1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যোগচর্চা অব্যাহত সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানেরই ফল

২৯ মে ২০১১

যোগ ব্যায়াম আজকের দিনে পশ্চিমেও দেহমন চর্চার এক পরিচিত মাধ্যম হয়ে উঠেছে৷ শাড়ি, কারি, মহারাজা শব্দগুলোর মত যোগ কথাটাও একান্তই ভারতীয় বলে দেখা হয়ে থাকে পশ্চিমে৷

https://p.dw.com/p/11Q5f
জার্মানির বন শহরের একটি যোগচর্চা কেন্দ্রছবি: Susanne Hiepel

জার্মান পত্রিকায় যোগচর্চার ভারতীয়ত্ব সম্পর্কে বিশিষ্ট ভারততত্ত্ববিদের সংশয় প্রকাশ৷ হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসিকাল ইন্ডোলজি বিভাগের প্রফেসর ড.আক্সেল মিশায়েলস দীর্ঘ এক নিবন্ধ লিখেছেন জার্মানভাষী সুইস দৈনিক ‘নয় স্যুরশার সাইটুং' পত্রিকায়৷ বিষয় যোগ, জার্মানরা বলেন ইয়োগা৷ বিশিষ্ট ভারততত্ত্ববিদ হিসেবে যোগসাধনার নানা মার্গের সঙ্গে তিনি পরিচিত৷ পশ্চিমের তথাকথিত ‘ওয়েলনেস আর ফিটনেস' জগতের এক অপরিহার্য অঙ্গ হিসেবে যোগচর্চার উপস্থিতির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন মিশায়েলস৷ তিনি লিখছেন:

‘‘বিশ্বজুড়ে এক ব্যবসা হয়ে দাঁড়িয়েছে যোগ অভ্যাস৷ এর মধ্যে আর ভারতীয়ত্ব কোথায়? সারা দুনিয়ায় শত শত প্রতিষ্ঠান আর স্কুল, হাজার হাজার যোগচর্চার তালিমদাতা যোগ ব্যয়াম শিখিয়ে অর্থ উপার্জন করতে চায়৷ বাজার সমীক্ষক প্রতিষ্ঠান টিএনএস ইনফ্রাটেস্ট'এর ২০০৯ সালের এক জনমত যাচাই সমীক্ষার ফল বলছে, জার্মানদের এক-চতুর্থাংশ যোগ আর ধ্যান সাধনায় আগ্রহী৷ প্রতি পাঁচজন জার্মানের মধ্যে একজন কোন না কোনভাবে দুটোই করে থাকেন৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দু'কোটি মানুষ যোগ অভ্যাস করেন - তার মধ্যে আছেন অগণিত খ্রিষ্টান, মুসলমান, ইহুদি এবং নাস্তিক৷ কিন্তু এখন ভারতীয় এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের মধ্যে এমন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে যারা জোর গলায় বলছেন, হিন্দু ধর্মের ঐতিহ্য থেকে যোগসাধনাকে বের করে আনলে চলবেনা৷ তাদের কেউ কেউ এমনকি কিছু নির্দিষ্ট যোগাসনের স্বত্বাধিকার দাবি করছেন৷ তারা এগুলোকে শতশত বছরের প্রাচীন সংস্কৃতির অংশ হিসেবেই দেখছেন৷''

যোগ, তুমি কার? এই প্রশ্নটির আলোকে ইতিহাসের পাতা ঘেঁটেছেন প্রফেসর মিশায়েলস৷ দেখিয়েছেন কীভাবে স্বত্বের লড়াইটা এমনকি মার্কিন আদালতে পৌঁছে গিয়েছিল৷ তিনি হিন্দু অ্যামেরিকান ফাউন্ডেশনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা অসীম শুক্লার এই বক্তব্য তুলে ধরেছেন যে, যোগাভ্যাসকে আধ্যাত্মিক মুক্তির লক্ষ্য থেকে পৃথক করা যায়না৷ শুক্লার মতে পশ্চিমের দ্রুত বাজারজাত করা ‘‘ম্যাকইয়োগা'' অবক্ষয়ী ব্যাপার বৈ নয়৷ শুক্লার বিপরীত মেরুতে অবস্থান নেন হলিউডের এক ওয়েলনেস গুরু দীপক চোপরা৷ তিনি মনে করেন, যোগ গোটা মানবজাতিরই উত্তরাধিকার৷ এ বিষয়ে পশ্চিমের বিশিষ্ট ভারততাত্ত্বিক ও যোগবিশেষজ্ঞদের মতামতের ওপর আলোকপাত করেছেন মিশায়েলস৷ যেমন নিউ মেক্সিকোর সেন্ট জনস কলেজের অধ্যাপক মার্ক সিঙ্গলটন, যিনি নিজে যোগাভ্যাস করে থাকেন৷ তাঁর সমীক্ষামূলক ‘‘ইয়োগা বডি: দ্য অরিজিন্স অফ মডার্ন পশ্চার প্রাকটিস'' গ্রন্থে তিনি এই প্রমাণ তুলে ধরতে সচেষ্ট হয়েছেন যে, আধুনিক শরীরনির্ভর, পশ্চিমে জনপ্রিয় হঠযোগ একশো বছরের বেশি প্রাচীন নয় বললেই চলে৷

বিশিষ্ট জার্মান ভারততাত্ত্বিক আক্সেল মিশায়েলস'এর উপসংহার: ‘‘যোগচর্চা আজকের দিনে যে রূপ নিয়েছে, তা ভারতীয়ও নয়, নয় পশ্চিমেরও৷ এ হলো বহুজাতিক, আন্তঃসাংস্কৃতিক, বিভিন্ন সংস্কৃতির মাঝে কোথাও তার অবস্থান৷ যোগচর্চার আসল উৎস এবং ‘প্রকৃত' যোগ'এর স্বত্ব অধিকার করার ওপর জোর দিচ্ছে এবং দেয়াল তোলার চেষ্টা করছে যারা, তারা আসলে বুঝতে পারছেনা যে সংস্কৃতি আদতে স্বচ্ছ৷ ‘‘মাল্টিকালচার'' শেষ হয়ে যায়নি, বরং শুরু হয়েছে সবে৷''

প্রতিবেদন: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য