1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘রোহিঙ্গাদের আপনারা নিয়ে যান’

২২ মে ২০২০

ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের মারধরের অভিযোগ তুলে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন জানতে চেয়েছেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিপীড়নের সময় তারা কেন নিশ্চুপ ছিল?

https://p.dw.com/p/3ccH8
AK Abdul Momen, Außenminister von Bangladesch
ছবি: DW/Harun Ur Rashid Swapan

বঙ্গোপসাগরে কয়েক সপ্তাহ ধরে নৌকায় ভাসতে থাকা প্রায় ৩০৬ জন রোহিঙ্গাকে এ মাসের শুরুর দিকে উদ্ধার করে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার বিরান দ্বীপ ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হয়৷

ওই রোহিঙ্গারা সমুদ্র পথে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করেছিল৷ কিন্তু মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের নৌকা তাদের জলসীমায় ঢুকতে দেয়নি৷ থাইল্যান্ডও তাদের ‍আশ্রয় দিতে রাজি হয়নি৷

করোনা ভাইরাস মহামারির মধ্যে সাগরে নৌযান থেকে উদ্ধার করা রোহিঙ্গাদের কোয়ারান্টিনের জন্য বাংলাদেশ সরকার ভাসানচরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়৷ কারণ, কক্সবাজারে শরণার্থী শিবিরে জনাকীর্ণ পরিসরে থাকা রোহিঙ্গাদের মধ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঘটলে তা ভয়ানক হয়ে ওঠার ঝুঁকি বেড়ে যাবে৷

নিউ ইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ভাসানচরে বসবাস করা অন্তত ২৫ জন রোহিঙ্গার সাক্ষাৎকার নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে৷

বুধবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, নিরাপত্তারক্ষীরা জিজ্ঞাসাবাদের নামে রোহিঙ্গাদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে এবং মারধর করছে৷

‘‘তারা বলেছে, ভাসানচরে তাদের যেভাবে রাখা হয়েছে তাতে তাদের মনে হচ্ছে তারা কারাগারে আছে৷ তাদের চলাচলে কোনো স্বাধীনতা নেই৷ খাবার, পানি ও চিকিৎসা ব্যবস্থাও অপ্রতুল৷

‘‘কেউ কেউ মারধরের অভিযোগও করেছে৷ তারা বলেছে, কে তাদের পাচার করেছে তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদের সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা পুরুষ রোহিঙ্গাদের ভয়ভীতি দেখায় এবং মারধর করে৷ শিশুদেরও মারধর করা হয়৷''

নারী রোহিঙ্গারা জিজ্ঞাসাবাদ কক্ষ থেকে চিৎকার শুনেছে বলেও ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়৷  

এ বিষয়ে জানতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ.কে. আব্দুল মোমেনের সঙ্গে যোগাযোগ করো হলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘তাদের নিশ্চয়ই খারাপ উদ্দেশ‌্য আছে৷ মিয়ানমারে নৃশংসতার সময় কেন তারা (হিউম্যান রাইটস ওয়াচ) নিশ্চুপ ছিল?

‘‘যারা এত কথা বলছে তাদের উচিত রোহিঙ্গাদের তাদের নিজেদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা৷ যদি তারা মনে করে রোহিঙ্গারা এখানে ভালো নেই তবে তাদের উচিত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে নিয়ে যাওয়া এবং সেখানে তাদের খুশি রাখা৷''

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনকে ‘ভিত্তিহীন এবং অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' বলে মন্তব্য করেন৷

সাগর থেকে উদ্ধার করা রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেওয়ার পর তাদের ব্যবস্থাপনায় পুলিশ পরিদর্শক, সহকারী পুলিশ পরিদর্শক ও কনস্টেবল মিলিয়ে ৪৯ জন পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে৷

নৌবাহিনীর সদস্যরাও নিয়মিত ভাসানচরে রোহিঙ্গা পুনর্বাসন ক্যাম্প ‘স্বপ্নপুরী' পর্যবেক্ষণে যান৷

নৌবাহিনীর এক মুখপাত্র এএফপিকে বলেন, সেখানে শরণার্থীদের সঙ্গে ‘খুব ভালো ব্যবহার করা হচ্ছে'৷

‘‘বুধবার ঘূর্ণিঝড় আমফান ভারত ও বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানলেও ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি৷''

যদিও বিরান দ্বীপ ভাসানচরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা নিয়ে জাতিসংঘ শুরু থেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে৷গত সপ্তাহে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেনের কাছে ভাসানচরের রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারের ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করেছিলেন৷

মিয়ানমারে নানা সময়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা মুসলমান পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে৷ তাদের মধ্যে প্রায় সাড়ে সাত লাখের সবচেয়ে বড় দলটি আসে ২০১৭ সালে রাখাইন রাজ্যে সেনাঅভিযান শুরুর পর৷

কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির ও তার বাইরে অবস্থান করা রোহিঙ্গাদের নিয়ে নানা সামাজিক সমস্যা সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে তাদের একটি অংশকে হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার বিরান দ্বীপ ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা করে বাংলাদেশ সরকার৷ ১০ হাজার একরের ওই চরে নিজস্ব অর্থায়নে ২৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে এক লাখের বেশি মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করেছে সরকার৷ সেখানে বিদ্যুৎ এবং মোবাইল নেটওয়ার্কও আছে৷ কিন্তু রোহিঙ্গা শরণার্থীরা সেখানে যেতে রাজি না হওয়ায় ভাসানচর প্রকল্প ঘিরে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়৷

এসএনএল/এসিবি (এএফপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য