যেসব স্কুলে পড়লে সুখী হওয়া যায়
জীবনযাপন ও লেখাপড়ার চাপ লাঘবে দিল্লির সরকারি স্কুলগুলোতে নিয়মিত পাঠ্যক্রমের সঙ্গে নতুন বিষয় ‘সুখ’ যোগ করা হয়েছে৷ বিশেষ এই ক্লাসে শিক্ষার্থীদের চিত্ত বিনোদন ও মানসিক প্রশান্তির জন্য নানা কাজ করা হয়৷
চাপ লাঘব
শিক্ষার্থীরা যাতে নির্ভার অনুভব করে, দিনের সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয়গুলো নিয়ে ভাবে এবং তাদের জীবন ব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে সে বিষয়গুলোর ওপর জোর দেওয়া হয় ৪৫ মিনিটের এই ক্লাসে৷
বৈপ্লবিক উদ্যোগ
দিল্লিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে৷ এর জন্য খ্যাতনামা স্কুল-কলেজে ভর্তির জন্য তুমুল প্রতিযোগিতা এবং সে কারণে সৃষ্ট চাপ ও উদ্বেগকেই দায়ী করেন অনেকে৷ বইকেন্দ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থায় পরীক্ষায় পাস ও বেশি নম্বর পেতে মুখস্থ ও তা পরীক্ষার খাতায় ঢেলে দিতে ব্যস্ত থাকে শিক্ষার্থীরা, সে জায়গায় এই ধরনের ক্লাসকে বৈপ্লবিক উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন অনেকে৷
‘সুখের ক্লাসে’ এখন ১০ লাখ শিক্ষার্থী
শুধু ডাক্তার, প্রকৌশলী ও কর্পোরেট অফিসের বড় কর্তা নয়, মানবিক বোধ সম্পন্ন ভালো মানুষ তৈরিতে নেওয়া এই প্রকল্প এসেছে দিল্লির আম আদমি সরকার শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে বাজেটের ২৬ শতাংশ করার কারণে৷ ভিন্নধর্মী এই ক্লাসের জন্য ৫০ হাজার শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে৷ বর্তমানে দিল্লির এক হাজার স্কুলের প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থী এসব ক্লাসে অংশ নিচ্ছে৷
দুশ্চিন্তা নয়, সুখী হও
‘সুখের ক্লাস’ চালুর এক মাস হতে না হতেই অনেক শিক্ষার্থীর দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আসার কথা জানা গেছে৷ অখিলেশ চৌহান নামের এক শিক্ষক বলেছেন, অনেক শিক্ষার্থীর মধ্যেই আগ্রহ বৃদ্ধির বিষয়টি বুঝতে পারছেন তিনি৷ আর সপ্তম গ্রেডের পৃথা বলেছেন, ‘‘হ্যাপিনেস ক্লাসে আমি নিজের ওপর আরো আস্থা পেতে শিখেছি৷ স্কুলও ভালো লাগছে৷ হোমওয়ার্ক নিয়ে আর সব সময় দুশ্চিন্তা করি না৷’’
অনুপ্রেরণা ভুটান থেকে
ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৫৫টি দেশের মধ্যে ভারতের অবস্থান ১৩৩তম৷ আর প্রতিবেশী ভুটান অনেক এগিয়ে এই সূচকে৷ দেশের উন্নয়ন পরিমাপে জিডিপির বদলে ‘গ্রস ন্যাশনাল হ্যাপিনেস’ সূচক রয়েছে তাদের৷ তারাই প্রথম পাঠ্যক্রমে ‘হ্যাপিনেস’ অন্তর্ভুক্ত করে ২০০৯ সালে, যা পরে পেরু ও মেক্সিকোসহ অন্তত ১২টি দেশে চালু করা হয়৷ ছবিতে ভুটানের সরকারি শিক্ষা কেন্দ্রে দেশীয় পোশাক বুনছেন এক শিক্ষার্থী৷