মেক্সিকো উপসাগরে ‘এক্সোন ভালডেজ’ ঘটতে আর কতো দেরী?
১ মে ২০১০বিপি সংস্থার মূল আশা হল দু'টি বিকল্প কূপ খনন, যা করতে তিন মাস অবধি সময় লেগে যাবে৷ কিন্তু তার আগে কোনো স্বল্পমেয়াদী সমাধান চাই৷ বিপি'র হাতে এ'ধরণের দু'টি সমাধান রয়েছে৷ প্রথমত, আন্ডারওয়াটার রোবোট দিয়ে ভালভগুলো বন্ধ করার প্রচেষ্টা, বিশেষ করে যখন তথাকথিত ব্লোআউট প্রিভেন্টারগুলো ব্যর্থ হয়েছে৷ কিন্তু রোবোটগুলো এযাবৎ সফল হতে পারেনি৷
দ্বিতীয়ত, বিপি তিনটি ‘‘কনটেইনমেন্ট চেম্বার''-এর অর্ডার দিয়েছে৷ এগুলি হল সুবিশাল ৭৩ টন ওজনের বাক্সের মতো দেখতে ফানেল, যেগুলি কূপ এবং অপর দু'টি লীকের ওপর উল্টো করে বসিয়ে দেওয়া হবে৷ ফানেল দিয়ে তেল উঠে একটি ড্রিলিং জাহাজে গিয়ে জমা হবে৷ মুশকিল এই যে, দেড় হাজার মিটার গভীর জলে এ'ধরণের ফানেল কাজ করবে কিনা, তা কারো জানা নেই৷
সমুদ্রগর্ভে যদি না হয়, তা'হলে দেখতে হবে জলের উপরিভাগে কি করা সম্ভব৷ সেখানে বাতাস-পোরা প্লাস্টিকের ‘বুম' দিয়ে তেল রোখার চেষ্টা বাতাস এলে এবং ঢেউ উঠলেই বিপন্ন হচ্ছে৷ বাকি থাকছে রাসায়নিক পদ্ধতি: অর্থাৎ তথাকথিত ‘ডিস্পের্সান্ট'-এর ব্যবহার৷ এই ডিস্পের্সান্ট তেল যা'তে জমাট না বাঁধতে পারে, তার ব্যবস্থা করে৷ বাকি থাকছে একটি নেহাত বহির্প্রক্রিয়া, অর্থাৎ বুম দিয়ে ভারী তেল এক জায়গায় জমা করে, তা নিয়ন্ত্রিতভাবে পুড়িয়ে দেওয়া৷ এ' সবই চলেছে, এবং তা বিপি'র মতো একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো একটি ধনী দেশের সব সামর্থ্য প্রয়োগ করে৷
অথচ আপাতত যে হারে তেল বেরচ্ছে, তা'তে ঠিক ৫০ দিনের মধ্যে এবারকার তেল দুর্ঘটনা ১৯৮৯ সালের এক্সোন ভালডেজ বিপর্যয়কে ছাড়িয়ে যাবে৷ সেটা ঘটেছিল সুদূর প্রিন্স উইলিয়াম সাউন্ডে৷ কিন্তু এটা ঘটছে যুক্তরাষ্ট্রের খিড়কির পুকুরে, এই যা তফাৎ৷
প্রতিবেদক: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী
সম্পাদনা: হোসাইন আব্দুল হাই