রোহিঙ্গা নির্যাতনের দেশ মিয়ানমারে পোপ
ছ’দিনের দক্ষিণ এশিয়া সফরের শুরুতেই মিয়ানমারে গেছেন পোপ ফ্রান্সিস৷ মানবতাবাদী সব মানুষেরই আশা, তিনি নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বলবেন৷ তাঁর এ সফর রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে ভূমিকা রাখবে বলেও আশা অনেকের৷
সবার নজর ছিল যেদিকে
মঙ্গলবার সকাল থেকেই সবার নজর ছিল একটি বৈঠকের দিকে৷ মিয়ানমারের রাজধানী নেপিদ-এ যাচ্ছেন ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মগুরু ফ্রান্সিস৷ সেখানে নোবেলজয়ী অং সান সু চির সঙ্গে দেখা হবে, কথা হবে তাঁর৷ সবার আশা, গুরুত্বপূর্ণ এ বৈঠকে মানবতাবাদী পোপ রোহিঙ্গা সংকট নিরসনের লক্ষ্যে ইতিবাচক কিছু বলবেন৷
সাদর অভ্যর্থনা
৫ কোটি ১০ লাখ মানুষের দেশ মিয়ানমারে মাত্র ৭ লাখ ক্যাথলিক খ্রিষ্টানের বসবাস৷ তারপরও সোমবার ইয়াঙ্গনের রাস্তায় নেমেছিল মানুষর ঢল৷ ছবিতে বিমানবন্দরে পোপকে বরণ করে নিচ্ছে শিশুরা৷
‘সৌভাগ্য’ উদযাপন
পোপ ফ্রান্সিসকে স্বাগত জানাতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ছুটে এসেছিলেন ক্যাথলিকরা৷ এক ধর্মগুরু জানালেন, তাঁর সঙ্গে মিয়ানমারের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চল থেকে প্রায় ১৮’শ ক্যাথলিক এসেছেন ইয়াঙ্গনে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা এখানে পবিত্র পিতাকে দেখতে এসেছি৷ এমন ঘটনা তো শতবর্ষে একবার ঘটে৷’’
সংখ্যালঘুদের হাস্যোজ্জ্বল উপস্থিতি
মিয়ানমারের অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষরাও ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে পোপকে স্বাগত জানাতে এসেছিলেন৷
‘বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্য’
এর আগে ইয়াঙ্গনে মিয়ানমারের সব ধর্মের নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন পোপ ফ্রান্সিস৷ মিয়ানমারের ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের আর্চ বিশপের বাসভবনে অনুষ্ঠিত সভায় পোপ বৈচিত্র্যের মাঝে যে ঐক্য, তার গুরুত্ব মনে রাখার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান৷ তবে সেখানে তিনি রোহিঙ্গাদের বিষয়ে কিছু বলেননি৷
মানবিক সংকট
রাখাইনে ব্যাপক হারে হত্যা ও ধর্ষণ চালানোর ফলে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ‘রোহিঙ্গাদের নির্মূল’ করার অভিযোগ তোলে জাতিসংঘ৷ গত আগস্টে রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযান শুরুর পর থেকে মিয়ানমার ছেড়ে ছয় লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে৷ গত কয়েক দশকে বিভিন্ন সময়ে যাওয়াদের ধরলে এখন ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা রয়েছে বাংলাদেশে৷ এমন পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়া সফরে এলেন পোপ ফ্রান্সিস৷
সেনাপ্রধানের সঙ্গে সাক্ষাৎ
সোমবার পোপ ফ্রান্সিস মিয়ানমারে পৌঁছানোর পরই তাঁর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন মিয়ানমারের বিতর্কিত সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং৷ এ বৈঠকের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি৷
তারপর বাংলাদেশ
মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে যাবেন ভ্যাটিকানের প্রধান ফ্রান্সিস৷ এছাড়া বাংলাদেশ সফরে তিনি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় শিবিরে যাবেন বলেও আশা করা হচ্ছে৷