লিব্রা-র বিরোধিতায় জি-৭
১৮ জুলাই ২০১৯২০২০ সালের মধ্যে লিব্রা নামে ক্রিপ্টোকারেন্সি বাজারে আনার হবে বলে গত জুনে ঘোষণা দিয়েছিল ফেসবুক৷ বুধবার ফ্রান্সে জি-৭ দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকের পর নিজেদের এ অবস্থান জানায়৷
এর আগে লিব্রা আনার উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ও অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মেনুশিন৷ যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির সঙ্গে জি-৭ মোর্চায় ক্যানাডা, ফ্রান্স, ইটালি, জাপান ও যুক্তরাজ্য রয়েছে৷
প্যারিসের জি-৭ অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকে থাকা এক কর্মকর্তার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘‘লিব্রা নিয়ে আমাদের খুবই গঠনমূলক ও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে৷ আলোচনার বিষয়গুলো কার্যকরে ঐকমত্যও হয়েছে৷ অংশগ্রহণকারীদের সবাই বর্তমান পরিস্থিতি ও কার্যকর পদক্ষেপের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন৷''
লিব্রা আনার আগেই রিগুলেটরি বিষয়ে কার্যকর সমাধান বের করার উপর জোর দিয়েছেন জি-৭ অর্থমন্ত্রীরা৷ জি-৭ দেশগুলোর সঙ্গে অন্যান্য দেশকে একীভূত করে বড় পরিসরের ট্রাস্কফোর্স করার কথাও উঠে এসেছে বৈঠকে৷
জুন মাসের ১৮ তারিখ প্রচলিত ব্যাংকিংয়ের বাইরে গিয়ে ‘লিব্রা' নামে ক্রিপটোকারেন্সি আনার ঘোষণা দেয় ফেসবুক৷
সোমবার লিব্রা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এক টুইটে মার্কিন অর্থমন্ত্রী মেনুশিন বলেন, ডিজিটাল মুদ্রাটি ‘‘অ্যামেরিকার অর্থ ব্যবস্থায় প্রবেশ করার আগে উচ্চমান রক্ষার বিষয়ে সন্তুষ্ট করতে হবে৷’’
এর আগে ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা কাণ্ডে গ্রাহকের তথ্য বিক্রির কারণে ব্যাপক সমালোচনা ও প্রতিবাদের মুখে পড়ে ফেসবুক৷ এ কারণে তাদের কাছে গ্রাহকের আর্থিক লেনদেনের ক্ষমতা ও তথ্য তুলে দেওয়ার ব্যাপারে নারাজ যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট ব্যাংকিং কমিটি৷
যা বলছে জার্মানি
ফেসবুকের মুদ্রা আনার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউরোপের বৃহৎ অর্থনীতির দেশ জার্মানি৷ ‘‘মুদ্রা ছাপানোর কাজ কোনোভাবে একটি প্রাইভেট কোম্পানির হাতে যেতে পারে না৷ কারণ কোনো একটি সার্বভৌম দেশের মূল কাজের একটি,‘‘ বলেছেন জার্মানির অর্থমন্ত্রী ওলাফ শোলৎস৷
অভ্যন্তরীণ মন্ত্রণালয়ের একটি দলিল উদ্ধৃত করে জার্মানির সংবাদপত্র বিল্ড লিখেছে, লিব্রা যেন ইউরোর জাতীয় মুদ্রাগুলোর বিকল্প না হয়ে উঠে, সেজন্য কাজ করে যাচ্ছে জার্মান সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক৷ সন্ত্রাসে অর্থায়ন ও মুদ্রা পাচারে ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবহার হতে পারে বলেও সতর্ক জার্মান সরকার৷
ক্রিপ্টোকারেন্সি
২০০৮ সালে বিশ্বব্যাপী যে আর্থিক মন্দার প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে পরিচিত ক্রিপ্টোকারেন্সি ‘বিটকয়েন' এর যাত্রা শুরু হয়েছিল৷ প্রচলিত মুদ্রাব্যবস্থার প্রতি মানুষের বিশ্বাসে ফাটল ধরায়, সেটাকে পুঁজি করে ডিজিটাল এই মুদ্রা চালু হয়৷
পরিচয় গোপন রেখে লেনদন করতে পারায় মানি লন্ডারিংসহ অবৈধ পণ্য কেনাবেচার ক্ষেত্রে এটি ব্যবহৃত হয়৷ এছাড়া, ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগকারীরা লাখ লাখ ডলার খুইয়েছেন হ্যাকারদের কবলে পড়ে৷
বিটকয়েনের সাফল্য অনুপ্রাণিত হয়ে আরও প্রায় এক হাজারের বেশি ডিজিটাল মুদ্রার আবির্ভাব ঘটেছে৷ এর মধ্যে সফল হওয়া কয়েকটি হচ্ছে ইথেরিয়াম, জেডক্যাশ, বিটকয়েন ক্যাশ, রিপল ও লাইটকয়েন৷ ২০১৭ সালে হঠাৎ করে বিটকয়েনের অস্বাভাবিক লেনদেন ও মূল্যবৃদ্ধি বিশ্বব্যাপী ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছিল৷
এমবি/কেএম (এএফপি, রয়টার্স)