1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নারী মুক্তিযোদ্ধা

২২ আগস্ট ২০১২

দুই বোন মধুমিতা বৈদ্য এবং আলো রানী বৈদ্য দুই নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধের কাজ করেন৷ চিকিৎসা সেবা দেন বিশ্রামগঞ্জ হাসপাতালে৷ স্বাধীন দেশেও সুইজারল্যান্ড ও নরওয়ের চিকিৎসকদের সাথে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করেছেন৷

https://p.dw.com/p/15tz0
Bildunterschrift:  Freiheitskämpferin Alo Rani Baidyo (Mitte) und ihre Sohn und Tochter in Chittagong, Bangladesch Text: Freiheitskämpferin Alo Rani Baidyo (Mitte) und ihre Sohn und Tochter in Chittagong, Bangladesch Stichwort:  Datum: 27.08.2012 Copyright: DW/ A H M Abdul Hai, Freiermitarbeiter, Bengali, DW
ছবি: DW

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ১৯৫৬ সালের ১১ই মে জন্ম গ্রহণ করেন আলো রানী বৈদ্য৷ বাবা ক্ষিতিষ চন্দ্র বৈদ্য এবং মা মালতী রানী বৈদ্য৷ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর সময় আবুল কাশেম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন আলো রানী৷ আর তাঁর বড় বোন মধুমিতা বৈদ্য পড়তেন নবম শ্রেণিতে৷

বাবা ছিলেন ব্রিটিশ সরকারের সৈনিক৷ এছাড়া সামাজিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় দেশপ্রেমী ব্যক্তিত্ব৷ তাই স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে তিনি নিজে যেমন যুদ্ধের কাজে আত্মনিয়োগ করেছেন, ঠিক তেমনি নিজের ছেলেমেয়েদের দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য কাজে যোগ দিতে উৎসাহিত করেছেন৷ ফলে মা দুই মেয়েকে নিয়ে ভারত চলে যান৷ সেখানে গিয়ে আলো রানী এবং মধুমিতা বৈদ্য মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন৷

প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমি ছেড়ে ভারত যাওয়ার ঝুঁকিপূর্ণ এবং বেদনাহত দিনগুলি সম্পর্কে আলো রানী বৈদ্য ডয়চে ভেলে'কে বলেন, ‘‘আমরা যখন দেশ ছেড়ে যাই, তখন আমার বয়স মাত্র ১৫-১৬ বছর৷ সেসময় নিজ দেশ ছেড়ে যাওয়ার বেদনা আমাকে খুব পীড়া দেয়৷ আর ভারতে গিয়েও বাবা আমাকে হাসপাতালে দিয়ে আসেন এবং বলেন যে, দেশের জন্যই এখানে এসেছো৷ দেশের জন্য কাজ করবে৷ বাবা-মা যে এভাবে দেশের জন্য আমাদের উৎসর্গ করেছিলেন সেটি ছিল অনেক বড় পাওয়া৷ ভারত যাওয়ার জন্য রওয়ানা হচ্ছি, তখন দেখলাম পাহাড়তলী থেকে রাস্তাঘাটগুলো ভেঙে দিচ্ছিল৷ আমরা শুধু ভয়ে ভয়ে ছিলাম যে কখন আমাদের উপর গোলা-গুলি এসে পড়ে৷ আকাশে শুধু বিমান উড়ে যাচ্ছিল৷ আমার মা প্রথমে আমাদের দুই বোনকে বাবার কাছে দিয়ে আসার কথা ভেবেছিলেন৷ কারণ আমার বাবা তখন সীমান্তের কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের দল গঠন করছিলেন৷ কিন্তু তা হলো না৷ বরং বাবার পরামর্শ মতো মা আমাদের নিয়ে শুভপুর সেতুর পাশ দিয়ে ভারত নিয়ে যাচ্ছিলেন৷ তখনও সেখানে খুব গোলাগুলি হচ্ছিল৷ আমরা খুব কষ্ট করে নৌকায় নদী পার হয়ে যাই৷ ওটাকে হরিনাটিলা বলে৷ সেই পাহাড়ের ভেতর দিয়ে ভারত সীমান্তে পৌঁছেছি৷ ভারতে যাওয়ার পর হরিনা শিবিরের পাশে মনুবাজারে এক আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলাম আমরা৷ কিছুদিন হরিনা শিবিরে কাজ করি৷ এরপর বাবা সেখানে গিয়ে আমাদেরকে বিশ্রামগঞ্জ হাসপাতালে কাজ করার জন্য রেখে আসেন৷ সেখানে ক্যাপ্টেন ডা. সিতারা বেগমের নেতৃত্বে আমরা সেবিকা হিসেবে কাজ করেছি৷ এভাবে দুই নম্বর সেক্টরের আওতায় আমরা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করি৷''

Week 34/12 Women 1: Alo Rani Boiddo and Modhumita Boiddo (Part 1) - MP3-Mono

Flash-Galerie Cricket World Cup 2011
একটি পতাকার জন্য কাজ করেছেন নারী মুক্তিযোদ্ধা আলো রানী ও মধুমিতাছবি: DW

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর দেশে ফিরে আবারো লেখাপড়া শুরু করেন আলো রানী বৈদ্য৷ তবে একইসাথে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ গড়ার কাজেও আত্মনিয়োগ করেন তিনি৷ এসময় তাঁর কাজ সম্পর্কে তিনি জানান, ‘‘দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশে সুইজারল্যান্ড ও নরওয়ে থেকে চিকিৎসক দল এসেছিল ১৯৭২ সালে৷ তখন ওদের সাথে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে ত্রাণ বিতরণ ও চিকিৎসা সেবার কাজ করেছি আমরা৷ ইতিমধ্যে জোরারগঞ্জ বাজারে মহিলা ও শিশু কল্যাণ সমিতি গঠিত হয়েছিল৷ যুদ্ধের সময় নির্যাতিত ও স্বজনহারা নারীদের জন্য কাজ করতো এই সমিতি৷ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও ছিলেন এই সমিতির সাথে৷ স্বাস্থ্য মন্ত্রী জহুর আহমেদ চৌধুরী ছিলেন৷ সেখানে আমি সম্পাদিকা হিসেবে কাজ করেছি৷ কিন্তু আমি যখন দশম শ্রেণিতে পড়ছিলাম তখনই চট্টগ্রাম বন্দর হাসপাতালে সেবিকা হিসেবে কাজে যোগদান করি৷''

বর্তমানে বন্দর হাসপাতালে ঊর্ধ্বতন সেবিকা হিসেবে কর্মরত আছেন আলো রানী বৈদ্য৷ ইতিমধ্যে তিনি বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা সহ বিভিন্ন স্থানে ও পর্যায়ে নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সংবর্ধিত হয়েছেন৷

প্রতিবেদন: হোসাইন আব্দুল হাই

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য