রক্তে লাল সোনা-রূপা-হীরার খনি
বুধবার বুরকিনা ফাসোর একটি খনিতে প্রাণ হারিয়েছেন ৪৭ জন৷ কেন বহু বছর ধরে আফ্রিকার একাধিক সোনা-রূপা-হীরার খনিতে অব্যাহত মৃত্যুর পরিবেশ, জানুন ছবিঘরে...
বুরকিনা ফাসো
বুধবার বুরকিনা ফাসোর পূর্বাঞ্চলের একটি সোনার খনিতে গুলি বিনিময়ের ফলে প্রাণ হারিয়েছেন ৩৭ জন, আহত ৬০৷ আলোচ্য খনিটির মালিকানা একটি ক্যানাডিয়ান সংস্থা, যাদের কনভয়ের ওপর হামলা চালায় অজ্ঞাতনামা বন্দুকধারীদের দল৷ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানাচ্ছে, এমন ঘটনা এর আগেও ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ঘটে, যেখানে মারা যান পাঁচজন৷ ধারাবাহিক সহিংসতার কারণে বাজারে কমছে বুরকিনা ফাসো থেকে আসা সোনার মূল্য৷
কঙ্গো
অক্টোবর মাসে কঙ্গোর একটি সোনার খনিতে ধসে প্রাণ হারান ২২ জন৷ এর আগেও জুনমাসে একটি তামার খনিতে অব্যবস্থা ও শ্রমিকদের পর্যাপ্ত সুরক্ষাবস্তু না দেওয়ার কারণে মারা যান ৩৬ জন, যার মধ্যে বেশির ভাগই ছিলেন অবৈধ শ্রমিক৷ মার্কিন সংবাদসংস্থা সিএনএন বলছে, কঙ্গোর বিভিন্ন খনিতে দিনে অন্তত দুই হাজার জন শ্রমিক অবৈধভাবে কাজে ঢোকেন৷এই শ্রমিকরা কোনো দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সরকার থেকে সাহায্য পাননা তারা৷
দক্ষিণ আফ্রিকা
খনিতে শ্রমিক মৃত্যু ও সহিংসতার পরিসংখ্যানে এগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা৷ শুধু ২০১৪ সালেই একটি খনিতে আগুন লাগার ফলে মারা যান তিনশরও বেশি শ্রমিক৷ সোনা, রূপা বা হীরা নয়, কয়লার খনিতেও ব্যাপকহারে বাড়ছে শ্রমিক স্বাস্থ্যের অবহেলাঘটিত দুর্ঘটনা ও অবৈধ শ্রমিক নিয়োগের হার৷ যার ফলে, সংঘর্ষ ও মৃত্যু দৈনন্দিন বাস্তবতায় পরিণত হয়েছে সেখানে৷
তানজানিয়া
১৯৯৮ সালে প্রবল বন্যায় ডুবে যাওয়া একটি খনিতে মারা যান ৫০ জন৷ এরপরও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ২০১৩ সালে পাঁচজন মারা যান খনিতে ধসের কারণে৷
সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক
মধ্য আফ্রিকার এই দেশেও একই চিত্র৷ বন্যাকবলিত খনিতে শ্রমিক মৃত্যুর পাশাপাশি সেই দেশের খনিগুলিতে অন্যতম সমস্যা অবৈধ শ্রমিক নিয়োগ৷ ২০১৩ সালের একটি বন্যা ঘটনায় একটি সোনার খনিতে প্রাণ হারান ৩৭ জন শ্রমিক৷
কেন অপরিবর্তিত চিত্র?
আফ্রিকার যে দেশে রয়েছে একাধিক খনি, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেই খনিগুলির মালিকানা থাকছে বিদেশি সংস্থা বা রাষ্ট্রের হাতে৷ অন্যদিকে, রয়েছে দারিদ্র্য৷ ফলে একদিকে বাড়ছে অবৈধ শ্রমিকের সংখ্যা৷ কিন্তু তাল মিলিয়ে খনির সার্বিক অবস্থার উন্নতি সেভাবে হচ্ছে না৷ বাড়ছে স্থানীয়দের মধ্যে অসন্তোষ, যা ক্রমেই রূপ নিচ্ছে সহিংসতায়৷ এই রক্তাক্ত বাস্তব থেকেই আফ্রিকার হীরার প্রচলিত নাম ‘ব্লাড ডায়মণ্ড’ বা রক্তহীরা৷
এসএস/কেএম (সূত্র: এএফপি, রয়টার্স, সিএনএন, ব্রিলিয়ান্ট আর্থ ডট কম)