মৃত স্বামীর সঙ্গে ‘সহজীবন’!
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪দক্ষিণ কোরিয়ার ওয়াইটিএন চ্যানেল প্রকাশ করার পর থেকেই তোলপাড় শুরু হয়েছে খবরটি নিয়ে৷ পরিচয় গোপন রেখে এক ব্যক্তি গত ডিসেম্বরেই পুলিশকে জানিয়েছিলেন যে, সৌলের এক অ্যাপার্টমেন্টে এক ভদ্রমহিলা তাঁর মৃত স্বামীর সঙ্গে বসবাস করছেন৷ পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত শুরু করলেও খবরটি প্রকাশ করেনি৷ ওয়াইটিএন-এর খবরে জানানো হয়, ৪৭ বছর বয়সি ফার্মাসিস্ট চো-র স্বামী ক্যানসারে ভুগে ২০০৭ সালে মারা যান৷ কিন্তু চো তাঁর স্বামীর মৃতদেহের সৎকার না করে নিয়ে আসেন নিজের অ্যাপার্টমেন্টে৷ এরপর সাতটি বছর স্বামীকে কাছছাড়া করেননি চো!
নিজে ফার্মাসিস্ট হওয়ার সুবাদে চো জানেন কোন ওষুধের কার্যকারিতা কেমন৷ তাছাড়া নিজের একটা ওষুধের দোকানও আছে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সৌলে৷ নিজের দোকানের ওষুধ আর ফার্মাসিস্ট হিসেবে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে মিশরীয়দের মতো ‘মমি' করে স্বামীর দেহটাকে নিজের ঘরেই রেখে দিয়েছিলেন চো৷ ঘটনাটা অবিশ্বাস্য, তবে বার্তা সংস্থা এএফপির কাছে সৌলের পুলিশই এর সত্যতা স্বীকার করেছে৷ সাত বছর পরও মৃতদেহ পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থায় দেখে পুলিশও অবাক৷ একেই বোধহয় বলে বিজ্ঞান! তাই বিস্ময় নিয়েই পুলিশের এক কর্মকর্তা এএফপিকে বলেছেন, ‘‘কীভাবে এটা সম্ভব হলো তা আমরা বুঝতে পারছি না৷''
তবে মৃতদেহ যে মমি করে দীর্ঘদিন রেখে দেয়া যায় এটা সবাই জানেন৷ এছাড়া ভালোবাসার টানে, কিংবা কুসংস্কারের জেরে ভারতে সদ্য বৈধব্য বরণ করা নারীদের মৃত স্বামীর সঙ্গে ‘সহমরণ'-এ যাবার দৃষ্টান্তও আছে ভুরি ভুরি৷ কিন্তু মৃত স্বামীর সঙ্গে ‘সহজীবন'-এর কথা কি শুনেছেন কখনো? দক্ষিণ কোরিয়ার এক নারী স্বামীর মৃত্যুর পরও তাঁর সঙ্গে বিচ্ছেদ না মেনে বোধহয় নীরবেই জানালেন, ভালোবাসা বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব, সংস্কার-কুসংস্কার, সামাজিক ভুল-শুদ্ধের বাছবিচার কিংবা লাভ-ক্ষতির হিসেব অনেক সময় একেবারেই মানে না৷
ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত করেছে সৌল পুলিশ৷ অভিযুক্ত নারীকে এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি৷ পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শেষে মৃতদেহ সৎকার করার আইন লঙ্ঘনের অপরাধে তাঁর শাস্তি হতে পারে৷
এসিবি/ডিজি (এএফপি, এপি)