লাল মরিচের সারিয়াকান্দি
বন্যা আর নদী ভাঙনের কারণে বগুড়ার সারিয়াকান্দির কৃষকরা একসময় দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন৷ তবে গত কয়েক বছর ধরে শুষ্ক মৌসুমে লাল মরিচের চাষে সাফল্য পেয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন তাঁরা৷
শতাধিক গ্রামে
সারিয়াকান্দির কাজলা গ্রামের একটি ক্ষেত৷ এছাড়া যমুনার চরের ডাকাত মারা, বেহাইল, মাঝবাড়ি, চালুয়াবাড়ী, হাটশেরপুর, কর্ণিবাড়ী, বোহাইল ও সদর ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক গ্রামে এ বছর প্রচুর মরিচের চাষ হয়েছে৷
মরিচ তুলছেন কৃষক
যমুনার বেহাইল চরে ক্ষেত থেকে লাল মরিচ তুলছেন কৃষক৷ কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এ বছর উপজেলার প্রায় ৪,২৫০ হেক্টর জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছে৷
বিঘা প্রতি ২৫ মন
ক্ষেত থেকে মরিচ তুলে এনে চলছে বাছাই৷ এ বছর ফলন ভালো হওয়ায় বিঘা প্রতি ২৫ মনেরও বেশি মরিচ পেয়েছেন কৃষকরা৷
মরিচ শুকানো
টিনের চালে আর বাড়ির আঙিনায় শুকাতে দেয়া হচ্ছে মরিচ৷ শুকানো শেষে ধরণ ভেদে প্রতি মন মরিচ বিক্রি হবে ৪,০০০ থেকে ৪,৮০০ টাকা মন দরে৷
বাড়ি ছেড়ে চরে
বাড়ির আঙিনায় আর জায়গা নেই, তাই বাকি মরিচ শুকানোর জন্য যমুনার বিস্তীর্ণ চরকে বেছে নেয়া হয়েছে৷
অপরূপ দৃশ্য
সারিয়াকান্দির কালিতলায় যমুনার তীরের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে শুকাতে দেয়া লাল মরিচ৷ কালিতলা থেকে মথুরাপুর হয়ে প্রেম যমুনার ঘাট পর্যন্ত এরকম মন মাতানো দৃশ্য চোখে পড়বে৷
লাল-সবুজের খেলা
পুরো সারিয়াকান্দিকেই মনে হবে এক টুকরা লাল সবুজের বাংলাদেশ৷ এখানকার চাতালজুড়ে এখন মরিচ শুকানোর ধুম, পাশে বিস্তীর্ণ সবুজ বোরো ক্ষেত৷
অধিকাংশই নারী
সারিয়াকান্দির চাতালে শুকানো মরিচ থেকে ময়লা আবর্জনা বাছাই করছেন নারী শ্রমিকরা৷ এসব চাতালে কাজ করা শ্রমিকদের অধিকাংশই নারী৷
এখানেও বৈষম্য
সারিয়াকান্দির এসব চাতালে পুরুষ শ্রমিকদের সমান কাজ করলেও মজুরি বৈষম্যের শিকার নারীরা৷ এসব চাতালে একজন পুরুষ শ্রমিকের মজুরি প্রতিদিন ২০০ টাকা হলেও একই কাজ করে একজন নারী পান মাত্র ১৫০ টাকা৷
চূড়ান্ত বাছাই
সারিয়াকান্দির চাতালে মরিচ শুকানো শেষে চূড়ান্ত বাছাই করছেন শ্রমিকরা৷
দাম পায় না কৃষক
ভালো ফলন হলেও ভালো দাম পাচ্ছেন না অনেক কৃষক৷ তাঁরা অনেকটা ব্যাপারীদের কাছে জিম্মি৷ অভিযোগ আছে, চর থেকে ব্যাপারীরা কম দামে মরিচ কিনে নিয়ে এসে চড়া মুনাফায় বিক্রি করছেন বড় বড় মশলা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে৷
আছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি
মরিচ শুকানোর কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা কাজ করেন মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে৷ কোনো রকম মাস্ক ছাড়াই মরিচের ঝাঁঝের মধ্যে সারা দিন কাজ করায় অনেকেই শ্বাস-প্রশ্বাসের কষ্টে ভোগেন৷