1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মুমূর্ষু ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলি পরিষেবা সংস্থা 

৯ অক্টোবর ২০১৯

ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেড এবং মহানগর টেলিফোন নিগম বন্ধ করে দিতে চাইছে ভারত সরকার৷ কয়েক বছর ধরে ধুঁকছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা দু’টি৷  উৎসবের মরশুমেও সময়ে বেতন পাচ্ছেন না এই দুই সংস্থার মোট এক লক্ষ ৯৮ হাজার কর্মী৷ 

https://p.dw.com/p/3QzXa
Bildergalerie Kumbh Mela (das größte religiöse Fest Indiens)
ছবি: DW/S. Waheed

সরকারি টেলি পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা দু’টির লাইনম্যান থেকে উচ্চপদস্থ আধিকারিক, ‌এমনকি ভেন্ডররাও আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন৷ ভয় চাকরি হারানোর, সংস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ার৷  জনগণের দীর্ঘদিনের ভরসার সংস্থাটির পুনর্গঠনে কোনও আর্থিক প্যাকেজের ঘোষণা করেনি নরেন্দ্র মোদী সরকার৷  ফোর-‌জি স্পেকট্রাম থেকে দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে৷  এমনকী, সংস্থার হাতে সরকারেরই দেওয়া ‘‌লেটার অফ কমফোর্ট'‌ থাকা সত্ত্বেও ঋণ দিচ্ছে না কোনও ব্যাঙ্ক৷  সবমিলিয়ে বঞ্চনা ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলছেন সংস্থার কর্মীরা৷

 

এদিকে, এই দুই সংস্থাকে আর্থিক সাহায্য দিতেও রাজি নয় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক৷ বরং ভারত সঞ্চার নিগম লিমিটেড (বিএসএনএল) এবং মহানগর টেলিফোন নিগম (এমটিএনএল) বন্ধ প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ৷  বেসরকারি টেলিকম সংস্থার রমরমা এবং সরকারের প্রবল উদাসিনতার জেরে ক্রমশ বাজার হারিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা৷   আয় এবং ব্যয়ের ফারাক বেড়েছে ক্রমশ৷ সংস্থার কর্তারা বলছেন, আর্থিক সাহায্য এখনই প্রয়োজন তা না পেলে এমনিতেই মুখ থুবড়ে পড়বে ভারের একমাত্র সরকারি টেলি পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা৷  সরকারের টেলি যোগাযোগ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে অর্থমন্ত্রককে সুপারিশ করা হয়েছিল, বিএসএনএলের পুনরুদ্ধারে এখনই অন্তত ৭৪ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হোক৷   কিন্তু সেই প্রস্তাব আপাতত ফিরিয়ে দিয়েছে অর্থমন্ত্রক৷ 

দিলীপ সাহা

ডয়চে ভেলেকে এওয়া সাক্ষাৎকারে সঞ্চার নিগম এক্সিকিউটিভ্স অ্যাসোসিয়েশন-‌এর সর্বভারতীয় সহকারি সাধারণ সম্পাদক দিলীপ সাহা জানালেন, ‘‌‘‌বহু দশক ধরে সারা দেশে ল্যান্ডলাইন টেলিফোন পরিষেবা দিয়ে আসছে বিএসএনএল৷   দু-‌দশক আগে মোবাইল পরিষেবা দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে৷   শুরুর দিকে সংস্থার সাড়ে ছ'‌লক্ষ কর্মী ছিল তখনও লাভের মুখ দেখেছে সংস্থাটি৷  সরকারের ভ্রান্তনীতির কারণে আজ বিএসএনএলের মতো সরকারি সংস্থা লোকসানে চলছে৷   বেসরকারি সংস্থাকে তুলে ধরার নীতিই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে ডুবিয়েছে৷ বেসরকারি সংস্থা গুলি এক লক্ষ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে রেখেছে৷   অথচ বিএসএনএলের ঋণের পরিমাণ মাত্র ২০ হাজার কোটি টাকা৷  সরকারের সদিচ্ছা থাকলে আর্থিক সঙ্কট থেকে বের করে আনা মোটেই অসম্ভব নয়৷   কিন্তু, কোনো অজানা কারণে সরকারের সেই সদিচ্ছা নেই'‌'৷  ‌ তিনি জানিয়েছেন, টেলিকম সংস্থার সমস্ত কাজ প্রায় বন্ধ৷  নতুন সংযোগ থেকে রক্ষণাবেক্ষণ, টাকা অভাবে সবই থমকে রয়েছে৷ 


সারা ভারতে বিএসএনএল কর্মীর সংখ্যা প্রায় এক লক্ষ ৭৬ হাজার৷  এমটিএনএলের কর্মী সংখ্যা প্রায় ২২ হাজার৷ মাসিক বেতন বাবদ বিএসএনএলের ব্যয় হয় ৭৫০-‌৮৫০ কোটি৷ এমটিএনএলের বেতন বাবদ ব্যয় ১৬০ কোটি টাকা৷   বিএসএনএল কর্মীরা  ফেব্রুয়ারির বেতন হয়েছিল মার্চের শেষে৷   গত আগস্টের বেতন পেয়েছেন ১৮ দিন পর৷   জুলাইয়ের বেতন পেয়েছেন ৫ আগস্ট৷  এ ব্যাপারে মোদী সরকারের বক্তব্য, সরকারি কোষাগারে টাকা নেই৷ আবার অত্যধিক কর্মী বড় সমস্যা৷   সেই জন্য স্বেচ্ছাবসরের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে৷ 


জয়চে ভেলেকে এই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার এসডিই(‌আইপি)‌ সলিল পোদ্দার জানিয়েছেন, ‘‌‘‌এত বছর নিয়মিত বেতন ও ভাতা পেয়ে এসেছেন বিএসএনএল কর্মীরা৷  একটা ধরাবাহিকতা ছিল৷   কিন্তু, গত কয়েক মাস ধরে বিএসএনএল কর্মীদের বেতন ও অন্যান্য প্রাপ্য টাকা আটকে রয়েছে৷ পরিষেবা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের জোগান বন্ধ করা হয়েছে৷  এর ফলে সামগ্রিক ভাবে কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে৷   এখন সরকার যদি এগিয়ে এসে সমাধান না করে, তাহলে বিএসএনএল কর্মী ও তাঁদের পরিবার শুধু নয়, ল্যান্ডলাইন টেলিফোন পরিষেবা ধ্বংস হবে৷ অসুবিধায় পড়বেন সাধারণ মানুষ৷   সরকারি দপ্তর যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে পারে৷  '‌'‌

একের পর এক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা হয় বন্ধ করে, নতুবা ব্যক্তিগত মালিকানার হাতে তুলে দিয়ে কার্যত দেশকে বিক্রি করে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন অনেকে৷   তবে, সরকারের উদাসিনতা ও ভ্রান্ত নীতি আখেরে সাধারণ মানুষের সমস্যার কারণ হবে, এমনটাই মনে করছেন আধিকারিকদের একাংশ৷ 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য