লুণ্ঠিত নিদর্শন জার্মানির কাছ থেকে ‘ধার’ নিলো নামিবিয়া
ঔপনিবেশিক শাসনামলে ইউরোপের আরো কয়েকটি দেশের মতো জার্মানিতেও আফ্রিকা থেকে লুটে আনা হয়েছিল নানা ধরনের শিল্পকর্ম এবং প্রাচীন নিদর্শন৷ নামিবিয়া তা থেকে কিছু ফেরত পাচ্ছে, তবে পুরোপুরি নয়, ‘ধার’ হিসেবে! ছবিঘরে বিস্তারিত...
দাবি আদায় শুরু
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা যায়, উপনিবেশ আমলে আফ্রিকার ৯০ ভাগ শিল্পকর্মই লুট করেছিল কিছু দেশ৷ নামিবিয়ার দাবির মুখে বার্লিনের এথনোলজিক্যাল মিউজিয়াম থেকে ২৩টি ঐতিহাসিক নিদর্শন ফেরত দিয়েছে জার্মান সরকার৷ নামিবিয়ার জাদুঘর সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় সংস্থা এমএএন-এর চেয়ারপার্সন নেহাও কাউটোনডোকয়া জানান, ১৮৬০ থেকে ১৮৯০ সালের মধ্যে লুটে নেয়া এই ২৩টি নিদর্শন দ্বিপাক্ষিক এক প্রকল্পের আওতায় হস্তান্তর করা হয়েছে৷
তালিকায় যা আছে
এমএএন-এর চেয়ারপারসন নেহাও কাউটোনডোকয়া জানান, যে ২৩টি নিদর্শন নামিবিয়া ফেরত পাচ্ছে তার বেশির ভাগই সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের জন্য অপরিহার্য পণ্য৷ গয়না, কাপড়, এমনকি বাচ্চাদের খেলার পুতুলও আছে সেই তালিকায়৷
তালিকা প্রণয়ন
লুণ্ঠিত কোন কোন নিদর্শন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জার্মানি থেকে ফিরিয়ে নেয়া হবে তার তালিকা প্রণয়নে একটা কমিটি গঠন করেছিল নামিবিয়া সরকার৷ শিল্পী, গবেষক এবং জাদুঘর বিশেষজ্ঞসহ সমাজের নানা শ্রেণির মানুষ ছিলেন সেই কমিটিতে৷ ২০১৯ থেকে ২০২০- এই দুই বছরে তালিকাটি তৈরি করা হয়৷
বাইবেল এবং চাবুক দিয়ে শুরু
২০১৯ সালে নামিবিয়ার অন্যতম জাতীয় নায়ক হেন্ড্রিক উইটবুয়ির ব্যবহার করা বাইবেল এবং চাবুক দিয়ে বার্লিনের এথনোলজিক্যাল মিউজিয়াম থেকে ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শনগুলো ফিরিয়ে আনা শুরু করা হয়৷
‘চিরস্থায়ী ধার’
নামিবিয়ার আগ্রহ এবং তাড়া বেশি থাকায় প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শেষ হবার আগেই ২৩টি নিদর্শন ফিরিয়ে দিয়েছে জার্মানি৷ সেগুলো ইতিমধ্যে পৌঁছেও গেছে নামিবিয়ার জাতীয় জাদুঘরে৷ কিন্তু তারপরও নিদর্শনগুলো নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে তুমুল বিতর্ক৷ জার্মানি কিন্তু নিদর্শনগুলো স্থায়ীভাবে দেয়নি, দিয়েছে ধার হিসেবে৷ নামিবিয়া থেকে লুট করে নেয়া জিনিস নামিবিয়াকে ধার দেয়া? এর যুক্তি আসলেই বুঝতে পারছেন না অনেকে৷
ধার-রহস্য
প্রুশিয়ান কালচারেল ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এড়াতে ২৩টি নিদর্শন ফিরিয়ে দেয়াকে কাগজে-কলমে ‘ধার’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে৷ এভাবে না পাঠালে অনেক বেশি সময় লাগতো দাবি করে প্রুশিয়ান কালচারেল ফাউন্ডেশন বলেছে, ‘স্থায়ী ধার’ মানেই স্থায়ীভাবে হস্তান্তর, কিছু লোক শুধু ‘ধার’ শব্দটি দেখে সমালোচনামুখর হচ্ছেন, অথচ ‘স্থায়ী’ শব্দটির গুরুত্ব তারা বিবেচনা করছেন না৷