যে মাটিতে সোনা ফলে
পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় গত ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে খনি থেকে সোনা তোলা হচ্ছে৷ লালমাটির সুবিশাল মরুভূমিতে বিরাট বিরাট মাইনিং ট্রাক চলাফেরা করে, শহরগুলোয় থাকেন পোড়খাওয়া খনিশ্রমিক৷
অস্ট্রেলিয়ান আউটব্যাক
নীল আকাশ, লালমাটির ঢাল৷ দূরে মাইলের পর মাইল কৃত্রিম পাহাড়ের সারি৷ সর্বত্র মাইনিং-এর চিহ্ন, কোথাও ফেলে যাওয়া খনি, কোথাও সবে খোঁড়া শুরু হয়েছে৷ সর্বত্রই খনির কাজ৷
ধরিত্রীর বুক খুঁড়ে
সোনা পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসের অঙ্গ৷ অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় সোনার খনিটির নাম হলো ‘সুপার পিট’, বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম খনি৷ সাড়ে তিন কিলোমিটার লম্বা, দেড় কিলোমিটার চওড়া, আপাতত ৬২০ মিটার গভীরতার একটি অতিকায় গহ্বর৷
সবই অতিকায়
খনি থেকে আকর বহণ করার যে সব ট্রাক, তাদের আকার দেখলে চমকে যেতে হয়! এক একটি চাকার সাইজ একটা সাধারণ মানুষের দ্বিগুণ; দাম ৪০ হাজার ডলারের বেশি৷ গোটা ট্রাকের দাম প্রায় ৩১ লাখ ডলার৷ এইরকম একটা ট্রাক প্রতিবারে ২৪০ টন পাথর বহন করতে পারে৷ ট্যাংকে তেল ধরে ৩,৮০০ লিটার৷
একটি খনি, একটি শহর
ক্যালগুর্লি শহরটি বেঁচেই আছে সোনার খনির কল্যাণে৷ সারি সারি একতলা বাড়ি, মাঝেমধ্যে এক-একটি ভিক্টোরিয়ান ম্যানশন৷ শহরটি পার্থ থেকে প্রায় ৬০০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে৷ ক্যালগুর্লির ত্রিশ হাজার বাসিন্দাদের অধিকাংশের বয়স ৩০ বছরের নীচে৷ সকলেই কাজ করেন খনিতে৷
জৈবিক প্রয়োজন
ক্যালগুর্লিতে এককালে ১৮টি গণিকালয় ছিল৷ এখনওআছে দু’টি৷ সুপার পিট-এর শ্রমিকরা সারা সপ্তাহ কাজ করার পর সপ্তাহান্তে খোঁজেন ঠান্ডা বিয়ার অথবা...
৯৬৫ কিলোমিটার...
গোল্ডেন কোয়েস্ট ডিস্কভারি ট্রেইলের দৈর্ঘ৷ গোটা এলাকাটা আয়তনে গ্রিসের সমান৷ পরিত্যক্ত সোনার খনি, খনির সাজসরঞ্জাম, বস্তি – যেন অতীতের গোল্ড রাশের প্যানোরামা৷ পড়ে আছে শুধু কিংবদন্তি, লালমাটি, ফেলে আসা শহর আর এই এলাকার নাছোড়বান্দা মানুষ৷
রোড ট্রেন
‘রাস্তার রেলগাড়ি’ মানে পঞ্চাশ মিটার লম্বা একাধিক ট্রেলার লাগানো ট্রাক, আউটব্যাকের পথে যাদের চলতে-ফিরতে দেখা যায়৷ এই সব রোড ট্রেনে করেই যায় – অথবা আসে – সিমেন্ট, স্পেয়ার পার্টস, এমনকি দুধ৷
প্রাকৃতিক, নাকি মানুষের সৃষ্টি?
অস্ট্রেলিয়ার মরুভূমি অঞ্চলের অনেক দৃশ্য দেখলে হঠাৎ মনে হবে – যেন কোনো পাথুরে এলাকা৷ তবে নজর করে দেখলে বোঝা যাবে, এখানে লালমাটি খুঁড়ে সোনার খোঁজ করা হয়েছে৷
সকলেই সোনার খোঁজে
পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় সকলেই অপেশাদার ‘মাইনার’ হতে পারেন৷ পাসপোর্ট থাকলেই হলো; লাইসেন্স পেতে লাগে ২০ ইউরো মতন – তা-তেই সারাজীবনের লাইসেন্স পাওয়া যায়...৷