1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জামার ডিজাইনে ম্যানহোলের ঢাকনা!

১২ নভেম্বর ২০১৮

পথেঘাটে ম্যানহোলের ঢাকনার দিকে কে-ইবা নজর দেয়! কিন্তু বার্লিনের এক শিল্পী সেই ‘সাধারণ' উপকরণকেই টি-শার্টের নক্সা হিসেবে বেছে নিয়েছেন৷ রাজপথকেই ‘ছাপাখানা’ করে তুলছেন তিনি৷

https://p.dw.com/p/3850w
নিজের ডিজাইন করা টি-শার্টের সঙ্গে এমা ফ্রান্স-রাফছবি: SWR

এমা ফ্রান্স-রাফ বার্লিনের পথেঘাটে হাঁটার সময়ে বেশিরভাগ সময় নীচের দিকেই তাকিয়ে থাকেন৷ অন্যরা যেখান দিয়ে উদাসীন হয়ে হেঁটে যান, সেখানে তিনি দাঁড়িয়ে যান৷ কারণ, টেক্সটাইল ডিজাইনার হিসেবে তিনি ম্যানহোলের ঢাকনা ভালোবাসেন৷ মানুষ যার উপর দিয়ে হেঁটে যায়, তা তাঁর জন্য রাজপথের উপর শিল্পের নিদর্শন৷ এমা বলেন, ‘‘আমি সব সময় সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছি৷ আমি সত্যি নতুন জিনিস খুঁজে পাই৷ তাতে বড় আনন্দ হয়৷ নতুন কিছু পাওয়া গুপ্তধন আবিষ্কারের মতো৷’’

ম্যানহোলের ঢাকনাকে টি-শার্ট ও থলের উপর প্রিন্ট করাই তাঁর আইডিয়া৷ এর জন্য সাজসরঞ্জাম হিসেবে তাঁর সেলোটেপ, রং ও গলার আদর্শ মাপ স্থির করার প্রয়োজন হয়৷ বার্লিনের প্রতীক হিসেবে ভালুকের একটি বিশেষ রূপ তাঁর বড় পছন্দ৷ এমা ফ্রান্স-রাফ মনে করেন, ‘‘নতুন মোটিফ প্রিন্ট করা সত্যি বড় আনন্দের বিষয়৷ প্রথমবার প্রিন্ট করার পর কেমন লাগছে, তা দেখে ভালো লাগে৷ ব্যাপারটা কিছুটা অদ্ভুত বটে৷ কেন এমন করি, আমি নিজেও জানি না৷ কাজটা শুরু করে খুব আনন্দ হচ্ছে৷ আমি বাইরে কাজ করতে ভালোবাসি৷ এভাবে সমাজের সঙ্গেও বেশি যোগাযোগ হয়৷ এটা একেবারে অন্য ধরনের কাজের ধারা৷’’

Euromaxx Raubdruck von Emma-France Raff
ছবি: SWR

তাঁকে দ্রুত কাজ করতে হয়৷ তা না হলে রং শুকিয়ে যায়৷ তারপর টি-শার্ট রাস্তার উপর রেখে চাপ দিতে হয়৷ ফলাফল কী হবে, তা নিয়ে মনে উৎকণ্ঠা থাকে৷ তিনি নিজের কাজকে ‘চোরাই ছাপাখানা’ হিসেবে বর্ণনা করেন৷ তবে এমা বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘‘আসলে বিষয়টি মোটেই চুরি নয়৷ কেউ এই সব ডিজাইন লক্ষ্য করে না৷ সেগুলি তুলে ধরা, তাদের নতুন মর্যাদা দেওয়াই হলো লক্ষ্য৷’’

ছোট একটা আইডিয়া থেকে তিনি ফ্যাশন লেবেল গড়ে তুলেছেন৷ ছাপার কাজও শুধু আর বার্লিনে সীমাবদ্ধ নেই৷ ম্যানহোলের সুন্দর ঢাকনা গোটা বিশ্বেই ছড়িয়ে রয়েছে৷ ভিয়েনা, প্যারিস, আমস্টারডাম বা লিসবনেও এমা মোটিফ খুঁজে পান৷ প্রত্যেকটি টি-শার্টই হাতে তৈরি এবং অভিনব৷ এমা বলেন, ‘‘মানুষ যে ম্যানহোলের ঢাকনার ডিজাইনসহ টি-শার্ট পছন্দ করেন ও তার মর্যাদা দেন, তা সত্যি ভালো৷ অন্য ধরনের টি-শার্টের মালিক হয়ে তাঁরা ভেবে দেখেন, তাঁরা হাতে তৈরি এমন পোশাক পরতে চান কিনা, যা যেনতেন টি-শার্ট নয়, বরং বিশেষ একটি শহরের নিজস্ব রূপ৷’’

এমা ফ্রান্স-রাফ এই উদ্যোগেই থেমে নেই৷ তিনি আরো এক নতুন মোটিফ পরীক্ষা করে দেখতে চান৷ রাস্তার মাঝেই তাঁর স্টুডিও৷ অনেক পথচারীও আগ্রহ দেখান৷ একটি উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘আজ সকালে এক নারী বললেন, বার্লিনে তিনি কখনো এমন দৃশ্য দেখেননি৷ তখন আমি তাঁকে নিজের কাজ সম্পর্কে বুঝিয়ে বললাম৷ তবে মানুষ যে কখনো এমন কিছু দেখেননি, তা আমরা অবশ্যই বুঝতে পারি৷’’

ম্যানহোলের ঢাকনাকে ঘিরে এত কাণ্ডকারখানা! এর ফলে পুলিশও বার বার বিরক্ত হয়৷ তবে এখনো পর্যন্ত তাঁদের মধ্যে কেউ শিল্পের কাজে বাধা দেননি৷ এমা ফ্রান্স-রাফ বলেন, ‘‘আসলে কোনো গোলমাল হয়নি৷ বাকি মানুষের মতো তাঁদেরও এটা ভালোই লাগে৷ কাজের আগে ও পরে জায়গাটা পরিষ্কার করি৷ জায়গাগুলি কখনোই এত পরিষ্কার ছিল না৷’’

আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এমা ম্যানহোলের ঢাকনার প্রতি মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারছেন৷ এ বিষয়ে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যাচ্ছে৷

নর্বার্ট ল্যুবার্স/এসবি