রাজনীতিবিদদের আরো ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : সামসুদ্দোহা
১ জুন ২০১১বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণ ছিল সামসুদ্দোহা'র জন্য বিশাল এক অনুপ্রেরণা৷ সেই অনুপ্রেরণা থেকেই যুদ্ধে অংশগ্রহণ৷ সিলেটের সীমান্তসংলগ্ন খোলাবাড়ি গ্রামের এই তরুণ একাত্তরের এপ্রিলে চলে যান ভারতে৷ উদ্দেশ্য গেরিলা প্রশিক্ষণ গ্রহণ৷
মেঘালয়ে প্রশিক্ষণ
ভারতের মেঘালয়ে ২৮ দিন প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফিরে আসেন সামসুদ্দোহা৷ সিলেট অঞ্চলে যুদ্ধে অংশ নেন তিনি৷ নয় মাসে বিভিন্ন সময় শত্রুর মোকাবিলা করতে হয়েছে তাদের দলকে৷ কখনো জয়, কখনো পরাজয়৷ তবে, সামসুদ্দোহা এখনো স্মরণ করেন আলীনগরে যুদ্ধের কথা৷ দেশ স্বাধীন হওয়ার মাত্র কয়েকদিন আগে, ১৩ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনারা চড়াও হয় তাদের উপর৷ তিনি বলেন, আলীনগরে একপাল গরুর সঙ্গে এসেছিল পাকিস্তানি সেনারা৷ এরপর আমাদেরকে ঘিরে ফেলে তারা৷
এই অতর্কিত হামলার কারণে বেশ অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন সামসুদ্দোহারা৷ বাধ্য হয়ে পিছু হটেন তারা৷ আশ্রয় নেন পাশের গ্রামে৷ কিন্তু শত্রু সেনারা পিছু ছাড়েনি৷ সামসুদ্দোহা জানান, শুধুমাত্র মনোবলের কারণেই আলীনগর-এর সেই যুদ্ধে শেষমেষ জিতেছিল মুক্তিযোদ্ধারা৷ ভারতীয় বাহিনীর সহায়তা ছাড়াই ৩০ জন পাকিস্তানি সেনা সেই যুদ্ধে প্রাণ হারায় মুক্তিবাহিনীর হাতে৷ তবে, আহত হন কয়েকজন মুক্তি সেনা৷
স্বাধীনতার চল্লিশ বছর
স্বাধীনতার চল্লিশ বছর এবং বর্তমান বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে চাইলে এই বীর সেনা মিশ্র অনুভূতি প্রকাশ করেন৷ তাঁর মতে, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর দেশে স্বাধীনতাবিরোধীদের অবস্থান শক্ত হয়৷ যুদ্ধাপরাধীরা প্রতিষ্ঠা পায়৷
‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই'
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে বর্তমান সরকারের উদ্যোগে আশাবাদী সামসুদ্দোহা৷ তিনি আশা করেন, নিজের জীবদ্দশাতেই এই বিচার দেখে যেতে পারবেন৷ তিনি বলেন, বর্তমান সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছে৷ আশা করছি খুব শীঘ্রই তাদের বিচার সম্পন্ন হবে৷
সামসুদ্দোহা বর্তমানে সিলেট মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সঙ্গে জড়িত৷ তাঁর মতে, দেশকে এগিয়ে নিতে চাইলে রাজনীতিবিদদের আরো সচেতন হতে হবে৷ ব্যক্তিস্বার্থ ত্যাগ করে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের কথা ভাবতে হবে৷ তাহলেই সোনার বাংলাদেশে সোনা ফলানো সম্ভব৷
প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক