মোদী লাদাখে কেন
লাদাখে প্রধানমন্ত্রী মোদী। লে শহর থেকে কিছুটা দূরে ১১ হাজার ফুট উচ্চতার নিমুতে ভারতীয় সেনার কম্যান্ডারদের কাছ থেকে পরিস্থিতি বুঝলেন। কথা বললেন জওয়ানদের সঙ্গে। ভাষণ দিলেন। প্রশ্ন হলো, কেন মোদীর এই লাদাখ সফর?
চীনকে সরাসরি বার্তা
গালওয়ানে ভারত-চীন সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়েছে। তারপর চীনের উদ্দেশে তেমন কড়া বার্তা দেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই রক্তাক্ত সংঘাতের আড়াই সপ্তাহ পরেও সেনা সরেনি। সেনা পর্যায়ে আলোচনায় দ্রুত কোনও ফল হচ্ছে না। এই অবস্থায় লাদাখে দাঁড়িয়ে চীনকে কড়া বার্তা দিতে চেয়েছেন মোদী।
সেনার মনোবল বাড়ানো
বিশ্বের সর্বত্র সেনার মনোবল বাড়ানোর জন্য রাষ্ট্রনেতারা ফরোয়ার্ড পোস্টে যান, জওয়ানদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের মনোবল বাড়ান। দেশের লোককে আশ্বস্ত করেন। গালওয়ানের সংঘর্ষের পর মোদীও সেটাই করলেন।
দেশের লোককেও বার্তা
শুধু সেনা নয়, দেশের লোকের কাছেও বার্তা দেওয়া জরুরি ছিল প্রধানমন্ত্রীর। কারণ, সর্বদলীয় বৈঠকে তাঁর বলা কথা নিয়ে প্রচুর বিতর্ক হয়েছে। এই অভিযোগও উঠেছে, চীনের প্রতি মোদীর মনোভাব অনেকটা নরম।
মোদীার ত্রিমুখি নীতি
চীন নিয়ে মোদী ত্রিমুখি নীতি নিয়েছেন। তিনি চীনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল স্ট্রাইক করছেন। শান্তির জন্য, সেনা সরাতে সামরিক স্তরে কথা চলছে, কূটনৈতিক স্তরেও সক্রিয়তা বাড়ছে। তৃতীয় নীতি হলো, সামরিক প্রস্তুতি। প্রয়োজনে সীমান্তে সংঘাতেও ভারত পিছপা নয়, এই কথাটা চীনকে বুঝিয়ে দেওয়া। লাদাখ যাওয়া তাই জরুরি ছিল।
রাজনৈতিক স্বার্থেও জরুরি
লাদাখ গিয়ে চীনকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেন, সেনার মনোবল বাড়ান, দেশের ভিতর এই বার্তাটা রাজনৈতিক কারণেও জরুরি ছিল। জাতীয়তাবাদকে হাতিয়ার করে ভোট-যুদ্ধে জেতা যায়, এটা আগেই দেখিয়েছেন মোদী। কয়েক মাস পরে বিহারে গুরুত্বপূর্ণ ভোট।
রাজনাথের প্রতিক্রিয়া
প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং-এর লাদাখ যাওয়ার কথা ছিল। শেষ মুহূর্তে তাঁর সফর বাতিল হয়। তারপরেই হঠাৎ মোদী লাদাখ পৌঁছে যান। রাজনাথ জানিয়েছেন, ''ভারতীয় সেনার হাতে দেশের সীমান্ত নিরাপদ। মোদীজি লাদাখ সফর করে সেনার মনোবল নিশ্চিতভাবেই আরও বাড়িয়ে দিলেন।''
নেভার গিভ আপ
প্যাংগং লেকের কাছে একটা বিশাল ব্যানার লাগিয়েছে ভারতীয় সেনা। তাতে লেখা 'নেভার গিভ আপ', মানে কখনও হার মানা নয়, হাল ছাড়া নয়। লাদাখে ভারতীয় সেনাকে মোদী এটাই বলতে চেয়েছেন। ভারতীয় সেনার অদম্য সাহস, বীরত্ব ও হার না মানা মনোভাবের কথা লাদাখে বারবার উল্লেখ করেছেন মোদী।