1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যে শহর থেকে জার্মান পুনর্মিলনের সূচনা

মাবেল গুন্ডলাখ/এসি১৪ নভেম্বর ২০১৪

এ বছর দুই জার্মানির পুনর্মিলনের ২৫ বছর পূর্তি৷ সেই পুনর্মিলনে সাবেক পূর্ব জার্মানির একটি শহরের অবদান অনস্বীকার্য ছিল: লাইপসিশ, যার নিকোলাই গির্জা আর সোমবারের প্রতিবাদ মিছিল থেকে ১৯৮৯ সালের শান্তিপূর্ণ বিপ্লবের সূচনা৷

https://p.dw.com/p/1Dmkx
Bildergalerie zum Städteportrait Leipzig
ছবি: DW

লাইপসিশ-এর চেহারা যেন সম্পূর্ণ পালটে যাচ্ছে৷ দুই জার্মানির পুনর্মিলনের পর বহু ভাঙাচোরা, নোনাধরা বাড়ি মেরামত করে নতুন করে সাজানো হয়েছে৷ কিন্তু ১৯৮৯ সালের হেমন্তে পরিস্থিতি ছিল অন্যরকম৷ প্রখ্যাত নিকোলাই গির্জাটি থেকে শুরু হয় এক শান্তিপূর্ণ বিপ্লব৷ এই গির্জাটির ভূমিকা ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, টুরিস্ট গাইড কারিন শয়েবলে সে কথা তাঁর শ্রোতাদের শোনান – এবং সেই শান্তিপূর্ণ বিপ্লবের অকুস্থলগুলি দেখান৷ তিনি বলেন, ‘‘আশির দশকে সোমবারের প্রার্থনাসভার পর ক্রমেই আরো বেশি মানুষ জড়ো হতেন৷ তাদের কেউই জার্মানির এই অংশে, অর্থাৎ জিডিআর-এর সমাজব্যবস্থায় সন্তুষ্ট ছিলেন না৷''

এর পরে আসে প্রতি সোমবারের ‘ডেমো' অথবা প্রতিবাদ মিছিল, কারিন নিজেও যাতে শামিল হতেন৷

সমকালীন ইতিহাস

সে আমলের বিভক্ত জার্মানির একটা পূর্ণাঙ্গ চিত্র পাওয়া যাবে লাইপসিশ-এর সমকালীন ইতিহাস ফোরামে৷ জানা যাবে, সাবেক পূর্ব জার্মানির সরকারি দল এসইডি কী ভাবে জন্ম নেয়­৷ দর্শকরা জিডিআর-এর নাগরিকদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা সম্বন্ধেও অনেক কিছু দেখতে ও জানতে পারেন: কারখানাগুলোয় সমাজতান্ত্রিক প্রতিযোগিতা থেকে শুরু করে পূর্ব জার্মানির একটি বৈঠকখানা ঘরের আসবাবপত্র৷

Flash-Galerie Leipzig Stadtansicht Nacht
লাইপসিশের চেহারা যেন সম্পূর্ণ পালটে যাচ্ছেছবি: picture alliance/dpa

১৯৮৯ সালে পূর্ব জার্মানির অন্তের সূচনা৷ ক্ষমতাসীনরা যখন কমিউনিস্ট রাষ্ট্রটির চল্লিশতম প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন করছেন, ঠিক তখনই কিন্তু সেই রাষ্ট্র ভেঙে পড়ছে৷ এর পর শুরু হয় সোমবারের ডেমো৷ ৯ই অক্টোবরের সেই ডেমো-তে অপ্রত্যাশিতরকম বেশি মানুষ এসেছিলেন৷ সমকালীন ইতিহাস ফোরামের অধ্যক্ষ প্রফেসর রাইনার একার্ট বললেন:

‘‘সত্তর হাজার, এমনকি কিছু কিছু পরিসংখ্যান অনুযায়ী এক লাখ মানুষ যে এই প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দেবেন, তা কেউ প্রত্যাশা করেনি৷ পুলিশ আর রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা পুলিশ ‘স্টাসি' দিয়ে ত্রিশ-চল্লিশ হাজার মানুষকে হয়তো রোখা যেতো, কিন্তু সত্তর বা আশি হাজারকে নয়৷''

‘স্টাসি'-র বিভীষিকা

যে ভবনটিতে স্টাসি-র অফিস ছিল, তাকে ‘‘গোল চৌকি'' বলা হতো৷ ১৯৮৯ সালের ডিসেম্বর মাসে লাইপসিশ-এর নাগরিকরা ভবনটি দখল করেন, যাতে স্টাসি আর ফাইলপত্র নষ্ট না করতে পারে৷ কিন্তু বহু ফাইলপত্র ততোদিনে কাগজের দলায় পরিণত হয়েছে৷ আজ এটা একটা মিউজিয়াম৷ সেখানে দেখতে পাওয়া যাবে পুরনো আড়ি পাতার যন্ত্র, যা দিয়ে পৌরভবনের কর্মীদের ওপর আড়ি পাতা হতো; গঁদ দিয়ে আঁটা চিঠি গোপনে খোলার যন্ত্র – এই সংগ্রহশালা থেকে জিডিআর-এর গোয়েন্দা ও গুপ্তচর বিভাগগুলির কর্মপদ্ধতির একটা ভীতিকর ধারণা পাওয়া যাবে৷ স্টাসি-র কাজ ছিল, পূর্ব জার্মানির নাগরিকদের উপর নজর রাখা এবং তাদের ভীত-সন্ত্রস্ত করে রাখা৷ তা সত্ত্বেও যে লাইপসিশ-এর বিপ্লব সহিংসতা ছাড়াই সংঘটিত হয়েছে, অগাস্টাস চত্বরে দাঁড়িয়ে সে কথা স্মরণ করেন কারিন শয়েবলে৷ সে আমলে আন্দেলনকারীরা এখানেই সম্মিলিত হতেন কিনা:

‘‘ভেবে দেখুন, একটি শান্তিপূর্ণ বিপ্লব যাতে একটিও প্রাণহানি হয়নি – এটা এমন একটা ব্যাপার, যে বিষয়ে আমরা অত্যন্ত সুখী ও সন্তুষ্ট বোধ করতে পারি; কৃতজ্ঞ বোধ করতে পারি যে, আমদের নিজেদের সেই অভিজ্ঞতা হয়েছে৷ ক'জন এ রকম একটা সুযোগ পায়?''