1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ফিরে এলেন আডবানি

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি১২ জুন ২০১৩

নরেন্দ্র মোদীকে আসন্ন নির্বাচনে দলের কাণ্ডারি করায় প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আডবানি তার প্রতিবাদে দলের সব পদ থেকে সরে দাঁড়াতে বিজেপিতে যে সংকট তৈরি হয়েছিল আডবানি তাঁর ইস্তফা তুলে নেয়ায় আপাতত মেঘ কেটে গেছে৷

https://p.dw.com/p/18nnU
ছবি: Raveendran/AFP/Getty Images

সব ভালো যার শেষ ভালো৷ তবে কতটা ভালো তা সময়ই বলবে৷ বিজেপির ৮৫ বছরের প্রবীণতম নেতা লালকৃষ্ণ আডবানি দলীয় সব পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত অবশেষে তুলে নিতে সম্মত হয়েছেন৷ মোদীর নয়া অভিষেক মেনে নিয়েছেন আডবানি৷ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব গত ৩৬ ঘণ্টা ধরে দফায় দফায় তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করলেও শেষপর্যন্ত হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ আরএসএস-এর হস্তক্ষেপে তা সফল হয়েছে৷

দলের প্রধানমন্ত্রী পদের প্রার্থী কে হবেন, তা নিয়ে আডবানির সঙ্গে আলোচনা করার পর নাম ঘোষিত হবে৷ তবে এই শান্তি সূত্র কতদিন বহাল থাকবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধন্দ কাটেনি৷ তাঁদের মতে, আডবানিকে সম্মানজনকভাবে বিদায় দিয়ে মোদীর নতুন নেতৃত্বকে শেষপর্যন্ত জায়গা করে দেবে বিজেপি৷

Indien Gujarat Narendra Modi
নরেন্দ্র মোদীকে দলের কাণ্ডারি করায় আডবানি সব পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেনছবি: AP

আগামী নির্বাচনে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে দলের নেতৃত্ব দেয়ায় আডবানি যারপরনাই অসন্তুষ্ট ছিলেন৷ তাঁর মতে, মোদী গোটা ভারতকে নেতৃত্ব দেবার উপযুক্ত নন৷ এই ইস্যু নিয়ে দলের মধ্যে সংকট সৃষ্টি করার পেছনে আডবানির কূটনৈতিক চাল থাকতে পারে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা৷

কী ছিল সেই চাল? আডবানিকে যাঁরা চেনেন এবং যাঁরা জানেন তাঁর কাজের ধারা, তাঁরা মনে করেন এতবড় সিদ্ধান্তের পেছনে আছে ২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচন৷ আডবানির ধারণা, ২০১৪ সালের নির্বাচনে কোনো দলই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবেনা৷ ত্রিশঙ্কু সংসদ হলে ঐ পরিস্থিতিতে অ-কংগ্রেস এবং বিজেপির অ-মোদী শাখার বিকল্প নেতা হিসেবে তিনি নিজেকে তুলে ধরতে পারবেন৷ অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী পদের স্বাভাবিক পছন্দ হতে পারবেন৷

লক্ষণীয়, দলের সব পদ থেকে সরে দাঁড়ালেও দলের প্রাথমিক সদস্যপদ কেন ছাড়লেন না?এর পেছনেও আছে রাজনৈতিক চাল৷ বর্তমানে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের চেয়ারম্যান তিনি৷ সদস্য পদ ছাড়লে সেটাও ছাড়তে হয় তাঁকে৷

ছকের ভিত্তি ১৯৮০-র দশকের শেষাশেষি রাজনৈতিক পরিস্থিতির বাধ্যবাধকতায় ইউনাইটেড ফ্রন্ট সরকার গঠিত হয়েছিল প্রয়াত ভি.পি সিং-এর নেতৃত্বে৷ তখন রাজনৈতিক মতাদর্শের পরোয়া না করে সব দল একজোট হয়ে তৃতীয় ফ্রন্টের সমর্থনে এগিয়ে এসেছিল কংগ্রেস সরকারকে উচ্ছেদ করতে৷ তার মধ্যে বামদলও ছিল৷

হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ আরএসএস-এর নির্দেশেই যে মোদীকে নির্বাচনে দলের মুখ করা হয়েছে, বিজেপি নেতৃত্ব সেটা অস্বীকার করে আডবানিকে বোঝাতে চাইছে, দলের তৃণমূল স্তরের কর্মীদের ইচ্ছাতেই মোদীকে নির্বাচনী হাল ধরার দায়িত্ব দেয়া হয়৷ সবাই জানে, মোদীর হিন্দুত্ববাদে কোন ভেজাল নেই৷ এটাকে মূলধন করেই মোদী গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী পদে হ্যাট্রিক করেন৷ হালের উপ-নির্বাচনে কাউকে জিততে দেননি তিনি৷

মোদীর এই নয়া অভিষেকে এনডিএ শরিক দলগুলির অবস্থান কী? পাঞ্জাবের আকালি দল মোদীর অভিষেককে স্বাগত জানিয়েছে৷ ওড়িষার বিজু জনতা দল এবং মহারাষ্ট্রের শিবসেনা নিমরাজি৷ সবথেকে ফাঁপরে পড়েছে বিহারে নীতীশ কুমারের সংযুক্ত জনতা দল৷ সংখ্যালঘু ভোট ধরে রাখতে হলে নীতীশ কুমারের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী পদে মোদীকে মেনে নেয়া সম্ভব হবেনা৷ তাই তিনি বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিংকে বারংবার চাপ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করার জন্য৷ কিন্তু রাজনাথ সিং তা এড়িয়ে গেছেন৷ সম্ভবত শুধু নীতীশ কুমারকেই নয়, আডবানিকেও খুশি রাখতে৷

অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নাম ঘোষিত না হওয়া অবধি এনডিএ ছাড়ার প্রশ্ন আসছেনা নীতীশ কুমারের৷ নীতীশ কুমারের এই সংকটের ফায়দা নিতে ময়দানে নেমে পড়েছে কংগ্রেস৷ নীতীশ কুমারকে বিজেপি সঙ্গ ছাড়ার জন্য ক্রমাগত চাপ দিয়ে চলেছে৷ বোঝাতে চেষ্টা করছে, ধর্মনিরপেক্ষ জোট গড়ার এটাই মোক্ষম সময়৷ নীতীশ কুমারের সংযুক্ত জনতা দল ২০১৪-এর নির্বাচনের আগে বিজেপি-জোট ছাড়লে ধাক্কা খাবে বিজেপি সন্দেহ নেই ৷ তার ফায়দা তুলবে কংগ্রেস৷ আপাতত কংগ্রেসের সে গুড়ে বালি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য