1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রেজিস্ট্রেশন বাতিল, কাশ্মীর প্রেস ক্লাব সরকারের দখলে

১৮ জানুয়ারি ২০২২

কাশ্মীর প্রেস ক্লাবের দখল নিলো রাজ্য প্রশাসন। ক্লাবের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়েছে, সরকারি খাতায় ক্লাবের আর কোনো অস্তিত্ব নেই।

https://p.dw.com/p/45fz2
কাশ্মীর প্রেস ক্লাবে তালা লাগিয়ে দিয়েছে সরকার। ছবি: Tauseef Mustafa/AFP

গত শনিবার কিছু সাংবাদিক জোর করে ক্লাবে ঢুকে ঘোষণা করে, তারা একটা অস্থায়ী কার্যকরি কমিটি গঠন করেছে, তারাই ক্লাব চালাবে। অভিযোগ, তাদের সঙ্গে কাশ্মীর পুলিশের সশস্ত্র কর্মীরা ছিলেন। তাদের সাহায্যেই তারা ক্লাব দখল করেন।

জম্মু ও কাশ্মীরেরসাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা বলেছেন, এটা হলো 'স্টেট স্পনসরড ক্যু'। দিল্লিতে জাতীয় প্রেস ক্লাব এবং এডিটরস গিল্ডও এই ঘটনার নিন্দা করে।

শনিবারের ঘটনার পর সোমবার রাজ্য প্রশাসন জানিয়েছে, আইনশৃঙ্খলার কারণে তারা প্রেস ক্লাব দখল করে নিচ্ছে। প্রশাসনের দাবি, কাশ্মীর পুলিশের ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট(সিআইডি) ক্লাবের কিছু সদস্যের সম্পর্কে বিরূপ রিপোর্ট দিয়েছে। আর ক্লাবের রেজিস্ট্রেশনও বাতিল হয়েছে। তাই কাশ্মীর প্রেস ক্লাব আর নথিভুক্ত সংগঠন নয়।

 কাশ্মীর প্রেস ক্লাবের তরফে জানানো হয়েছে, সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করার জন্যই সরকার এই ব্যবস্থা নিয়েছে। কাশ্মীর প্রেস ক্লাবের সদস্য সংখ্যা এখন তিনশ।

Indien das Press Klub in Srinagar wurde geschlossen
কাশ্মীর প্রেস ক্লাবের কাছে সশস্ত্র প্রহরা। ছবি: Tauseef Mustafa/AFP

প্রশাসনের বক্তব্য

জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসন বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ''তথ্যগত অবস্থান হলো, কাশ্মীর প্রেস ক্লাব আর নথিভুক্ত সংগঠন নয়। ম্যানেজিং বডির কার্যকাল ২০২১ সালের ১৪ জুলাই শেষ হয়ে গিয়েছিল। তাই ম্যানেজিং বডিরও আর কোনো অস্তিত্ব নেই।''

বিবৃতিতে আরো জানানো হয়েছে, ''সোসাইটিজ অফ রেজিস্ট্রেশন আইন অনুসারে কাশ্মীর প্রেস ক্লাবকে নথিভুক্ত করা হয়নি। নতুন ম্যানেজিং বডির জন্য নির্বাচনও হয়নি। ক্লাবের কয়েকজন সদস্য বেশ কিছু ক্ষেত্রে বেআইনি কার্যকলাপ করেছে বলে পুলিশ রিপোর্ট দিয়েছে।''

কেন্দ্রীয় সরকার জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ সুবিধা শেষ করার পর প্রেস ক্লাবকে সোসাইটিজ অফ রেজিস্ট্রেশন আইন অনুসারে নথিভুক্ত করতে বলা হয়। তারা সেই আবেদন করে। গত ২৯ ডিসেম্বর এবং ১৪ জানুয়ারি রেজিস্ট্রার অফ সোসাইটিজ জানিয়ে দেন, পুলিশের বিরূপ রিপোর্ট থাকার জন্য তাদের রেজিস্ট্রেশন দেয়া যাচ্ছে না।

Indien das Press Klub in Srinagar wurde geschlossen
কাশ্মীর প্রেস ক্লাবের মূল গেট বন্ধ। ছবি: Tauseef Mustafa/AFP

প্রেস ক্লাবের কর্মকর্তার বক্তব্য

কাশ্মীর প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইশফাক তান্ত্রে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, ''প্রশাসনের আসল উদ্দেশ্য ছিল প্রেস ক্লাব বন্ধ করে দেয়া। তাই তারা শনিবার জোর করে ক্লাবে ঢোকে। এভাবেই প্রশাসন সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করতে চাইছে। কাশ্মীর প্রেস ক্লাব ছিল উপত্যকার সাংবাদিকদের একমাত্র গণতান্ত্রিক ও স্বাধীন সংস্থা। তার দাবি, সাংবাদিকরা যথেষ্ট পেশাদার ও দক্ষ। তারা এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করবে।''

সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া

দিল্লির জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও প্রবীণ সাংবাদিক গৌতম লাহিড়ী ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ''কাশ্মীরে একদল সাংবাদিক প্রেসক্লাব দখল করেছিলেন। এটা খুবই নিন্দনীয় ঘটনা। এটা ঠিক, আগের কমিটি নির্বাচন করছিল না। সেটাও নিন্দনীয়।''

গৌতম বলেছেন, ''এরপর ক্লাবের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়েছে। এটা একেবারেই অনভিপ্রেত ঘটনা। আমাদের আবেদন, সাংবাদিকদের ক্লাবের বিষয়ে সরকার যেন হস্তক্ষেপ না করে। ক্লাব দখল করা, রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা ঠিক নয়। সরকার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করুক। আবার রেজিস্ট্রেশন দেয়া হোক ক্লাবকে।''

আরেক প্রবীণ সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী আশিস গুপ্ত ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''কাশ্মীর প্রেস ক্লাব নিয়ে যা হয়েছে, তা খুবই নিন্দনীয়। জরুরি অবস্থার সময়েও এরকমভাবে কোনো প্রেস ক্লাব বন্ধ করে দেয়া হয়নি। রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়নি। যেটা কাশ্মীর প্রেস ক্লাবের ক্ষেত্রে হলো। ক্লাবে কোনো সমস্যা থাকলে সাংবাদিকরাই তার সমাধান করে নিতে পারেন। তার জন্য সরকারি হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই কাম্য নয়।''

জিএইচ/এসজি (ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, এনডিটিভি)