1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জঙ্গলে মৌচাষ

ক্লাউডিয়া লাশচাক/এসি১৪ অক্টোবর ২০১৫

জঙ্গলকে বাঁচাতে গেলে আগে এলাকার মানুষদের জীবনধারণের ব্যবস্থা করতে হবে৷ মেক্সিকোর ইয়ুকাতান উপদ্বীপের মায়া উপজাতির গ্রামগুলিতে সেই এক্সপেরিমেন্ট চলেছে৷ চাষবাস আর কাঠকয়লা পোড়ানোর সঙ্গে মৌমাছি পোষা৷

https://p.dw.com/p/1GnNF
Bild des Tages Biene in Köln
ছবি: picture-alliance/dpa/O. Berg

‘‘আমি যখন জঙ্গলে থাকি, তখন আমার ভালো লাগে৷ বুক ভরে নিঃশ্বাস নিই, পাখির ডাক শুনি৷ জঙ্গলে মায়াবী কিছু একটা আছে বলে আমার ধারণা, কোনো দেবতা কিংবা আত্মা, যিনি এই জঙ্গলকে রক্ষা করেন৷ সেই দেবতা এই অরণ্য সৃষ্টি করে আমাদের দিয়েছেন, যাতে আমরা জঙ্গলের দেখাশোনা করে তা থেকে জীবনধারণ করতে পারি৷''

Mexiko Kukulcan
মেক্সিকোর বিখ্যাত কুকুলকান মন্দির...ছবি: Cris Bouroncle/AFP/Getty Images

গাব্রিয়েল এক ও তাঁর গাঁয়ের লোকজনের কাছে এই জঙ্গলই হলো বসবাস এবং জীবিকা অর্জনের স্থান৷ জঙ্গলে মৌমাছি পোষা হয়৷ এই মৌমাছিরা যে মধু তৈরি করে, তা বিশেষভাবে মিষ্টি৷ মায়া উপজাতির গ্রামগুলিতে মৌচাষের প্রথা বহুদিনের৷ গাব্রিয়েল এক মৌচাষের কাজ শিখেছেন তাঁর বাবার কাছ থেকে৷ এই মধু বিক্রি হয় সারা মেক্সিকোতে – এমনকি ইউরোপেও রপ্তানি করা হয়৷

উয়েচেন বালাম গ্রামের বাসিন্দা গাব্রিয়েল এক কৌয়ো বলেন, ‘‘বেশি মধু হলে আমাদের রোজগারও বাড়বে৷ যদিও আমাদের আরো বিনিয়োগ করতে হবে, সব যন্ত্রপাতি কিনতে হবে৷ কিন্তু তাহলেও কাজের কাজ হবে, কেননা আমরা চাষবাস থেকে যা রোজগার করি, মৌচাষ থেকে তার চেয়ে অনেক বেশি আয় হয়৷''

বন কেটে ফসলের খেত, কাঠ পুড়িয়ে কয়লা

উয়েচেন বালাম গ্রামটি মেক্সিকোর ইয়ুকাতান উপদ্বীপে, গ্রীষ্মকালীন অরণ্যের মধ্যে অবস্থিত৷ এখানে রোজগারের বেশি পথ নেই৷ খেতের ফসল থেকেই অধিকাংশ মানুষের দিন চলে৷ কাজেই বন কেটে চাষের জমি তৈরির প্রবণতা বেড়ে চলেছে৷ আইইউসিএন পরিবেশ সুরক্ষা সংগঠন আজ প্রায় ছ'মাস হলো গাঁয়ের বাসিন্দাদের সঙ্গে কাজ করছে৷ উদ্দেশ্য: অর্থোপার্জনের নতুন পন্থা খুঁজে বার করে জঙ্গলকে বাঁচানোর প্রচেষ্টা৷ আইইউসিএন-এর লুসিয়ানা লুডলো পাস বলেন, ‘‘এখনই আগের মতো আর অত প্রজাতি নেই, গাছপালা, জীবজন্তুদের সংখ্যা স্পষ্টই কমে এসেছে৷ স্থানীয় মানুষজন জঙ্গলকে ব্যবহার করেন, জঙ্গল থেকে খাদ্য সংগ্রহ করেন, ঘর তৈরির জন্য গাছ কাটেন৷''

ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর দ্য কনজারভেশন অফ নেচার-এর কর্মীরা গাঁয়ের মানুষজনকে তারা কীভাবে জঙ্গল ব্যবহার করেন, খেতে কী ফসল লাগান, সে সব বিষয়ে প্রশ্ন করেন৷ সেই তথ্য অনুযায়ী অন্যান্য রোজগারের পথ খোঁজা হবে, যাতে জঙ্গলকে বাঁচানো যায়৷ কাঠকয়লা তৈরি রোজগারের আরেকটা উপায়৷ মান্ধাতার আমলের পদ্ধতিতে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি হয়৷ মাত্র কয়েকটি গ্রামের কাঠকয়লা তৈরির সরকারি অনুমতি আছে৷ এ গ্রামের বাসিন্দারাও বছর তিনেক আগে লাইসেন্স পেয়েছেন৷ গাব্রিয়েল এক বলেন, ‘‘আমরা বিশেষ করে বাঁকা, ভাঙাচোরা গাছগুলো খুঁজে বের করে, তা থেকে কাঠকয়লা তৈরি করি৷ শুধু সেই ধরনের গাছ, যা অন্য কোনো কাজে লাগবে না৷ ওদিকে এই বাঁকাচোরা গাছগুলো আবার যে সব গাছ বড় আর খাড়া হয়ে উঠবে, সেগুলোকে ঠিকমতো গজানোর পথে বাধা সৃষ্টি করে৷''

মৌমাছি, মধুচাষ এবং পরিবেশ

কাজেই জঙ্গল থেকে কাঠকয়লা তৈরিও টেকসই হতে পারে৷ উয়েচেন বালাম গাঁয়ের মহিলারা রোজগারের একটা নতুন পথ আবিষ্কার করেছেন: তাঁরা একটি কুটিরশিল্প সমবায় প্রতিষ্ঠা করেছেন৷ প্রত্যেকে তাদের আয়ের একটা অংশ একটি তহবিলে জমা দেন৷ সেই অর্থে কাপড় কেনা হয়৷ কাজেই ইয়ুকাতানের গ্রামের বাসিন্দারা ধীরে ধীরে এক নতুন ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান