1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

লা আকুইলা নিয়ে ছবি প্রশংসিত হল কান-এ

১৫ মে ২০১০

ইটালির ভূমিকম্প নিয়ে তৈরি ছবি কান চলচ্চিত্র উৎসবে দারুণভাবে প্রশংসিত হল৷ সাবিনা গুজান্টি নির্দেশিত এই ছবিতে সাফ বোঝা গেছে, এই ভূমিকম্পকে নিজের ভাবমূর্তি উন্নত করতে ব্যবহার করেছিলেন বার্লুসকোনি৷

https://p.dw.com/p/NOcq
লা আকুইলার ধ্বংসছবির একাংশছবি: AP

কথায় বলে, ‘তুমি যাও বঙ্গে, কপাল যায় সঙ্গে!' এই কথাটা ইটালির প্রধানমন্ত্রীর ক্ষেত্রে দিব্যি খেটে যায়৷ ইটালির লা আকুইলার ভয়াবহ ভূমিকম্পের কথা নিশ্চয়ই ভুলে যাননি৷ সেই ভূমিকম্পে প্রাণ হারান ৩০০ জন৷ সর্বস্বান্ত হয়ে গেছেন বহু মানুষ৷ ভূমিকম্প যে সময় হয়েছিল, তখনই আবার ইটালির প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বার্লুসকোনির একের পর এক যৌন কেচ্ছা নিয়ে তোলপাড় চলছিল চারদিকে৷ কিন্তু, ভূমিকম্পের পর বার্লুসকোনি সেই প্রাকৃতিক দুর্ঘটনায় সরকারি সহায়তাকে নিজের ভাবমূর্তি ঠিকঠাক করতে ব্যবহার করেছেন, উঠেছিল এমন অভিযোগ৷

তো, ইটালিরই তরুণী, চলচ্চিত্র নির্দেশক সাবিনা গুজান্টি তাঁর প্রথম ছবিটি ওই ভূমিকম্প এবং বার্লুসকোনিকেই বা ইটালির সরকারকে বিষয় করে বানিয়ে ফেলেছেন৷ ছবির নাম, ‘লা আকুইলা আর্থকোয়েক'৷ নব্বই মিনিটের এই ছবিটিকে আমন্ত্রণ জানায় চলতি কান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উত্সব৷ বলা বাহুল্য, সরকার বিরোধী এই ছবিকে উত্সবে জায়গা দেওয়ায় ক্ষিপ্ত বার্লুকোনি প্রশাসনের সংস্কৃতি মন্ত্রক কান উত্সবকেই বর্জন করার ঘোষণা দেয়৷ ইটালির সংস্কৃতিমন্ত্রী সান্ড্রো বন্ডি এ প্রসঙ্গে বলেন, ছবিটি অপপ্রচারমূলক৷ সত্যের অপলাপে ভরা৷ এই ছবিতে ইটালিকে আর তার মানুষকে অপমান করা হয়েছে৷

L'Aquila Erbeben
বার্লুসকোনি গিয়েছিলেন পরিদর্শনেছবি: dpa

সংস্কৃতি মন্ত্রীর এই সরকারি মন্তব্য করা ছাড়া অন্য উপায়ও ছিল না৷ কারণ, বার্লুসকোনি সরকার লা আকুইলা-র দুর্গতদের জন্য তাদের কাজকে এক বিশাল সাফল্য বলে দাবি করেছে৷ কিন্তু, সাবিনা গুজান্টি তাঁর ছবিতে এই বার্লুসকোনিকেই চিত্রায়িত করেছেন একজন রক্তচোষা ভ্যাম্পায়ার হিসেবে৷ যে রক্তচোষা লা আকুইলার অসহায় ভূমিকম্প দুর্গত মানুষদের রক্ত চুষে খাচ্ছে৷ অবশ্যই প্রতিকী অর্থে৷

লা আকুইলা শহরটা এখন একটা ভুতুড়ে শহর৷ দেখিয়েছে সাবিনার ছবি৷সেখানকার বাসিন্দাদের পুনর্বাসনে যে আদৌ প্রায় কিছুই করেনি ইটালির সরকার, তাও স্পষ্ট বোঝা গেছে ছবি দেখে৷ ফলে, কান চলচ্চিত্র উত্সবে এ ছবি শুক্রবার দেখানোর পর বিপুল সম্বর্দ্ধনা পেয়েছেন পরিচালিকা সাবিনা৷ পরে তিনি বলেছেন, সরকারের বিরুদ্ধে এইভাবে একটা ছবি নিয়ে রুখে দাঁড়াতে রীতিমত সাহসের পরিচয় দিতে হয়েছে তাঁকে৷ কিন্তু, এখন যখন তাঁর কাজ প্রশংসিত হয়েছে, সেটাই নিজের কাছে গর্বের বিষয় তাঁর৷ সেটা দেখে ভালোও লাগছে অবশ্যই৷

অতএব একটা ছবিতেই গোটা বিশ্ব জেনে গেল এবার, বার্লুসকোনির জমানা কীরকম চলছে ইটালিতে৷ কেচ্ছা চাপা দিতে তিনি কী খেলা খেলেছিলেন, তাও প্রমাণিত৷ অতএব, আরও একবার ‘বেচারা বার্লুসকোনি' ছাড়া আর কিই বা মন্তব্য করা যায় এই ঘটনার পর?

প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পাদনা: রিয়াজুল ইসলাম