1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

রাজনীতি করছেন ট্রাম্প, অভিযোগ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার

৯ এপ্রিল ২০২০

ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কথার লড়াই অব্যাহত। তারই মধ্যে গোটা বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ লাখ ছাড়িয়ে গেল।

https://p.dw.com/p/3ag0X
ছবি: picture-alliance/Newscom/UPI Photo/C. Kleponis

করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ লাখ ছাড়িয়ে গেল। গোটা বিশ্বে মৃতের সংখ্যা পৌঁছে গেল ৮৮ হাজারে। গত ২৪ ঘণ্টায় সব চেয়ে বেশি মৃত্যু দেখলো অ্যামেরিকা এবং যুক্তরাজ্য। নিউ ইয়র্কে করোনার কারণে পতাকা অর্ধনমিত রাখা হলো। সব মিলিয়ে বুধবার দিনভর আরও এক ভয়াবহতার চিত্র দেখলো পৃথিবী। একই সঙ্গে দেখলো ট্রাম্প এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কথার লড়াই।

মঙ্গলবারের পরে বুধবারও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে এক হাত নেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এ দিন ফের তিনি অভিযোগ করেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চীনের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট। বুধবারই মার্কিন প্রেসিডেন্টের অভিযোগের জবাব দিয়েছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান। বলেছিলেন, ''ট্রাম্প এই পরিস্থিতিতে রাজনীতি বন্ধ করুন। নইলে আরও বেশি মৃতদেহ দেখতে হবে তাঁকে।'' জবাবে বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ''বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সব চেয়ে বেশি অর্থ সাহায্য করে অ্যামেরিকা। কিন্তু তার প্রতিদান তারা দিতে পারেনি।'' ট্রাম্পের অভিযোগ, ''চীন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে অনেক কম অর্থ সাহায্য করে, কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা চীন নিয়ে মেতে আছে।'' জবাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধানের বক্তব্য, ''যেহেতু চীনেই প্রথম করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছিল, তাই ভাইরাসের উৎস খুঁজতে চীনে লাগাতার কাজ চালাচ্ছে তাঁদের সংস্থা। এটাই বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া।''

এপ্রিলের গোড়া থেকেই মার্কিন বিশ্বে করোনার ভয়াবহতা লাফিয়ে বাড়ছিল। নিউ ইয়র্ক এবং নিউ জার্সির পরিস্থিতি সব চেয়ে ভয়াবহ। আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মী এবং পুলিশও। নিউ ইয়র্কের স্বাস্থ্যকর্মী এবং চিকিৎসকদের একটি বড় অংশের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে। তারই মধ্যে বুধবার সব চেয়ে বেশি মৃত্যু দেখলো অ্যামেরিকা। এক দিনে মৃত্যু হল এক হাজার ৮৫০ জনের। যার জেরে অ্যামেরিকায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৪ হাজার ৭৯৫। ছাড়িয়ে গেল স্পেনকেও। এখনও পর্যন্ত ইটালিতে সব চেয়ে বেশি করোনা মৃত্যু ঘটেছে। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত সেখানে মৃত্যু হয়েছে ১৭ হাজার ৬৬৯ জনের। স্পেনে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা সামান্য হলেও কমেছে। সে দেশে মোট মৃত্যু হয়েছে ১৪ হাজার ৭৯২ জনের।

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, অ্যামেরিকায় মৃতের সংখ্যার চেয়েও বেশি উদ্বেগের কারণ আক্রান্তের সংখ্যা। মার্কিন সময়ে বুধবার রাত পর্যন্ত সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন চার লাখ ৩৫ হাজার জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন মাত্র ১৫ হাজার। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, অ্যামেরিকায় সুস্থ হওয়ার হার কম। তাঁরা তুলনা টানছেন ইটালি এবং স্পেনের। ইটালিতে মোট আক্রান্ত এখনও পর্যন্ত এক লাখ ৪০ হাজার মানুষ। তার মধ্যে সুস্থ হয়েছেন প্রায় ২৭ হাজার। স্পেনে মোট আক্রান্ত প্রায় দেড় লাখ। তার মধ্যে সুস্থ হয়েছেন প্রায় ৫০ হাজার। কিন্তু অ্যামেরিকায় সেই তুলনায় সুস্থ হওয়ার প্রবণতা অনেক কম। এটাই চিন্তা এবং আশঙ্কার কারণ বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।

এ দিকে নিউ ইয়র্কে করোনায় মৃত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বুধবার পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেন সেখানকার মেয়র। মার্কিন প্রশাসন জানিয়েছে, বুধবার মৃতের সংখ্যা সর্বোচ্চ হলেও আক্রান্তের সংখ্যা গত দুই দিনের চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম। এটা আশার কথা বলেই মনে করছে তারা।

অ্যামেরিকার পাশাপাশি যুক্তরাজ্যেও এক দিনে সব চেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বুধবার। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৯৩৮ জনের। সে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা সাত হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। এখনও ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে দেশের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন আগের চেয়ে ভালো আছেন প্রধানমন্ত্রী। বুধবার তিনি খাটে উঠে বসতে পেরেছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে।

এ দিকে অস্ট্রেলিয়ায় রুবি প্রিন্সেস নামক জাহাজটি নিয়ে নতুন করে গোলযোগ শুরু হয়েছে। এই জাহাজে থাকা যাত্রীদের থেকেই দেশে করোনা ছড়িয়েছে বলে প্রশাসনের ধারণা। এখনও দেশের উপকূলে দাঁড়িয়ে রয়েছে জাহাজটি। জাহাজের ব্ল্যাক বক্স পরীক্ষা করে দেখছে প্রশাসন। আইনি পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে।  

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি)