মোটরক্রসে ইরানের বারান হাদিজাদেহ
ইরানে এখনো নারীদের রাস্তায় মোটরবাইক চালানোর অনুমতি নেই৷ তাই বলে পুরুষদের রেস দেখায় নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেননি বারান হাদিজাদেহ৷ নেমে পড়েছেন মোটরক্রস রেসে৷ দেখুন ছবিঘরে...
দীর্ঘ প্রস্তুতি
ইরানে মেয়েদের অনেক অধিকারই এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি৷ অনেক ক্ষেত্রে তাই নারী পুরুষদের চেয়ে পিছিয়ে৷ ইরানের দক্ষিণের শহর ইসফাহানের মেয়ে বারান হাদিজাদেহ সীমিত সুযোগের মধ্যেই এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন৷ তাই শৈশব থেকেই কখনো ভলিবল, কখনো বাস্কেটবল, কখনো বা সাঁতার বা কারাতে নিয়ে ব্যস্ত থেকেছেন৷ মোটরক্রস রেসে তার সুফল পাচ্ছেন এখন৷
এক সময়ের দর্শক
খুব শখ ছিল মোটর সাইকেল চালানোর৷ কিন্তু ইরানের মেয়েদের সেই অধিকার নেই৷ কী করা যায়? প্রথমে শুরু করলেন পুরুষদের রেস দেখা৷ অনেক দেখেছেন, দেখে দেখে শিখেছেনও অনেক৷
কেন মোটরক্রসে?
একদিকে মোটরবাইক চালানোর শখ, অন্যদিকে মেয়েদের জন্য রাস্তায় মোটর সাইকেল চালানোয় নিষেধাজ্ঞা— মাঝামাঝি পথে তো আসতেই হতো৷ সেই সুযোগই দিয়েছে মোটরক্রস রেস৷ মোটরক্রস রেস মানে লোক চলাচলের পথ থেকে দূরের কোনো মাঠ, টিলা, পাহাড়ে মোটরবাইক চালানো৷ মেয়েদের জন্যও সেখানে আইন কোনো বাধা নয়৷
পরিচয়পত্র নেই
রাস্তায় চালানোর সুযোগ নেই বলে ইরানের মোটরসাইকেল ও অটোমোবাইল ফেডারেশন (এমএএফআইআরআই)-র পরিচয়পত্র পাননি বারান হাদিজাদেহ৷ তবে দেশে মেয়েদের মোটরক্রস রেসে অংশ নিচ্ছেন ঠিকই৷
নিয়মিত প্র্যাকটিস
সপ্তাহে অন্তত তিনদিন তেহরান শহরের বাইরের প্রকৃতিতে ডুবে যান মোটরবাইক নিয়ে৷ ঘণ্টার পর ঘণ্টা দুর্গম পথ ধরে এগিয়ে চলে ভারী মোটরবাইক৷ এত বড় মোটরবাইক সামলানো ভীষণ কঠিন৷ শরীরের বিভিন্ন পেশি শক্তিশালী করতে তাই নিয়মিত জিমেও যেতে হয় তাঁকে৷
ভাঙা নাক নিয়েই খুশি
দুর্গম পথে চালাতে গিয়ে অনেকসময় মোটরবাইক থেকে পড়েও যান৷ ফলে ব্যথা সইতেই হয়৷ একবার নাক ভেঙেছে, কোমরে, হাঁটুতে ব্যথা পেয়েছেন অনেক৷ তাতে দমে যাননি, বরং শরীরের নানান চোট সম্পর্কে প্রশ্ন করলে হাসিমুখে বারান বলেন, ‘‘স্বপ্ন তো সহজে পূরণ হয় না৷’’
যে স্বপ্ন এখনো অধরা
এখন শুধু ইরানেই মোটরক্রস রেসে অংশ নিতে পারছেন বারান হাদিজাদেহ৷ ৩০ বছর বয়সি এই মোটরসাইক্লিস্টের স্বপ্ন— একদিন দেশের বাইরের প্রতিযোগিতাতেও অংশ নেবেন৷ এছাড়া মোটরাবাইক নিয়ে সারা বিশ্ব ঘুরে দেখারও ইচ্ছে আছে তার৷