে তাঁরা লেজারের মাধ্যমে ধাতু গলানোর এই ‘লেজার মেল্টিং' পদ্ধতি প্রয়োগ করেন৷ যেমন একটি যন্ত্রাংশ, যেটি কাজের সময় গরম হয়ে ওঠে না৷ হাউক বলেন, ‘‘বাইরে থেকে দেখলে সাধারণ প্লান্ট মনে হলেও ভেতরে ঠাণ্ডা রাখার জটিল পদ্ধতি রয়েছে৷ এটা দিয়ে এমন সব জ্যামিতিক ফর্ম তৈরি করা যায়, যা এতকাল অন্য কোনো প্রযুক্তির মাধ্যমে সম্ভব ছিল না৷''
অর্থাৎ নতুন ফর্ম বা আকার তৈরি করতে পারায় নতুন সব সম্ভাবনার দরজা খুলে যাচ্ছে৷ ফলে ধাতুর ব্লক থেকে মিলিং মেশিন কী তৈরি করবে, তার উপর আর নির্ভর করতে হচ্ছে না৷ কাজেই ‘টুলক্রাফট' কোম্পানির উৎপাদন প্রক্রিয়ার গুরুত্ব বাড়ছে, আরও নতুন ধাতু গলানোর যন্ত্র আনতে হচ্ছে৷ এক একটির দাম কমপক্ষে ৪ লাখ ইউরো, বাড়তি গুণাগুণ থাকলে দাম দ্বিগুণও হতে পারে৷ ক্রিস্টফ হাউক বললেন, ‘‘আমরা আপাতত প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছি৷ পরের যন্ত্রটি আসতে ৩ থেকে ৬ মাস সময় লাগবে৷ আমরা এই প্রযুক্তিতে বিশ্বাস করি৷ তাই কাজ চলতেই থাকবে৷''
বলা বাহুল্য, লেজার মেল্টিং যন্ত্র প্রস্তুতকারী কোম্পানির প্রতিনিধি টর্স্টেন হ্যার্বার্ট এমন কথা শুনে খুশি৷ তিনি জানালেন, ২০১২ সালে ৫০টি যন্ত্র বিক্রির রেকর্ড করেছে কোম্পানি৷ কারা আগ্রহ দেখাচ্ছে – এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বললেন, বিমান চলাচল, চিকিৎসা ক্ষেত্র, দাঁতের ডাক্তার, গাড়ি তৈরির কোম্পানির কাছ থেকেই বেশি বায়না আসছে৷
অনেক শিল্পক্ষেত্রই লেজার দিয়ে ধাতুর গুঁড়া গলানোর প্রক্রিয়ার দৌলতে নতুন ফর্ম নিয়ে পরীক্ষা চালাচ্ছে৷ কোম্পানির প্রধান আরও সম্প্রসারণের কথা ভাবছেন৷ হাউক বললেন, ‘‘এখানে কারখানা আরও বাড়ানো হবে৷ ধাতু ও কাচ দিয়ে নতুন এই অংশ তৈরি হবে৷ লেজার পদ্ধতিতে গলানোর কাজে আরও শ্রমিক নিয়োগ করা হবে৷ আরও লেজার মেল্টিং প্লান্ট কিনে এখানে বসানো হবে৷''
বিনিয়োগের অঙ্ক যে কয়েক লক্ষ ইউরো হবে, সে কথাও জানিয়ে দিলেন তিনি৷ নতুন প্রযুক্তিতে ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ ইউরো ঢালা হচ্ছে৷ জার্মান অর্থনীতি জগতে লেজার মেল্টিং প্রযুক্তির গুরুত্ব বাড়ছে৷