রসায়নে নোবেল পেলেন এক মার্কিনি আর দুই জাপানি বিজ্ঞানী
৬ অক্টোবর ২০১০এটি এবছরে ঘোষিত তৃতীয় নোবেল পুরস্কার৷ এর আগে সোমবারে চিকিৎসা এবং মঙ্গলবারে পদার্থবিজ্ঞানে অবদান রাখার জন্য নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছিল৷
রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অফ সাইন্স জানিয়েছে, এই পুরস্কার রসায়নে তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ অবদানেরই স্বীকৃতি৷ নোবেল পুরস্কার কমিটি এই বুধবার তাঁদের নাম ঘোষণা করেছে৷ উল্লেখ্য, গুরুত্ববহ একটি রাসায়নিক পদ্ধতি আবিষ্কার করার জন্য তারা এবারের এই নোবেলটি পেয়েছেন৷
জানা গেছে, এই তিন রসায়ন বিজ্ঞানী অর্গানিক ব্যবস্থাতে প্যালাডিয়াম-ক্যাটালাইজড সংমিশ্রণ ঘটানোর পদ্ধতিটি আবিষ্কারের জন্য এবারের নোবেল পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন৷ গবেষণাগারে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে কার্বন নির্ভর যৌগ রাসায়নিক পদার্থ তৈরি বর্তমানে সহজতর হয়েছে৷
তাঁদের আবিষ্কৃত এই রাসায়নিক পদ্ধতিটির কল্যাণেই আজ বিশ্বজুড়ে ওষুধ তৈরির প্রতিষ্ঠানগুলো, রসায়নবিদ আর গবেষকরা অনায়াসে কার্বন নির্ভর যৌগ রাসায়নিক পদার্থ তৈরিতে সক্ষম হচ্ছেন৷ এমনকি আধুনিক ইলেক্ট্র্রনিক্স সামগ্রীতে ব্যবহৃত গুরুত্বপূর্ণ সব সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম অংশ তৈরিও এই পদ্ধতি ব্যবহারের কারণে সহজতর হয়েছে৷
নোবেল কমিটির বরাতে জানা গেছে, এ'পদ্ধতি ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা কার্বন-নির্ভর যৌগ রাসায়নিক, যা প্রাণের আদি বিষয়, তা এখন গবেষণাগারেই তৈরি করতে পারছেন৷ উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, প্রাকৃতিকভাবে স্বল্প পরিমাণে হলেও এমনই একটি যৌগ রাসায়নিক পদার্থ সামুদ্রিক স্পঞ্জ জাতীয় প্রাণীতে রয়েছে, যা ক্যান্সার নিরাময়ে এবং ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি ঠেকাতে ব্যবহৃত হতে পারে৷
বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, সামুদ্রিক স্পঞ্জে প্রাকৃতিকভাবে পাওয়া এই যৌগ রাসায়নিক পদার্থটি এখন কৃত্রিমভাবে গবেষণাগারেই তৈরি করা সম্ভব৷ যা থেকে অদূর ভবিষ্যতে ক্যান্সার ঠেকানোর ওষুধ আবিষ্কার সম্ভব হবে৷ নোবেল কমিটির বরাতে আরো জানা গেছে, এ'জাতীয় রাসায়নিক পদার্থ তৈরিতে সাধারণত কার্বন অণুদের জোড়া লাগাতে হয়৷ যদিও কার্বন অণুদের একসঙ্গে মেলানোর এই বিষয়টি বেশ দুরূহ একটি কাজ৷ আর এই প্রক্রিয়ায় অনেক বাড়তি উপজাত সৃষ্টি হয়ে থাকে৷
কিন্তু বিজ্ঞানী রিচার্ড হেক, এইইচি নেগিশি আর আকিরা সুজুকির আবিষ্কৃত এই পদ্ধতির কল্যাণে আজ গবেষণাগারে এখন বাড়তি কোন উপজাত সৃষ্টি ছাড়াই সুনির্দিষ্টভাবে এবং অনেক সহজে করা যাচ্ছে৷ বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, আগামী দিনগুলোতে এমনতরো অনেক দূরারোগ্য অসুখের ওষুধ সৃষ্টিতেও হয়তো এই ত্রয়ী বিজ্ঞানীর আবিষ্কৃত পদ্ধতি ব্যবহার করে আমরা সাফল্য পাবো৷
প্রতিবেদন: হুমায়ূন রেজা
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন