যুদ্ধের নির্মম স্মৃতিচারণমূলক ছবি পেন্টাগনে
৩১ অক্টোবর ২০১০নিজের দেশের সৈন্যদের উপর নানা যুদ্ধের নির্মম স্মৃতি আর ভয়াবহ দৃশ্য এতদিন অনেকটা তাড়া করে ফিরতো সামরিক কর্মকর্তাদের মনোভাবকে৷ কারণ কখনও এমন ছবি কিংবা প্রামাণ্য দলিলকে স্বাগত জানাতে পারেন নি সেনা কর্মকর্তারা৷ তবে এই প্রথম একেবারে পেন্টাগনেই দেখানো হলো প্রায় দেড় শ' বছরের যুদ্ধের ঘটনাসমূহের তথ্যচিত্র৷ এমনকি সেখানে উপস্থিত ছিলেন মার্কিন সামরিক বাহিনীর সর্বোচ্চ কর্মকর্তা জয়েন্ট চিফস অব স্টাফস সভাপতি অ্যাডমিরাল মাইক মালেন৷ ছিলেন বিভিন্ন সময়ের যুদ্ধে আহত-নিহত সেনা সদস্যদের পরিবারের সদস্যরাও৷
ফলে বোঝাই যাচ্ছে, এমন ঘটনাকে আর নিজেদের দুর্বলতা বলে মনে করছেন না সামরিক নীতি নির্ধারকরা৷ ইরাক ও আফগানিস্তানের মতো যুদ্ধগুলোর অদৃশ্য ক্ষতকে অনেকটা সাহসের সাথেই মেনে নিতে পারছেন তাঁরা৷ ছবিটির পরিচালক এবং প্রযোজক জন অ্যালপার্ট বলেন, ‘‘সামরিক দপ্তর এটিকে যেভাবে গ্রহণ করেছে এবং পেন্টাগনে এটির প্রদর্শনী করেছে সেটাই সবচেয়ে মজার বিষয়৷ তাঁরা এ বিষয়ে খোলামেলা কথা বলতে পছন্দ করেছেন, আসলেই এমন ঘটনা এটিই প্রথম৷''
এমনকি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ক্লান্তি বলে যাকে অভিহিত করা হয় অর্থাৎ সেই যুগের সেনা কর্মকর্তাদের যে অসহিষ্ণুতা, তার নানা চিত্রও তুলে ধরা হয়েছে ছবিটিতে৷ যেমন দেখানো হয়েছে জেনারেল জর্জ প্যাটনের ঘটনা৷ যুদ্ধে মানসিক অবসাদগ্রস্ত এক সেনা সদস্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার সময়ও তাকে থাপ্পড় মেরেছিলেন প্যাটন৷ আর একইসাথে রাগে ফেটে পড়ে প্যাটন বলেছিলেন, ‘‘আমি হাসপাতালগুলোকে এমন সব কুকুরের বাচ্চা দিয়ে ভরে ফেলতে চাই না যারা যুদ্ধ করার হিম্মত রাখে না৷''
ছবিটিতে মুখ খুলেছেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিজয়ী অনেক সেনা সদস্য৷ সেখানে তাঁরা প্রকাশ করেছেন যুদ্ধে তাদের তিক্ত অভিজ্ঞতার কাহিনী এবং যুদ্ধের পরে তাদের মানসিক অবস্থার কথা৷ যাহোক, ‘ওয়ারটর্ন ১৮৬১-২০১০' প্রথম সম্প্রচারিত হতে যাচ্ছে ১১ নভেম্বর এইচবিও'তে ৷ ১৯১৮ সালের ১১তম মাসের ১১তম দিন বেলা ১১টার সময় প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি উপলক্ষ্যে পালিত ‘ভেটারেনস ডে'তে মুক্ত করা হবে এই তথ্যচিত্র৷
প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন