1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

যে কারণে ভাঙা যাচ্ছে না বিজিএমইএ ভবন

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০

প্রায় এক মাস আগে হাতিরঝিলে বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কাজের উদ্বোধন করা হয়েছিল৷ কিন্তু ভবনটি ভাঙার কাজ এগোয়নি একটুও৷ কারণ কী?

https://p.dw.com/p/3Xr4B
Bangladesch Hauptgebäude Textilhersteller BGMEA in Dhaka
ছবি: picture-alliance/Photoshot

গত ২২ জানুয়ারি বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কাজ উদ্বোধন করেন সেসময়ের গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম৷ পরদিন থেকেই পুরোদমে ভাঙার কাজ শুরুর কথা ছিলো ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ফোর স্টার গ্রুপের৷ কিন্তু ২৬ দিনেও ভবন ভাঙ্গার কাজটি শুরু হয়নি৷ এরমধ্যেই গত সপ্তাহে গণপূর্তমন্ত্রীর দপ্তর বদল হয়েছে৷ তিনি এখন আছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে৷

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিজিএমইএ'র কাছে বিদ্যুৎ বিভাগের (ডিপিডিসি) বকেয়া বিল ছিলো৷ এ কারণে আগেই তাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়৷ এই বকেয়ার মধ্যে কিছুটা তারা পরিশোধ করেছে৷ তারপরও দুই লাখ ৫৮ হাজার টাকা পাওনা রয়ে গেছে৷ যেকারণে ভবন ভাঙার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ফোর স্টার গ্রুপ বিদ্যুৎ সংযোগ চেয়েও পাচ্ছে না৷

তারা ওয়াসার কাছে পানির সংযোগও চেয়েছিল৷ কিন্তু তাও মেলেনি৷ কারণ বিজিএমই ভবনে ওয়াসার পানির লাইন নেই৷ গভীর নলকূপের মাধ্যমে পানি তোলা হতো সেখানে৷ ফোর স্টার গ্রুপ নিজস্ব উদ্যোগে গভীর নলকূপটি চালু করতে চাইলেও বিদ্যুতের অভাবে তাও সম্ভব হচ্ছে না৷ নিজস্ব জেনারেটর দিয়ে তারা কাঁচ খোলা এবং ময়লা অপসারণের কাজ শুরু করছে৷ কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকায় ভবন ভাঙার ভারী যন্ত্রপাতি চালানো সম্ভব হচ্ছে না৷

নাসিরুল্লাহ খান

‘বিদ্যুৎ না পেলে কাজ বন্ধ’

ফোর স্টার গ্রুপের পরিচালক নাসিরুল্লাহ খান বলেন, ‘‘তারা (ডিপিডিসি) আজকের মধ্যে সংযোগ দেবে বলেছেন৷ আমরা আগামীকাল (সোমবার) পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য অপেক্ষা করব৷ না পেলে আমরা কাজ বন্ধ করে দিব৷ কারণ আমারা হ্যামার দিয়ে এই ভবন ভাঙবো৷ ওই হ্যামার বিদ্যুৎ ছাড়া চালানো সম্ভব নয়৷''

তিনি বলেন, ‘‘আমরা কাজ শুরুর সময়ই বিদ্যুৎ লাইনের জন্য আবেদন করেছি৷ কিন্তু বিজিএমইএ'র কাছে বকেয়া বিল থাকায় আমাদের সংযোগ দিচ্ছে না৷''

ভবনটি ভাঙার জন্য ফোর স্টার গ্রুপ কাজ পেয়েছে রাজউকের কাছে থেকে৷ চুক্তি অনুযায়ী এজন্য তারা কোনো টাকা পাবে না৷ উল্টো রাজউককে এক কোটি দুই লাখ ৭০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে৷ বিনিময়ে ভবনের ভাঙ্গা অংশ তারা নিয়ে যাবে৷ নাসিরুল্লাহ খান বলেন, ‘‘আমরা এটা নিয়ে বিক্রি করে ব্যবসা করব আশা করেছিলাম৷ এখন যা পরিস্থিতি তাতে লোকসান গুনতে হবে৷ ১৭০ জন কর্মীকে বসিয়ে রেখেছি৷ ওখানে তাদের পানিও কিনে খাওয়াতে হয়৷''

জানা গেছে নানা জটিলতায় ফোর স্টার গ্রুপকে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য ঘুরতে হয়েছে৷ তখনকার গণপূর্তমন্ত্রী সব সংস্থাকে তাদের সহযোগিতার জন্য বললেও বিদ্যুৎ বিভাগ ও ওয়াসা তা আমলে নেয়নি৷ 

বিকাশ দেওয়ান

রাজউকের নামে সংযোগ

ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিতে (ডিপিডিসি) যোগাযোগ করে জানা গেছে, বিজেএমইএ'র বকেয়ার পাশাপাশি কিভাবে ওই ভবনে বিদ্যুতের পুনঃসংযোগ দেয়া হবে তা বের করতেই এত সময় চলে গেছে৷ এ নিয়ে তারা অনেক ফাইল চালাচালি করেছেন৷ প্রয়োজনীয় বোর্ড, মিটার ও সুইচও স্থাপন করা হয়েছে৷ কিন্তু সিদ্ধান্ত না হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি সংযোগ দিতে পারেনি৷ তবে শেষ পর্যন্ত কাকরাইল স্টেশন থেকে সংযোগ দেয়ার একটি প্রক্রিয়া চলছে৷

ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান রোববার ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা দুই-একদিনের মধ্যেই ওই ভবনে রাজউক-এর নামে বিদ্যুৎ সংযোগ দেব, ফোর স্টার গ্রুপকে নয়৷ ফোর স্টার গ্রুপ আগেই সংযোগের আবেদন করেছিলো৷ বিজিএমইএ'র আড়াই লাখ টাকার মতো বকেয়ার কারণে সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিলো৷ আমি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ওই বকেয়া টাকা বিজিএমইএ'র জামানত থেকে কেটে রাখতে বলেছি৷ ফোর স্টার গ্রুপ যে বিদ্যুৎ খরচ করবে তার বিল আমরা রাজউকের কাছ থেকে নেব৷''

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল হাতিরঝিলের উপর গড়ে ওঠা বিজিএমইএ ভবনটি ভাঙার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট৷ ওই রায়ে ভবনটিকে ‘হাতিরঝিল প্রকল্পে একটি ক্যানসারের মতো' বলে উল্লেখ করা হয়৷ এরপর আপিল বিভাগও সেই রায় বহাল রাখে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য