লালবাগ কেল্লায় আবার দর্শণার্থীদের ভিড়
ছয় মাস বন্ধ থাকার পর গত ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে আবার খুলেছে লালবাগ কেল্লা৷ লকডাউনে ঘরবন্দি নগরবাসী বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে ভিড় করছেন ঐতিহ্যবাহী এ স্থাপনায়৷ তবে করোনা ভাইরাসের জন্য কর্তৃপক্ষ নিয়েছে বাড়তি সতর্কতা৷
বাড়ছে পর্যটকদের আনাগোনা
করোনার কারণে লালবাগের কেল্লা প্রায় ছয় মাস বন্ধ ছিল৷ লকডাউনে নগরবাসীও ছিল ঘরবন্দি৷ আবার খুলে দেওয়ায় ভ্রমণ পিপাসা মিটাতে অনেকেই যাচ্ছেন ঐতিহাসিক স্থাপনাটিতে৷ সপ্তাহান্তেই ভিড় থাকছে বেশি৷
থাকতে হবে মাস্ক
কেল্লায় প্রবেশ করতে হলে মাস্ক পরতে হবে, এমন নির্দেশ কর্তৃপক্ষের৷ এ আদেশ মানছেন অনেকেই৷ তবে প্রবেশের পর মাস্ক খুলে ফেলতেও দেখা গেছে৷
টিকেট
কেল্লায় প্রবেশে টিকেট কাটার নিয়ম থাকছে আগের মতোই৷ বাংলাদেশি দর্শনার্থীদের জন্য প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা, মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য ৫ টাকা, সার্কভুক্ত দেশের নাগরিকদের জন্য ১০০ টাকা, অন্যান্য দেশের দর্শনার্থী জন্য টিকেটের মূল্য ২০০ টাকা৷ ৫ বছরের কমবয়সি শিশুদের কোনো টিকেট লাগে না৷
ছয়দিন খোলা
আগের মতোই সপ্তাহে ছয়দিন পর্যটকদের জন্য খোলা থাকছে কেল্লাটি৷ সাপ্তাহিক বন্ধের দিন রবিবার৷
আইনত দণ্ডনীয়, তবুও ...
“পুরাকীর্তির দেয়ালে লেখা, পোস্টার লাগানো কিংবা ক্ষতিসাধন করা আইনত দণ্ডনীয়”—বিভিন্ন স্থানে আছে এমন বিজ্ঞপ্তি৷ তবে কেল্লা ঘুরে প্রায় সব জায়গাতেই এর ব্যত্যয় দেখা গেল৷ প্রায় প্রতিটি দেয়ালেই মোবাইল নম্বর, নামসহ বিভিন্ন লেখা চোখে পড়ে৷
অসচেতনতায় নষ্ট সৌন্দর্য
সম্প্রতি আবিষ্কৃত মুঘল আমলের দ্বৈত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার কূপগুলোতে পানির বোতল, চিপসের প্যাকেটসহ নানা আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখা গেল৷ অথচ এর পাশেই রয়েছে ময়লা ফেলার ব্যবস্থা৷ নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলার এ সচেতনতাটুকুর অভাবে সৌন্দর্য হারাচ্ছে তিনশ’ বছরের এ পুরাকীর্তি৷
ফোয়ারা আছে, পানি নেই
স্থাপনাগুলোর সৌন্দর্য বাড়াতে রয়েছে একাধিক ফোয়ারা৷ তবে নষ্ট হয়ে শুকিয়ে থাকা ফোয়ারাগুলো এখন বাচ্চাদের খেলার জায়গা৷
জাদুঘর
কেল্লায় রয়েছে একটি ঐতিহাসিক জাদুঘর৷ এখানে হাম্মামখানা, অস্ত্র, হাতে লেখা কোরান শরীফ, বিষ মেশানো তীর-ধনুক, সোনা-রুপার কয়েন, সুবেদার শায়েস্তা খাঁর চিত্রকর্ম ইত্যাদি রয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানায়৷ তবে এখানে ছবি তোলা বা ভিডিওচিত্র ধারণ করা নিষেধ৷
মসজিদে নামাজ
কেল্লার তিনটি স্থাপনার মধ্যে অন্যতম তিন গম্বুজওয়ালা দূর্গ মসজিদ বা শাহী মসজিদ৷ আয়তাকার এ মসজিদটির নির্মাণকাল ১৬৭৮-৭৯ খ্রিষ্টাব্দ৷ মুঘল আমলের মসজিদের আদর্শ উদাহরণ এই স্থাপনাটিতে এখনো মুসল্লিরা নামাজ পড়েন৷
পরী বিবির সমাধি
কেল্লার অন্যতম আকর্ষণ হলো পরী বিবির সমাধি৷ সুবেদার শায়েস্তা খাঁ ১৬৮৪ সালে তাঁর কন্যার স্মরণে মনোমুগ্ধকর এ স্থাপনাটি নির্মাণ করেন৷ চতুষ্কোণ এ স্থাপনাটির নয়টি কক্ষ মার্বেল পাথর, কষ্টি পাথর ও বিভিন্ন রংয়ের ফুল-পাতা সুশোভিত চাকচিক্যময় টালির সাহায্যে অলংকৃত করা৷ দর্শনার্থীদের অবশ্য এর ভেতরে ঢোকার অনুমতি নেই৷
কাগজের মুদ্রায় লালবাগ কেল্লা
কেল্লাটির বিভিন্ন স্থাপনার ছবি ছিল পুরোনো দিনের কাগজের নোটে৷ যেমন ১০০ টাকার কাগজের নোটে ছিল কেল্লার দক্ষিণ পাশের প্রধান ফটকের ছবি আর ২০ টাকার নোটে ছিল পরী বিবির সমাধির ছবি৷