বিদেশি বৌদ্ধ মূর্তি
৩ সেপ্টেম্বর ২০১৩গত বছরের ২৯শে সেপ্টেম্বর রাতে ধর্মীয় গুজব ছড়িয়ে হামলা করা হয় রামুর বৌদ্ধ পল্লিতে৷ সেখানেই বসবাস করেন বাংলাদেশের মোট বৌদ্ধ জনগোষ্ঠির প্রায় ২০ ভাগ মানুষ৷ ১১ মাস আগের সেই হামলা ও আগুনে ১২টি বৌদ্ধমন্দির ধ্বংস হয়৷ পুড়িয়ে দেয়া হয় ৩০টি বাড়ি আর ক্ষতিগ্রস্ত হয় শতাধিক পরবিার৷
সরকারের উদ্যোগে সেই ১২টি মন্দিরই পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে৷ সেনাবাহিনী এবং বিজিবি-র তত্ত্বাবধানে নির্মিত মন্দিরগুলো মঙ্গলবার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ বেলা ১১টার দিকে রামুর পাহাড় চূড়ায় স্থাপিত বিমুক্তি বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্র বৌদ্ধবিহার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে পুনর্নির্মিত বৌদ্ধ মন্দিরগুলো খুলে দেয়া হয়৷ সেখানে রয়েছে এশিয়ার বৃহত্তম ১০০ ফুট লম্বা সিংহসজ্জা গৌতম বুদ্ধের মূর্তি৷এর পর বাকি ১১টি বৌদ্ধমন্দিরও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী৷
বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতা এবং বৌদ্ধ সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক পরীক্ষিত বড়ুয়া ডয়চে ভেলেকে জানান, ক্ষতিগ্রস্ত ৩০টি বাড়িও নতুন করে বানিয়ে দেয়া হয়েছে৷ এছাড়া, পুনর্নির্মিত ১২টি বৌদ্ধমন্দির নিয়ে তারা সন্তুষ্ট৷ তবে বৌদ্ধমূর্তি, পুরনো তালপাতার পুঁথি, চর্যাপদসহ আরো ঐতিহাসিক নিদর্শন যা ধ্বংস হয়েছে – তা আর ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়৷ তাই তারা থাইল্যান্ড এবং মিয়ানমার থেকে ৫০টি বৌদ্ধমূর্তি এনছেন, যা প্রতিস্থাপন করা হবে৷
পরীক্ষিত বড়ুয়া জানান, তারা নিরপত্তা নিয়ে এখন আর তেমন উদ্বিগ্ন নন৷ হামলার পর তাদের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ ও বিজিবি-র পাহারা থাকলেও পরিস্থিতির উন্নতির কারণে এখন আর নিয়মিত পাহারা নেই৷ তবে প্রয়োজন হলে পুলিশের সহায়তা পাওয়া যায়৷
অধ্যাপক পরীক্ষিত বড়ুয়া বলেন, বৌদ্ধ পল্লি আবার আগের চেহারা ফিরে পাচ্ছে৷ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো ক্ষতিপূরণ পেয়েছে৷ সবই ঠিক আছে৷ কিন্তু আস্থার সে সংকট তৈরি হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে আরো সময় লাগবে৷ হামলার পর সরকার ও দেশের মানুষ যেভাবে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে তাতে তারা আশান্বিত হয়েছেন৷ তাঁর আশা, এভাবে সবাই এগিয়ে এলে ক্ষত দ্রুত মুছে যাবে৷
এদিকে, বৌদ্ধ পল্লিতে হামলার পর মোট ১৯টি মামলা হয়েছে৷ এর মধ্যে সাতটি মামলায় আদালতে অভিযোগ-পত্র দেয়া হয়েছে৷ বাকি মামলাগুলোর তদন্তও শীঘ্র শেষ হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ৷