লকডাউনে রোজা রাখার সুবিধা-অসুবিধা
জার্মানির জনসংখ্যার শতকরা ছয় ভাগ মুসলমান৷ লকডাউনের মধ্যে কিভাবে পবিত্র রমজান পালন করছেন তারা? ছবিঘরে বিস্তারিত...
রোজা সম্পর্কে জার্মানদের ধারণা
হুমা উল্লাহ নামের এক মুসলিম ছাত্রী বলেন, ‘‘আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ছাত্র-ছাত্রীই রোজা বা রমজান মাস সম্পর্কে বিশেষ কিছু জানে না৷ তাই প্রায়ই ‘পানিও খাও না?’, ‘এটা স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে না?’ ‘ তোমার বাবা-মা কি এসব মানতে বাধ্য করে?’-এমন প্রশ্ন শুনতে হয়৷’’
লকডাউনে ঘরে থাকার সুবিধা
পিউ রিসার্চের ২০১৬ সালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী জার্মানির মোট জনসংখ্যার শতকরা ছয় ভাগ মুসলমান৷এবার লকডাউনের কারণে তাদের কি রোজা রাখতে সমস্যা হচ্ছে? জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ভিসবাডেনের ছাত্রী হুমা (ওপরের ছবি) সবার আগে বললেন লকডাউনে রোজা রাখার সবচেয়ে বড় সুবিধার কথা, ‘‘ সারাদিন পরিবারের সঙ্গে থাকছি বলে রোজা রাখতে ভালো লাগছে৷ ঘরে সবার সঙ্গে উপবাস করা অনেক আরামদায়ক৷’’
স্কুলপড়ুয়াদের অসুবিধা
তবে এমিনের অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ অন্যরকম৷ মিউনিখের ১৬ বছর বয়সি এই স্কুল ছাত্রকে প্রতিদিন মাস্ক পরে স্কুলে যেতে হয়৷ সারাদিন মাস্ক পরে থাকা তার রোজার কষ্ট অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে, ‘‘মাস্ক পরে থাকলে এমনিতেই কেমন অস্বস্তি লাগে, এ অবস্থায় রোজা রাখাটা একটুও স্বস্তিদায়ক নয়৷’’
কষ্ট বাড়ায় কম্পিউটার
যারা পরিবারের সঙ্গে থাকতে পারছেন, তাদের জন্য রোজা রাখা আনন্দদায়ক হলেও কারো কারো বেশ অসুবিধাও হচ্ছে৷ ১৯ বছর বয়সি হুমা উল্লাহ বললেন সেই বিষয়ে, ‘‘ জুম কনফারেন্স বা লেখাপড়া কিংবা অ্যাসাইনমেন্টের জন্য টানা তিন-চার ঘণ্টা কম্পিউটারের দিকে তাকিয়ে থাকা সত্যিই খুব ক্লান্তিকর৷একসময় এত নিস্তেজ লাগে যে মনে হয়, একটু পানি বা অন্য কিছু খেয়ে চাঙা হওয়া দরকার৷’’
ইফতারে কড়াকড়ি
লকডাউনের কারণে জার্মানির অনেক জায়গায় কোনো পরিবার অন্য পরিবারের সর্বোচ্চ পাঁচজনের সঙ্গে দেখা করতে পারে৷ ফলে অন্যান্য বছর যেমন একসঙ্গে অনেকে মিলে ইফতার করা যেতো, সে সুযোগ এবার নেই৷ এ কারণে বিধিনিষেধের ইফতারে পরিপূর্ণ মজা পাচ্ছেন না অনেকে৷
নামাজেও বিধিনিষেধ
করোনা সংক্রমণ কমাতে সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি কার্যকর করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে৷ তাই নামাজও পড়তে হচ্ছে নিয়ম মেনে৷ নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যের মসজিদে নামাজ পড়তে হলে আগে নাম লেখাতে হয়৷ এছাড়া সব মুসল্লিকে নিজের জায়নামাজ নিয়ে যেতে হয় মসজিদে৷ নামাজ পড়ার সময় সবার সঙ্গে ২ মিটার দূরত্ব বজায় রাখাও বাধ্যতামূলক৷